বুধবার   ২৭ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১২ ১৪৩১   ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

যুদ্ধ নয়, ‘আত্মরক্ষা’ করছে রাশিয়া

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ০২:১১ এএম, ১ অক্টোবর ২০২৩ রোববার

রাশিয়া কারও বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে না, বরং নিজের মানুষ ও ভূখণ্ড রক্ষা করার জন্য সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। এমন মন্তব্য করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন। তিনি এও বলেছেন, ইউক্রেনে মস্কো নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলগুলোর বাসিন্দারা রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত স্থানীয় নির্বাচনে তারা এমন রায় দিয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে গত বছর গণভোটে পাওয়া ফল আরও দৃঢ় হয়েছে। শুক্রবার মধ্যরাতে দেওয়া এক ভিডিওবার্তায় পুতিন এসব কথা বলেছেন। খবর হিন্দুস্তান টাইমসের।

গণভোটের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছর দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, খেরসন ও জাপোরিঝঝিয়া অঞ্চলকে আনুষ্ঠানিকভাবে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত ঘোষণা করে মস্কো। গতকাল শনিবার এই ঘোষণার প্রথম বর্ষপূর্তি। এ উপলক্ষে গতকাল রাতে পুতিনের ভিডিওবার্তাটি প্রকাশ করা হয়েছে।

পুতিনের দাবি, সম্প্রতি এই চার অঞ্চলে অনুষ্ঠিত স্থানীয় নির্বাচনেও গত বছরের গণভোটের ফলের প্রতিফলন ঘটেছে। চার মিনিটের ওই ভিডিওবার্তায় পুতিন বলেন, ‘মাত্র এক বছর আগে ঐতিহাসিক গণভোটে জনগণ আবারও রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। তারা স্থানীয় নেতাদের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। এসব স্থানীয় নেতা নিজেদের শ্রম আর বাস্তব কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে জনগণের আস্থা জিতে নিয়েছেন।

পুতিন আবার দাবি করেছেন, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে অভিযান চালানোর মধ্য দিয়ে রাশিয়া কিয়েভের জাতীয়তাবাদী নেতাদের হাত থেকে জনগণকে বাঁচিয়েছে।

২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, খেরসন ও জাপোরিঝঝিয়া অঞ্চলকে রাশিয়ার অন্তর্ভুক্ত করার ঘোষণা দেয় মস্কো। তাদের দাবি, এসব অঞ্চলের বাসিন্দারা রাশিয়ায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পক্ষে ভোট দিয়েছেন। তবে একে অবৈধ উল্লেখ করে গণভোটের ফল প্রত্যাখ্যান করে পশ্চিমা বিশ্ব।

ওই চারটি অঞ্চলের কোনোটিই এখন রাশিয়ার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে নেই। গত জুন থেকে এসব এলাকার দখল নিতে রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে পাল্টা হামলা শুরু করে ইউক্রেন।

এদিকে সাবেক মার্কিন সেনা গোয়েন্দা কর্মকর্তা স্কট রিটার বলেছেন, ইউক্রেনের আরও পাঁচটি অঞ্চলÑ ওদেসা, নিকোলায়েভ, নেপ্রোপেত্রোভস্ক, খারকভ ও সুমিÑ রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হতে চাচ্ছে। আর এগুলো দখলে না নেওয়া পর্যন্ত রাশিয়া যুদ্ধে ক্ষান্তি দেবে না।

২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের ওপর সর্বাত্মক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের নির্দেশে এ সামরিক আগ্রাসন শুরু হয়। আক্রান্ত দেশটি এবং এর ইউরোপীয় ও পশ্চিমা মিত্ররা একে ‘যুদ্ধ’ বললেও মস্কো একে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ বলেই অভিহিত করে আসছে।

নিকট প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোয় পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর সম্ভাব্য সম্প্রসারণে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ছেÑ এ চিন্তা থেকে ‘দেশের ভবিষ্যতের জন্য’ প্রেসিডেন্ট পুতিন ইউক্রেনে আক্রমণের নির্দেশ দিয়েছিলেন। যুদ্ধে দুই দেশেরই অনেক সেনা ও বেসামরিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। তবে এখন পর্যন্ত এ সংখ্যা কত, তা নিয়ে স্পষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায় না।