আবারো এক্সক্লুসিভ রিপোর্ট দিল আজকাল
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ০১:৩৭ এএম, ৭ অক্টোবর ২০২৩ শনিবার
আজকাল রিপোর্ট -
গত সপ্তাহে আজকাল-এ প্রকাশিত প্রধান শিরোনাম ‘শেখ হাসিনার সাথে মার্কিন কর্মকর্তার বৈঠক’ শীর্ষক খবর দেশে-বিদেশে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। গত ২৭ সেপ্টেম্বর ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসে যুক্তরাষ্ট্র সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলেভানের বৈঠক হয়। খবরটি মার্কিন কর্মকর্তার নাম উল্লেখ না করে একদিন আজকাল-এ প্রধান শিরোনাম হিসেবে প্রকাশ পায়। এ সংক্রান্ত কোনো সংবাদ দেশে বিদেশে কোনো গণমাধ্যমে প্রকাশিত না হওয়ায় বৈঠকের সত্যতা নিয়ে অনেকেই দ্বিধায় পড়েন। বাংলাদেশ সরকারও বৈঠকের খবরটি গোপন রাখে। পাঁচদিন পর হোয়াইট হাউসের ব্রিফিংয়ে বৈঠকের কথা স্বীকার করা হলে এ নিয়ে রাজনীতিতে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
সাংবাদিক মোজাম্মেল হোসেন মঞ্জু তার ফেইসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘মাথায় কত প্রশ্ন আসে, দিচ্ছে না কেউ জবাব তার...’। তিনি লিখেন, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানকালে ২৭ সেপ্টেম্বর ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসে তাঁর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান। এই খবর ছয় দিন পরে হোয়াইট হাউসে অন্য একটি সংবাদ ব্রিফিং সূত্রে প্রকাশ পায় ও ৪ অক্টোবর বাংলাদেশের মিডিয়ায় স্থান পায়। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় উপদেষ্টা আবারও বাংলাদেশে সুষ্ঠু, অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন। এই সাক্ষাতের খবরটি সপ্তাহকাল প্রকাশ পেল না কেন? নিশ্চয়ই গোপনীয় সাক্ষাৎ ছিল না। আমাদের ওয়াশিংটন দূতাবাস, পররাষ্ট্র দপ্তর বা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় কোনো জায়গা থেকে খবরটি প্রকাশ করা হলো না বা প্রকাশ পেল না কেন? প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে যে সাংবাদিকরা গিয়েছিলেন তাঁরা কেউ খবরটি পেলেন না কেন? তাঁরা প্রধানমন্ত্রীর কর্মসূচিগুলি জানতেন না এবং সংবাদ সংগ্রহের কাজ করেননি? বাসস না জানলে অস্বাভাবিক, জানলে নিউজ ছাড়েনি কেন? অন্য সংবাদমাধ্যমের যারা এ ধরনের উচ্চ পর্যায়ের ঘটনায় ব্যয়বহুল সফরে যান তাঁদের হাতে খবর তুলে না দিলে তাঁরা নিজেরা কোনো খবর সংগ্রহ করেন না?’
