জালালাবাদে রণক্ষেত্র
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ০৩:০৫ এএম, ১৭ জুন ২০২৩ শনিবার
সাধারণ সভায় মইনুলকে স্থায়ীভাবে বহিস্কার
পাল্টা সভা আহ্বান ১৮ জুন
আজকাল রিপোর্ট -
আনুষ্ঠানিকভাবে ভাঙনের পথে এখন ঐতিহ্যবাহী জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব আমেরিকা। বোববার ১১ জুন কুইন্স প্লাজায় অনুষ্ঠিত এসোসিয়েশনের সাধারণ সভাকে কেন্দ্র করে এ ভাঙনের আভাস স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। সন্ধ্যার পর সভার শুরুতেই সাময়িকভাবে বহিস্কৃত সাধারণ সম্পাদক মইনুল ইসলাম দলবল নিয়ে সভাস্থলে এসে হৈচৈ শুরু করেন। সভাপতি বদরুল খান মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে সভা পরিচালনা করার জন্য ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রোকন হাকিমকে আহবান জানালে ক্ষোভে ফেটে পড়েন মইনুল ইসলাম। তিনি পোডিয়ামের সামনে গিয়ে চিৎকার করে বলতে থাকেন, আমি নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক। রোকনকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক করা অবৈধ। এ সময় মইনুলের কিছু সর্মথকও এগিয়ে আসেন। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। মইনুল এক পর্যায়ে মাইকের ইলেকট্রিক তার ছিঁড়ে ফেলেন। শুরু হয় উভয় পক্ষের হাতাহাতি। পর্যায়ে মইনুল রাগে ক্ষোভে দ্বিতীয় সারির টেবিলটি উল্টে ফেলে দেন। এ অবস্থায় বদরুল খানের সর্মথকরা চড়াও হন মইনুল ও তার সর্মথক রোনেলের ওপর। আগে থেকে মোতায়েণ সিকিউরিটি গার্ডরা পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছিলেন। এক পর্যায়ে দুইজন পুলিশ অফিসার হলের ভেতর প্রবেশ করেন। তারা জালালাবাদ এসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলে মইনুল ইসলামকে হল থেকে বের করে নিয়ে যান। মইনুলকে অনুসরণ করেন তার সর্মথকরাও।
মইনুলকে পুলিশ দিয়ে বের করে দেয়ার পর রোকন হাকিমের পরিচালনায় সাধারন সভা শুরু হয়। কুরআন থেকে তেলোয়াত করেন জামিল আনসারি। মঞ্চে আসন গ্রহণ করেন আজমল হোসেন কুনু, বদরুন নাহার খান মিতা, রানা ফেরদৌস, আহমেদ জিল্লু, খসরুজ্জামান, সদরুন নূর, মিজবাহ মজিদ, আলিমুজ্জামান, আবুল হাসিব মামুন, জুনেদ চৌধুরী, আতাউর রহমান সেলিম। সভায় উপস্থিত ছিলেন মনজুর চৌধুরী, ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার, শওকত আলী , মেজবাহ উদ্দীন, হাজি এনাম, তোফায়েল আহমেদ চৌধুরী, আব্দুস শহীদ, হেলিম উদ্দীন, সাইফুর রহমান খান হারুন, এম এ আহাদ, মাসুদুল হক সানু, নুরে আলম জিকু, আজিমুর রহমান বোরহান প্রমুখ।
বিপুল সংখ্যক সদস্যেও উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত এই সাধারন সভায় মইনুল ইসলামকে সংগঠন থেকে স্থায়ীভাবে বহিস্কৃত করা হয়। এ বহিস্কারাদেশ ২৫ জুন থেকে কার্যকর হবে। সংগঠনের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। কুইন্স প্যালেসের ভেতরে যখন সাধারণ সভা চলছিল মইনুল ইসলাম ও তার ২০-২৫ জন সর্মথক তখন হলের বাইরে অবস্থান করছিলেন। তাদের মধ্যে ছিলেন পংকি মিয়া, এম এ করিম, মইনুজ্জামান চৌধুরী ও মিজানুর রহমান শেফাজ। তারা স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, আগামী বোববার ১৮ জুন এস্টোরিয়াস্থ জালালাবাদ ভবনে ‘জালালাবাদ এসোসিয়েশনের’ সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হবে। এক পর্যায়ে মইনুলের অনুসারি রোনেল বলেন, সংগঠন খন্ডিত হলেও হবে। আমরা সভাপতি বদরুল খানকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করলাম। মইনুল ইসলাম এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ৩৮ বছরের ইতিহাসে সংগঠনের কোন সাধারণ সভায় এমনভাবে দেহ তল্লাশী করে সদস্যদের প্রবেশ করানো হয়নি। জালালাবাদবাসীকে অপমান করা হয়েছে। আমি নির্বাচিত প্রতিনিধি। আমাকে পুলিশ দিয়ে বের করে দেয়া হলো। রোববারের সাধারণ সভায় জালালাবাদবাসী চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। তিনি বলেন, সাবেক সাধারন সম্পাদক শেফাজকেও সাধারণ সভায় ঢুকতে দেয়া হয়নি। প্রশ্নবিদ্ধ এ সাধারণ সভা আমরা মানি না। এ সময় হলের বাইরে মইনুলের সর্মথনে কিছু লোককে ফেস্টুন হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। তারা সবাই ছিল স্প্যানিশ। তাদেও সাথে এই এসোসিয়েশনের কি সম্পর্ক সে ব্যাপারে দৃষ্টি আর্কষণ করলে মইনুল বলেন, ফেস্টুনের দাবিগুলো সঠিক। কে তা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকলো সেটা বড় বিষয় নয়। নাথিং রং।