পাকিস্তানকে আইএমএফের ঋণ পেতে সহায়তা করে যুক্তরাষ্ট্র
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ০২:৪৩ এএম, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ মঙ্গলবার
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে গোপনে একটি চুক্তিও করে ইসলামাবাদ। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের অলাভজনক সংবাদমাধ্যম প্রতিষ্ঠান দ্য ইন্টারসেপ্টের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বিষয়টি উঠে আসে। প্রতিবেদনটি করেছেন রিপোর্টার রায়ান গ্রিম ও মুর্তজা হুসেইন।
ওয়াশিংটন ও ইসলামাবাদের মধ্যে হওয়া এই গোপন অস্ত্র চুক্তি সম্পর্কে জানেন এমন দুটি সূত্র ইন্টারসেপ্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। একই সঙ্গে এই অস্ত্র চুক্তি নিয়ে পাকিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্র সরকারের একাধিক গোপন নথি থেকেও বিষয়টি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার কথা জানিয়েছে ইন্টারসেপ্ট। প্রথম আলো
ইন্টারসেপ্ট বলছে, তিন ধরনের যুদ্ধাস্ত্র তৈরির কেন্দ্র হিসেবে বিশ্বে পরিচিতি আছে পাকিস্তানের। এদিকে দীর্ঘদিন ধরে অস্ত্র ও গোলাবারুদের সংকটে ভুগছে ইউক্রেন। ঠিক এমন সময়ে জানা যাচ্ছে, দেশটি পাকিস্তানের কামানের গোলা ও অন্য সামরিক সরঞ্জাম পেয়েছে। তবে পাকিস্তান বা যুক্তরাষ্ট্র সরকারের পক্ষ থেকে কেউই ইউক্রেনকে অস্ত্র দিতে করা এ চুক্তির কথা স্বীকার করছে না।
গোপন নথির বরাতে ইন্টারসেপ্ট বলছে, গত বছর গ্রীষ্ম থেকে এ বছরের বসন্ত পর্যন্ত সময়ে অস্ত্র দেওয়ার বিষয়ে সমঝোতা হয়। এ ছাড়া এসব নথিতে ইউক্রেনকে অস্ত্র দেওয়ার বিনিময়ে পাকিস্তান কত অর্থ পাবে, লাইসেন্স, দুই দেশের কর্মকর্তাদের আলোচনাসহ বিস্তারিত সব রয়েছে।
ইন্টারসেপ্ট বলছে, মার্কিন সেনাবাহিনীর একজন ব্রিগেডিয়ার জেনারেলের স্বাক্ষর মিলিয়ে দেখেছে তারা। ওই জেনারেল আগে সরকারি যেসব নথিতে স্বাক্ষর করেছেন তার সঙ্গে গোপন এই নথিতে করা স্বাক্ষরে হুবহু মিল পাওয়া গেছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও পাকিস্তানের এই অস্ত্র চুক্তির মধ্যস্থতা করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল মিলিটারি প্রোডাক্টস। এটি মূলত গ্লোবাল অর্ডন্যান্সের একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। অস্ত্র বিক্রি ও লেনদেন করার ক্ষেত্রে মধ্যস্থতার কাজ করে থাকে গ্লোব্লার অর্ডন্যান্স। প্রতিষ্ঠানটি নিয়ে অনেক বিতর্ক আছে।
ইন্টারসেপ্ট বলছে, অস্ত্র বিক্রির কারণে সৃষ্ট ‘রাজনৈতিক সুনাম’ এবং এ থেকে পাওয়া অর্থ পাকিস্তানকে আইএমএফের ঋণ পাওয়ার পথ সুগম করে দিয়েছে। এছাড়া একাধিক সূত্র ও এ সংক্রান্ত নথির বরাতে ইন্টারসেপ্ট বলছে, গোপনে ইউক্রেনকে অস্ত্র দিলে আইএমএফ থেকে ঋণ পাইয়ে দেওয়ার ব্যাপারে পাকিস্তানকে নিশ্চয়তাও দিয়েছিলেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তারা।
দীর্ঘদিন ঝুলে থাকার পরে এ বছরের শুরুর দিকে পাকিস্তানকে ঋণ দিতে রাজি হয় আইএমএফ। ইন্টারসেপ্ট দাবি করছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে গোপন অস্ত্র চুক্তি করার পরপরই পাকিস্তানের জন্য আইএমএফের ঋণের দরজা খুলে যায়। ওই অস্ত্র চুক্তি পাকিস্তানকে এ ঋণ পেতে সাহায্য করেছে।