দুই নারী সাংবাদিককে হত্যাচেষ্টায় ব্যর্থ ইউক্রেন: রাশিয়া
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ১২:৫৬ এএম, ১৭ জুলাই ২০২৩ সোমবার
ক্রেমলিনপন্থি দুই নারী সাংবাদিককে হত্যাচেষ্টা করে ইউক্রেন ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে রাশিয়া। হত্যাচেষ্টায় জড়িত থাকার অভিযোগে সাত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।
শনিবার রুশ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, একটি ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে রাশিয়ার দুই হাই-প্রোফাইল সাংবাদিককে হত্যাচেষ্টা করেছে ইউক্রেন। এই দুই সাংবাদিক হলেন ক্রেমলিনপন্থি আন্তর্জাতিক সম্প্রচারকারী আরটি-এর প্রধান সম্পাদক মার্গারিটা সিমোনিয়ান এবং টিভি উপস্থাপক কেসনিয়া সোবচাক।
রাশিয়ার এফএসবি নিরাপত্তা সংস্থা জানিয়েছে, এই দুই নারী সাংবাদিককে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে সাত জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা দাবি করেছে, অভিযুক্ত সাত ব্যক্তি নব্য নাৎসি গ্রুপ প্যারাগ্রাফ-৮৮-এর সদস্য।
বার্তা সংস্থা ইন্টারফ্যাক্স জানিয়েছে, অভিযুক্ত সাত ব্যক্তি রাশিয়ার নিরাপত্তা সংস্থা এফএসবি-এর কাছে স্বীকার করেছে, ওই দুই নারী সাংবাদিককে হত্যার জন্য জনপ্রতি ১৫ লাখ রুবল বা ১৪ হাজার ৮০০ ইউরোর সমপরিমাণ অর্থ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ইউক্রেন।রাশিয়ার এমন দাবির পরিপ্রেক্ষিতে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি কিয়েভ। তবে, রাশিয়ার অভিযোগের সত্যতা যাচাই করাও সম্ভব হয়নি।
ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের উগ্র সমর্থক হিসেবে পরিচিত আরটি-এর প্রধান সম্পাদক মার্গারিটা সিমোনিয়ান রাশিয়ান কর্তৃপক্ষকে উদ্দেশ করে টেলিগ্রামে দেয়া এক পোস্টে লিখেছেন, ‘‘কাজে এগিয়ে যান, ভাইয়েরা!''
অন্যদিকে, রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিনের সমালোচক হিসেবে পরিচিত ছিলেন টিভি সঞ্চালক কেসনিয়া সোবচাক। ২০১৮ সালের নির্বাচনেও তার ভূমিকা ছিল স্পষ্টত পুটিনের বিপক্ষে। হত্যাচেষ্টার অভিযোগ প্রসঙ্গেও তার স্বর ছিল কিছুটা ভিন্ন।
টেলিগ্রামে এই টিভি উপস্থাপক লিখেছেন, যদি এসব সত্য হয়, তাহলে (অভিযুক্তদের আইনের আওতায় আনতে) যারা কাজ করেছেন, তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আর যদি সত্য না হয়, সিমোনিয়ানের সঙ্গে আমাকেও মিলিয়ে ফেলা হয়, তাহলে এর কোনো অর্থ থাকে না।
পাল্টা আক্রমণের প্রথম দুই সপ্তাহে ক্ষতির মুখে পড়েছে ইউক্রেন
যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ মাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, পাল্টা আক্রমণের প্রথম দুই সপ্তাহে যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠানো ইউক্রেনের অস্ত্রের ২০ শতাংশ ক্ষতি হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপিয়ান কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে সংবাদ মাধ্যমটি আরো জানিয়েছে, পরের সপ্তাহগুলোতে ক্ষতির পরিমাণ কমিয়ে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত যুদ্ধ সরঞ্জামের মধ্যে ছিল ট্যাঙ্ক, সাঁজোয়া যান এবং পশ্চিমা যুদ্ধ সরঞ্জাম।
ইউক্রেনকে বিলিয়ন ডলারের সামরিক সরঞ্জাম দিয়েছে পশ্চিমারা। এর মধ্যে কিছু সরঞ্জাম আছে খুবই উন্নত প্রযুক্তির এবং শীর্ষস্থানীয়। এগুলো নিয়ে সবার মধ্যেই একপ্রকার আগ্রহ ছিল। রাশিয়ার বিরুদ্ধে কখন এসব ব্যবহার করা হবে, কেমন প্রতিক্রিয়া পাওয়া যাবে—এমন প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল অনেকের মধ্যে।
রাশিয়ার দখলে চলে যাওয়া অঞ্চলগুলো ফিরিয়ে আনতে গেল জুনে পাল্টা আক্রমণে যায় ইউক্রেন। কিন্তু সেই প্রচেষ্টাটি জোরালো ছিল না, বরং ধীরগতির ছিল। চলতি মাসের শুরুতে অবশ্য সেই কথা স্বীকারও করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। এর মধ্যে পশ্চিমা মিত্রদের কাছে আরো অস্ত্র চেয়েছেন তিনি।
এর মধ্যেই খবর এসেছে, বেলারুশের সেনাবাহিনীকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে ভাগনার বাহিনী। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বেলারুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।