বিএনপি নেতাকর্মীদের রোষানলে পরতে পারেন কাসেমী
নিউজ ডেস্ক
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০৭:০১ পিএম, ১ জানুয়ারি ২০১৯ মঙ্গলবার
এবারের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের একটি আলোচিত নাম হলো জমিয়তে উলামার জেলা সভাপতি মনির হোসাইন কাসেমী। তাকে প্রার্থী করা নিয়ে নির্বাচনী প্রচার প্রচারণার শুরু থেকেই নারায়ণগঞ্জ বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে দেখা দেয় চরম অনীহা আর ক্ষোভ। প্রার্থীতা বাগিয়ে নিয়ে আসার পর নিজ দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে মাঠে না নামায় সে ক্ষোভ আরও দিগুন হারে বৃদ্ধি পায়।
এমনকি নির্বাচনের দিন পর্যন্তও মনির হোসাইন কাসেমীর সেই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখে। ফলে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির নেতাকর্মীদের রোষানলে পরার সম্ভাবনা রয়েছে মনির হোসাইন কাসেমীকে। বিএনপির নেতাকর্মীরা তার উপড় চরম মাত্রায় বিরক্ত হয়ে রয়েছেন। নির্বাচনের পরাজয়ের ক্ষোভ তার উপরেই ঝাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
জানা যায়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের শুরু থেকে নারায়ণগঞ্জ-৪ সংসদীয় এলাকার বিএনপির নেতাকর্মীরাসহ প্রায় সকলেই নিশ্চিত ছিলেন এই আসনে ২০ দলীয় জোটের পক্ষে বিএনপির প্রার্থীকেই ধানের শীষের প্রতিক দেয়া হবে। কিন্তু চূড়ান্ত বাছাই পর্বে হঠাৎ উড়ে এসে জুড়ে বসেন জমিয়ত উলামার মনোনীত প্রার্থী মাওলানা মনির হোসাইন কাশেমী। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনে গত ৮ ডিসেম্বর দিনভর নানা জল্পনার পর বিকেলে তার হাতে তুলে দেওয়া হয় ধানের শীষের মনোনয়ন পত্র।
অথচ তার বিরুদ্ধে রয়েছে বর্তমান ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগের সংসদ সদস্যের সাথে আঁতাতের অভিযোগ। মূলত স্থানীয় ক্ষমতাসীনদের সমর্থনেই তার বেড়ে উঠা এবং একই সাথে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ারও ইচ্ছা পোষণ করেন। এমনকি বিএনপির নেতৃত্বে ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরাসহ অনেকেই তাকে চিনেন না বলেও অভিযোগ রয়েছে।
বিএনপির নেতাকর্মীদের সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির নেতৃত্বে ২০ দলীয় জোটের শরিক দল জমিয়তে উলামা হলেও জমিয়ত নেতা মনির হোসাইন কাসেমীকে কেউই চিনতো না। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের শুরুতেও তার কোন আলাপ আলোচনাই ছিল না। সংসদীয় এলাকাতেও তার তেমন একটা পরিচিত নেই। অনেকের কাছেই তিনি অপরিচিত। তারপরেও তাকে ২০ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে।
কিন্তু এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় বিএনপি স্থানীয় পর্যায়ের দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে পরামর্শ না করেই মনির হোসাইন কাসেমীকেই ২০ দলীয় জোটের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত করা হয়। জোটের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষ প্রতিক পাওয়ার পরেও জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীদের সাথে তিনি কোন যোগাযোগ করেনি। এর আগেও তিনি যোগাযোগ করেনি। ফলে ধানের শীষ প্রতিকের প্রার্থী হওয়া সত্ত্বেও মনির হোসাইন কাসের্মীকে প্রায় অনেকটাই বয়কট করে চলছেন নারায়ণগঞ্জ বিএনপির নেতাকর্মী।
এদিকে মনির হোসাইন কাসেমীও নিজ দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে নির্বাচনী মাঠে নামেনি। একই সাথে বিএনপির নেতাকর্মীদের সাথেও তেমন একটা সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারেনি। তার সূত্র ধরে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন ফাঁকা থাকে। অন্যান্য প্রার্থীরা খালি মাঠ চষে বেড়িয়েছেন। এমনকি নির্বাচনের শেষ দিনেও মনির হোসাইন কাসেমী খুঁজে পাওয়া যায়নি। ধানের শীষের অন্যান্য প্রার্থীরা নির্বাচনের আগের দিন তৎপর হওয়ার চেষ্টা করলেও কাসেমী ছিলেন একেবারেই নিশ্চুপ।
নারায়ণগঞ্জের অন্যান আসনে বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের মনোনীত প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ধানের শীষের প্রার্থীদের অভিযোগ থাকলেও নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে অভিযোগ দেয়ার মতো কেউ ছিল না। ফলে যে কোন সময় মনির হোসাইন কাসেমী বিএনপির নেতাকর্মীদের রোষানলে পড়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। আবার বিএনপির অনেক নেতাকর্মী মনির হোসাইন কাসেমী গণপিটুনীও দিবেন বলেও ঘোষণা দিয়েছেন। বিএনপির শরিক দলের নেতা হওয়া সত্ত্বেও মনির হোসাইন কাসেমীকে কোন ছাড় দিবেন তারা।