শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১   ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মুনা’র সম্মেলনে আজহারি

কোরআন আলোকিত জীবনের সন্ধান দেয়

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ০৩:৩৯ এএম, ২৬ আগস্ট ২০২৩ শনিবার


আজকাল রিপোর্ট -
মুসলিম উম্মাহ অব নর্থ আমেরিকা’র (মুনা) আগামী সম্মেলন ৯-১১ আগস্ট ২০২৪ ফিলাডেলফিয়ার পেনসিলভানিয়া কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত হবে। গত ১৯ আগস্ট শুক্রবার থেকে ৩ দিনব্যাপী সম্মেলন শেষে রোববার নেতৃবৃন্দ এ ঘোষণা দেন। প্রায় ২০ হাজার ধর্মপ্রাণ মুসলমান এতে অংশ নেন। সম্মেলনের প্রধান আর্কষষণ ছিল মালয়েশিয়া থেকে আগত ইসলামিক স্কলার মিজানুর রহমান আজাহারী, ড ওমর সুলাইমান, ড আলতাফ হোসেন, হারুন অর ও রশিদ ও সাইখ আব্দুল নাসির জাগদা ও লুৎফর রহমান। তবে হাজারীকে নিয়ে সম্মেলনে উপস্থিত অতিথিদেও আবেগ ছিল লক্ষনীয়। এ সম্মেলনের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন আরমান চৌধুরী সিপিএ।
মানবতার জন্য কোরআনের নির্দেশিকা শীর্ষক এক আলোচনায় তরুণ বক্তা ড. মিজানুর রহমান আজহারী বলেন, আল কোরআন আল্লাহ’র সৃষ্টি নয়। কোরআন হচ্ছে আল্লাহ’র শিফা (আরোগ্য ও নিরাময়)। কোরআন হচ্ছে একটি কালজয়ী অলৌকিক ঘটনা (টাইমলেস মিরাক্কেল)। মহান রাব্বুল আল্লাহ তা’লার যেমন লয় নাই ক্ষয় নাই তেমনি কোরআনেরও কোন লয় নাই ক্ষয় নাই। শনিবার (১৯ আগস্ট) সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের ফিলাডেলফিয়ায় বাংলাদেশি মুসলমানদের সবচেয়ে বৃহৎ সংগঠন মুসলিম উম্মাহ অব নর্থ আমেরিকার (মুনা) ষষ্ঠ সম্মেলনে মানবতার জন্য কোরআনের নির্দেশিকা শীর্ষক আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। তিনদিনের এ সম্মেলনে প্রায় ২০ হাজার ধর্মপ্রাণ মুসলমান অংশ নিয়েছেন বলে মুনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
মুনা সম্মেলনের আয়োজকরা জানান, ড. মিজানুর রহমান আজহারী এই প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশিদেও উদ্দেশ্যে কোরআন ও হাদিসের আলোকে আলোচনা এবং মুনা সম্মেলনে অংশ নিলেন।
সম্মেলনে ইসলামি চর্চা ও আলোচনা ছাড়াও ছিল সেমিনার, ছোটদেও অনুষ্ঠান, মহিলাদের জন্য আলাদা অনুষ্ঠান, বাচ্চাদের খেলাধুলা, কালচারাল ও ইয়ুথ প্রেগ্রাম। ৪টি মহাদেশ থেকে ইসলামিক বিদ্বানরা উক্ত সম্মেলনে যোগ দেন।
মুনা কনভেনশনের চেয়ারম্যান আরমান চৌধুরী সিপিএ ও আনিসুর রহমানের যৌথ সঞ্চালনায় শনিবারের আলোচনায় অংশ নেন ড. ওমর সুলাইমান, ড আলতাফ হোসেন, হারুন অর রশিদ ও সাইখ আব্দুল নাসির জাগদা।
বাংলা ভাষাভাষি তরুণদেও প্রিয় ড. মিজানুর রহমান আজহারী আরও বলেন, কোরআন না থাকলে পৃথিবীতে আমাদের আসার উদ্দেশ্য কি তা জানতে পারতাম না। ভবঘুরের মতো ঘুরে বেড়াতাম। খেতাম, কাজ করতাম, পৃথিবী আবাদ করতাম, উন্নয়ন হতো। কিন্তু পৃথিবীতে আমাদের আসার উদ্দেশ্য কি? তা কখনই জানতে পারতাম না। কোরআন আমাদেরকে সেটা পরিস্কার করেছে।
আজহারী বলেন, কোরআন ব্যতীত সকল ধর্মগ্রন্থই নবীদের উপর একবারেই নাজিল হয়েছে। কিন্তু কোরআন নাজিল সম্পন্ন হতে সময় লেগেছে ২৩ বছর। কোরআন আমাদের আলোকিত জীবনের সন্ধান দেয়। উন্নতির দিকে নিয়ে যায়। অন্ধকারে হাতড়ে বেড়ানো মানবতাকে আলোকিত করে। কোরআন বিশ্লেষন করে দেখা যায়, একটি ভূ-খন্ডের অক্ষর জ্ঞানহীন জাতি ও গোষ্ঠীর পুরো জীবন ধারাকে পাল্টে দিয়েছিল এই কোরআন।
        
