ভারতে বাইডেন ও হাসিনার সাথে মোদির পৃথক বৈঠক
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ০১:৪৫ এএম, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ শনিবার
সাইডলাইনে বাংলাদেশের নির্বাচন
আজকাল রিপোর্ট -
জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে শুক্রবার দিল্লিতে পৌছাবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এদিন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে সই হতে পারে তিনটি সমঝোতা স্মারক। এদিকে, বৃহস্পতিবার সম্মেলনে যোগ দিতে দিল্লিতে পৌঁছেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। শুক্রবার জি-২০ সম্মেলন শুরুর আগে¦াইডেন ও মোদিও মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক। কিন্তু এসব ছাপিয়ে দেশে-প্রবাসে রাজনীতি সচেতন মানুষের মধ্যে ঘুরে ফিরে আসছে বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গ। সবাই অনেকটা ধরেই নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পৃথক বৈঠকে উঠবে বাংলাদেশের প্রসঙ্গ।
বাংলাদেশের নির্বাচন ও ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে শীতল সম্পর্ক চলছে বাংলাদেশের। এ নিয়ে এখন আর কোনো রাখ-ডাক নেই। প্রধানমন্ত্রী প্রকাশ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করছেন। অপরদিকে যুক্তরাষ্ট্র পরিস্কার ভাবে বাংলাদেশকে জানিয়ে দিয়েছে যেকোনো উপায়েই হোক তারা বাংলাদেশের সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চান। পাশাপাশি ড. ইউসূসের বিচার স্থগিতের বিষয়টিও যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাশার মধ্যে রয়েছে। এসব নিয়ে নাখোশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইতোমধ্যে ভারত, চীন ও রাশিয়া বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। এখন শুধু যুক্তরাষ্ট্রকে বাগে আনার চেষ্টা। এটি সফল হলেই আবারও ক্ষমতায় আসবে আওয়ামী লীগ।
বিভিন্ন কূটনৈতিক সূত্রে প্রকাশ, বাংলাদেশের বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের ধারাবাহিকতা দেখতে চায় ভারত। তারা ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রকে সেই বার্তাও দিয়েছে। কিন্তু তাকে যুক্তরাষ্ট্রের খুব একটা যে নড়চড় হয়েছে তা দৃশ্যমান নয়।
বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আছে আর মাত্র চার মাস। আগামী বছরের শুরুতেই হবে নির্বাচন। তাই জি-২০ সম্মেলনকে উপলক্ষ করে দ্বিপাক্ষিক এসব বৈঠকেই বাংলাদেশ ইস্যুতে আলোচনা উঠতে পারে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা।
আজ শুক্রবার প্রথমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে বৈঠক করবেন নরেন্দ্র মোদি। এরপরই বাইডেন-মোদি বৈঠকটি হবে। তাই এ বৈঠকে বাংলাদেশ ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের বরফ কতটা গলাতে সক্ষম হবে মোদি কিংবা আদৌ তিনি এ প্রসঙ্গ তুলবেন কি-না এ নিয়ে নানামুখি জল্পনা-কল্পনা রয়েছে।
জানা গেছে, শুক্রবার নয়াদিল্লিতে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক পার্শ্ববৈঠক করবেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সূত্রের খবর, দুই রাষ্ট্রনেতার ওই বৈঠকে নয়াদিল্লি-ওয়াশিংটন দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার নানা ক্ষেত্রের পাশাপাশি আলোচনায় আসবে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনের মোকাবিলায় ‘কোয়াড্রিল্যাটেরাল সিকিউরিটি ডায়লগ’ (কোয়াড)-এর চার সদস্য রাষ্ট্রের (ভারত, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া এবং জাপান) সমন্বয় আরও নিবিড় করার প্রসঙ্গও।
এদিকে, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন জানান, মোদি-হাসিনা বৈঠকে দু’দেশের মুদ্রায় লেনদেন সুগম করা, কৃষিখাতে গবেষণা এবং সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়ে সমঝোতাপত্র সই হতে পারে।
এই সমস্ত বৈঠক শেষ করে প্রধানমন্ত্রী ঢাকা ছুটে আসবেন এবং ১০ সেপ্টেম্বর ঢাকায় বরণ করে নিবেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁকে। এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বাংলাদেশ সফর করবেন আট ঘণ্টার জন্য। এই কূটনৈতিক তৎপরতা বাংলাদেশের জন্য একটি বিরল ঘটনা এবং নির্বাচনের আগে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। প্রশ্ন উঠেছে সরকার এই সময় কেন এত আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ল। তবে তা যে নির্বাচনকে সামনে রেখে তা বলাই যায়।