প্রধানমন্ত্রীর সংবর্ধনা নিয়ে কাড়াকাড়ি
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ০২:১০ এএম, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ শনিবার
যুক্তরাষ্ট্র ও মহানগর আওয়ামী লীগের পাল্টাপাল্টি দাবি
আজকাল রিপোর্ট-
নিউইয়র্কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাগরিক সংবর্ধনার আয়োজন নিয়ে কাড়াকাড়ি শুরু হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগ পৃথকভাবে প্রধানমন্ত্রীর সংবর্ধনার ঘোষণা দিয়েছে। এ নিয়ে দলীয় নেতাকর্মীরাও বিভ্রান্তিতে পড়েছেন। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ঢাকায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগকে সংবর্ধনা আয়োজনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
জাতিসংঘের ৭৮তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রতিবছর নিউইয়র্ক সফরের সময় প্রধানমন্ত্রীর নাগরিক সংবর্ধনার আয়োজন করে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ। এবারও দলটি সংবর্ধনার ঘোষণা দেয়। কিন্তু হঠাৎ করেই নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগ ঘোষণা দেয় তারা এবার প্রধানমন্ত্রীকে নাগরিক সংবর্ধনা দেবে।
জানা গেছে, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমদাদ চৌধুরী ঢাকা থেকে ফিরে এসে প্রথমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এবং পরে দলীয় সভায় সংবর্ধনা আয়োজনের ঘোষণা দেন। দলীয় একটি সূত্র জানায়, মায়ের মৃত্যুতে বাংলাদেশে গিয়েছিলেন এমদাদ চৌধুরী। এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে দেখা করে তাকে নাগরিক সংবর্ধনা দেওয়ার ইচ্ছার কথা জানান। এসময় প্রধানমন্ত্রী তাকে সংবর্ধনা আয়োজনের মৌখিক নির্দেশনা দেন। পরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপও প্রধানমন্ত্রীর এই নির্দেশনার কথাটি যুক্তরাষ্ট্রের দলীয় নেতাকর্মীদের জানান। তবে গোলাপ কাউকে কাউকে যৌথভাবে সংবর্ধনা আয়োজনের কথাও জানিয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নিউইয়র্ক স্টেট আওয়ামী লীগের একজন নেতা আজকালকে জানান, আবদুস সোবহান গোলাপ তাকে সংর্বধনা আয়োজনে যুক্তরাষ্ট্র ও মহানগর আওয়ামী লীগ উভয়ের সাথেই কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি এককভাবে কোনো কমিটি সংবর্ধনার আয়োজন করবে এমনটা নিশ্চিত করেননি।
এদিকে, প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে বুধবার সন্ধ্যায় জ্যাকসন হাইটসের ডাইভারসিটি প্লাজায় এক পথসভার আয়োজন করে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ। এসময় সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান জানান, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগই প্রধানমন্ত্রীকে নাগরিক সংবর্ধনা দেবে। এ বিষয়ে ৯ সেপ্টেম্বর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিতে সংবাদ সম্মেলনেরও ঘোষণা দেন। একই সময় নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগও প্রধানমন্ত্রীর নাগরিক সংবর্ধনার প্রস্তুতি সভা আহ্বান করেছে।
তবে বিশেষ একটি সূত্র জানিয়েছে, এবার নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগই প্রধানমন্ত্রীকে নাগরিক সংবর্ধনা দেবে। বুধবার গভীর রাতে আবদুস সোবহান গোলাপ যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগকে আনুষ্ঠানিকভাবে একথা নাকি জানিয়েছেন। এদিকে, মহানগর আওয়ামী লীগকে নাগরিক সংবর্ধনার দায়িত্ব দেওয়ার কথা জানাজানি হলে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগে অভ্যন্তরীণ কোন্দল আরও মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। মহানগর আওয়ামী লীগের পতাকা তলে কিভাবে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও নিউইয়র্ক-সহ বিভিন্ন স্টেট কমিটি আসবে তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নাগরিক সংবর্ধনার আয়োজন নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের কমিটি হচ্ছে না। এ নিয়েও নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের কমতি নেই। বিগত বছরগুলোতে প্রধানমন্ত্রীর নাগরিক সংবর্ধনার সময় দলীয় প্রধানের সামনেই যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমানের বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়েছে নেতাকর্মীরা। এতে বিব্রত হয়েছেন শেখ হাসিনা। তবে সাধারণ নেতাকর্মীদের মতে, ড. সিদ্দিক দুর্দিনে দল ও নেত্রীর পাশে ছিলেন। তিনি সদালাপী, শিক্ষিত ও মার্জিত। তাকে বাদ দিয়ে সভাপতি করার মতো একক ভাবে কোনো নেতৃত্বও এতোদিনে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগে গড়ে ওঠেনি। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে যাদের নাম ঘুরে-ফিরে আসে তাদের কারোর গ্রহণযোগ্যতাই ড. সিদ্দিকের চেয়ে বেশি নয়। ফলে বছরের পর বছর ড. সিদ্দিকই সভাপতির দায়িত্ব রয়ে গেছেন।