   

তিনি দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর মৃত্যু নিয়ে বলেন, কিছুদিন আগে আমরা প্রিয় আল্লামাকে হারিয়েছি। আমরা এই ভেবে বুকে আশা বেঁধে রাখি যে, এই দুনিয়ায় তাঁকে সাময়িকভাবে হারিয়েছি। কিন্তু কেয়ামতের দিনে জান্নাতে এই কোরআনের বুলবুলির কন্ঠে আমরাআবার কোরআনশুনতেপাবো। একই ভাবে বাবা-মা, বন্ধুকেও হারিয়েছি। এ বিচ্ছেদ সাময়িক। আমরা তাদেরকে জান্নাতে একদিন পাবো।
তিনদিনব্যাপী এই সম্মেলনের বিভিন্ন পর্বে বক্তব্য রাখেন দেন মুনার ন্যাশনাল কমিটির সভাপতি হারুন অর রশীদ, মাওলানা মাহমুদুল হাসান, মাওলানা লুৎফর রহমান, আব্দুস সালাম আজাদী ও আহমেদ আবু ওবায়দুল্লাাহ, ড. সাইদুর হেমান চৌধুরী, আবু আহমেদ নুরুজ্জামান, ড. শারমিন মাহমুদা, হাফিজ আব্দুল্লাহ আরিফ, শেখ মাজেদ মাহমুদ ও মুহাম্মদ মাহমুদুল হাসান।
এবারের মুনা সম্মেলনে প্রায় ২০ হাজার ধর্মপ্রাণ মুসলমান অংশ নিয়েছেন। সম্মেলনের দু’দিন আগে ড. মিজানুর রহমান আজহারীর নাম যুক্ত হওয়ায় সম্মেলনে যোগ দিতে সাধারণ মানুষের মাঝে আগ্রহ বেড়ে যায়। প্রচুর লোকের চাপে সম্মেলনের শৃংখলা বজায় রাখতে হিমসিম খেতে হয়েছে আয়োজকদের। শনিবার মাগরিবের নামাজের আগে তার আলোচনা শুরু হয়। এসময় তাকে মুনার সদস্যদের দ্বারা কড়া নিরাপত্তা প্রদান করা হয়। রোববারও আজাহারী বক্তব্য রাখেন।
শনিবারের সম্মেলন শেষে রাত সাড়ে ১১টার দিকে এক সংবাদ সম্মেলনের করে মুসলিম উম্মাহ অব নর্থ আমেরিকার (মুনা) কর্তৃপক্ষ। সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেন মুনা ন্যাশনাল কমিটির প্রেসিডেন্ট হারুন অর রশীদ, কনভেনশনের চেয়ারম্যান আরমান চৌধুরী সিপিএ, আব্দুল্লাহ আরিফ, আহমেদ আবু ওবায়দুল্লাাহ, ড. রিয়াজুল ইসলাম ও আনিসুর রহমান।