বাঙালি নদীর বাঁধ ভেঙে আতঙ্কে ৫০ গ্রামের মানুষ
নিউজ ডেস্ক
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ০৭:২৩ পিএম, ৪ অক্টোবর ২০২৩ বুধবার
বগুড়ার শেরপুরে বাঙালি নদীর চককল্যাণী এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ভাঙন শুরু হয়েছে। বুধবার (৪ অক্টোবর) সকালে বাঁধের অন্তত ১০০ মিটার অংশ নদীতে ধসে গেছে। সেই সঙ্গে একটি বসতবাড়িও নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
এদিকে ভাঙনে চকধলী, জয়লা জুয়ান, জয়লা আলাদি, জয়নগর, গুয়াগাছিসহ চার উপজেলার অন্তত পঞ্চাশটি গ্রাম ও মাঠের শতশত বিঘা জমির ফসলি হুমকির মুখে পড়েছে। তাই চরম আতঙ্কের মধ্যে দিনরাত যাপন করছেন নদীপাড়ের মানুষ। তবে বাঁধের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ পরিদর্শন করে সেটি সংস্কার ও মেরামতের আশ্বাস দিয়েছেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এসএম রেজাউল করিম। এসময় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শামছুন্নাহার শিউলী, স্থানীয় সুঘাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান জিন্নাহ, ইউপি সদস্য মনিরুজ্জামান মিন্টু তার সঙ্গে ছিলেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, বাঁধটিতে ভাঙন শুরু হওয়ায় স্থানীয় লোকজনের সহায়তা নিয়ে কৃষক নজরুল ইসলাম তার ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন। এসময় স্থানীয় বাসিন্দা আবু বকর সিদ্দিক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গত দশ বছর ধরে বাঁধটি ঝুঁকিপূর্ণ। বর্ষা মৌসুম এলেই বাঁধের বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দেয়। ফলে বাঁধে আশ্রয় নেওয়া শেফালী বেগম, রেহেনা বেগম, আব্দুল মজিদ, মহির উদ্দিন, শাহেব আলী, আব্দুল আজিজসহ অন্তত ৫০ জনের বসতবাড়ি বিলীন হয়ে গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৮৭ সালে জেলার ধুনট উপজেলার বথুয়াবাড়ি থেকে শেরপুর উপজেলার সাহেববাড়ী ঘাট পর্যন্ত বাঙালি নদীর পূর্ব তীরে দশ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ করেন সমন্বিত উন্নয়ন প্রকল্প (ডিআইডিপি) নামে একটি বেসরকারি সংস্থা। এ বাঁধ নির্মাণের ফলে ধুনট উপজেলার চৌকিবাড়ি, মথুরাপুর, গোপালনগর ও শেরপুর উপজেলার সুঘাট, সীমাবাড়ী ইউনিয়ন ও সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার প্রায় আড়াই লাখ পরিবার প্রতি বছর বন্যার ক্ষতি থেকে রক্ষা হয়। এছাড়াও বাঁধের ওপর দিয়ে শেরপুর ও ধুনট উপজেলার বথুয়াবাড়ি, পেঁচিবাড়ি, বিলকাজুলী, জালশুকা, চাঁনদিয়াড়, কুমিরিয়াডাঙ্গা, ভুবনগাতি, চকধলী, চককল্যানী, গুয়াগাছি, জয়লা-জুয়ান, কল্যাণী, বেলগাছি, জয়নগর, সুঘাট, রুদ্রবাড়িয়া, যুগিগাতি, নাগেশ্বরগাতি ও পাঁচথুপি-সরোয়াসহ ৫০ গ্রামের মানুষ যাতায়াত করে থাকেন। কিন্তু বাঁধে ভাঙন দেখা দেওয়ায় ওই সব গ্রামের সিংহভাগ মানুষের চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাদের।
বাঁধ পরিদর্শনে আসা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এসএম রেজাউল করিম বলেন, ইতোমধ্যে বাঁধের অন্তত ১০০ মিটার অংশ নদীতে ধসে গেছে। পাশাপাশি নজরুল ইসলাম নামের একজন কৃষকের বাড়িও নদীতে বিলীন হয়ে যায়। তাই বাঁধের ভাঙন রোধে স্থায়ী ব্যবস্থা করণসহ বাস্তুহারাদের পুর্নবাসনের জন্য জেলা প্রশাসককে অবহিত করা হয়েছে বলে দাবি করেন এ কর্মকর্তা।
এ বিষয়ে বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হক এ প্রসঙ্গে বলেন, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে ধসে যাওয়া অংশ মেরামত করা হবে।