মোজাম্মেল হোসেন মঞ্জু কিছুক্ষণ পর এ সংক্রান্ত আজকাল পত্রিকার একটি পোস্টের লিংক কপি করে তাঁর কমেন্ট দেন।
৪ অক্টোবর বিভিন্ন পত্রিকায় এ সংক্রান্ত যে খবর বেরিয়েছে তা হলো: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান। বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন যাতে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়, সে বিষয়ে আবারও জোর দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
ওয়াশিংটনে গত ২৭ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান। এ সময় তিনি বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন যাতে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়, তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
ওয়াশিংটনের একটি কূটনৈতিক জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময় প্রধানমন্ত্রী ২৭ সেপ্টেম্বর ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাস পরিদর্শন করেন। ওই দিন বাংলাদেশ দূতাবাসে জ্যাক সুলিভান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। তাঁদের মধ্যে ঘণ্টাখানেক আলোচনা হয়।
এদিকে ওয়াশিংটনের স্থানীয় সময় গত মঙ্গলবার দুপুরে হোয়াইট হাউসে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের কৌশলগত যোগাযোগবিষয়ক সমন্বয়কারী জন কারবির কাছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে জ্যাক সুলিভানের সৌজন্য সাক্ষাতের বিষয় তোলা হয়।
জন কারবিকে ভারতের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়ার (পিটিআই) সাংবাদিক প্রশ্ন করার সময় বলেন, গত সপ্তাহে জ্যাক সুলিভান পৃথকভাবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। এ ছাড়া গত মাসে দিল্লিতে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে শেখ হাসিনার সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বৈঠক হয়েছে। পিটিআইয়ের সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, দিল্লিতে ওই বৈঠকে নির্বাচন ও রোহিঙ্গা শরণার্থী নিয়ে আলোচনা হয়েছে কি না? জবাবে জন কারবি বলেন, তাঁরা অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের গুরুত্বের বিষয়ে আলোচনা করেছেন। জলবায়ু পরিবর্তনসহ নানা ক্ষেত্রে দুই দেশের সম্পর্কোন্নয়নের গুরুত্বের বিষয়েও তাঁদের মধ্যে কথা হয়েছে।
‘ওয়াশিংটন বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগ: প্রধানমন্ত্রীর সাথে মার্কিন কর্মকর্তাদের বৈঠক!’ শিরোনামে গত সপ্তাহে আজকাল-এ প্রকাশিত এক্সক্লুসিভ রিপোর্টটি পাঠকদের জন্য হুবহু দেওয়া হলো:
‘ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের (স্টেট ডিপার্টমেন্ট) কর্মকর্তারা। বুধবার দুপুরের পর এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে। সূত্র জানায়, রুদ্ধদ্বার এ বৈঠকে সিংহভাগ সময় জুড়ে স্থায় পায় বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন ও যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞার বিষয়। বৈঠকে বাংলাদেশের কর্মকর্তারা যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বিদ্যমান শীতল সম্পর্কের বরফ গলানোর চেষ্টা করেছেন বলে সূত্র জানায়। তবে এ ব্যাপারে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কিংবা ওয়াশিংটন দূতাবাসের কেউ মুখ খোলেননি। অবশ্য বৈঠক যে হয়েছে সে বিষয়টি একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশন শেষে করে বর্তমানে ভার্জিনিয়ায় ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বাসায় রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সূত্র জানায়, বুধবার বিকেলে ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাসে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নিউইয়র্কের কর্মসূচি শেষ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনও ওই সময় ওয়াশিংটনে পৌঁছান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওয়াশিংটনে আসার আগেই বৈঠকটি নির্ধারিত হয়ে ছিল। মূলত বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তাদের উদ্যোগেই প্রধানমন্ত্রীর সাথে মার্কিন কর্মকর্তাদের এই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশগ্রহণ শেষে প্রতিবারের মতো এবারও ওয়াশিংটন ডিসিতে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্থানীয় রিটজ কার্ল্টন হোটেলে তাঁর সরকারি আবাসস্থল হলেও তিনি সব সময় ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের ভার্জিনিয়ার বাড়িতেই থাকেন। এবারও সেখানেই আছেন। মূলত এ সময়টা পারিবারিক আবহে ব্যক্তিগতভাবে কাটান প্রধানমন্ত্রী। তবে এবার তাঁর কিছু কর্মসূচি ছিল। একেবারে বসে থাকেননি তিনি। প্রধানমন্ত্রী দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে মতবিনিময় করেছেন। প্রবাসী বিভিন্ন মহলের সাথে বাংলাদেশের নির্বাচন ও দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলাপ করেছেন। তাদের মতামত নিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কূটনীতিক জানান, এর বাইরে বাংলাদেশ দূতাবাসে মার্কিন কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জানা গেছে, রুদ্ধদ্বার এ বৈঠকে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট ও হোয়াইট হাউজের একাধিক কর্মকর্তা ছিলেন। তবে তাদের নাম জানা যায়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়াও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন ও রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান।
জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যুক্তরাষ্ট্র সফরের যে আনুষ্ঠানিক কর্মসূচি সেখানে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দেওয়ার পর তাঁর ওয়াশিংটন ডিসিতে সাত দিনের সফরে বিভিন্ন কার্যক্রমের কথা উল্লেখ রয়েছে। তবে সেই কার্যক্রমগুলি কি সে সম্পর্কে কিছু উল্লেখ ছিল না। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন স্টেট ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তাদের সাথে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকের কোন উল্লেখ না করে ‘আজকাল’কে শুধু বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী এখানে কারও সঙ্গে আলোচনা করতে আসেননি। তিনি পারিবারিকভাবে জন্মদিন উদযাপন করছেন। বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আর কিছুই বলেননি তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ প্রবাসের একজন বিশিষ্ট ব্যক্তি বুধবার আজকালকে জানান, প্রধানমন্ত্রীর সাথে স্টেট ডিপার্টমেন্টের কয়েকজন কর্মকর্তা দেখা করেছেন বলে তিনি জেনেছেন। তবে কী কথা হয়েছে তা তিনি বলতে পারেননি। তবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বাইডেন প্রশাসনের হস্তক্ষেপের মধ্যে স্টেট ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তাদের সঙ্গে শেখ হাসিনার কথাবার্তা হয়ে থাকলে রাজনৈতিক দিক দিয়ে তা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি এমনও বলেন, আগামী দুয়েক মাসে নির্বাচন ইস্যুতে পর্দার আড়ালে অনেক কিছু ঘটতে পারে। এতে যে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি জড়িয়ে গেছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তাই সরকার প্রকাশ্যে যাই বলুক না কেন, নির্বাচন ইস্যুতে মার্কিন প্রশাসনের সাথে বাংলাদেশ সরকারের দেনদরবার হলে তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই।
বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাংলাদেশ দূতাবাসে যাওয়ার কথা জানান হয়েছে দূতাবাসের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে। দূতাবাসের মিনিস্টার (প্রেস) এজেডএম সাজ্জাদ হোসেনের পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বুধবার ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস পরিদর্শন করেন। তিনি ১৯৯৭ সালে এই চ্যান্সারি ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন এবং ২০০০ সালে নবনির্মিত ভবনের উদ্বোধন করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী বুধবার বিকেলে দূতাবাসে পৌঁছালে যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান ফুলের তোড়া দিয়ে তাকে স্বাগত জানান। প্রধানমন্ত্রী প্রথমে দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু কর্নারে অবস্থিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আবক্ষ মূর্তিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে কিছু সময় নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।
প্রধানমন্ত্রী পরে দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় করেন এবং দেশের ভাবমূর্তি আরও উন্নত করতে তাদের আন্তরিকতা, পেশাদারিত্ব, সততা ও দেশপ্রেমের সাথে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান। তিনি শহীদ মিনার ও বঙ্গবন্ধু কর্নারসহ দূতাবাসের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন, অ্যাম্বাসেডর-অ্যাট-লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন ও অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানকালেই মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর ঘোষণা করে যে, তারা ভিসানীতি প্রয়োগ শুরু করেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, ক্ষমতাসীন দল এবং রাজনৈতিক বিরোধী দলের যেসব সদস্য গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় বাধার সৃষ্টি করেছেন তাদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগ হয়েছে। গত সপ্তাহে এ সংক্রান্ত একটি এক্সক্লুসিভ প্রতিবেদন ‘আজকাল’-এ প্রকাশিত হয়। ভিসা নীতি প্রয়োগ করে যুক্তরাষ্ট্র জানায়, যাদেরকে এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছে তাদের নাম প্রকাশ করা হবে না। ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্র ব্রায়ান শিলার বলেছেন, আরও নতুন ব্যক্তিবর্গের ওপর ভিসার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। যারা নিষেধাজ্ঞার মধ্যে পড়বেন তাদেরকে এই সিদ্ধান্তের কথা যুক্তরাষ্ট্র জানিয়ে দেবে। তবে তাদের নাম জনসমক্ষে প্রকাশ করবে না। মে মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বব্যাংকের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ওয়াশিংটন ডিসিতে এলে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের কর্মকর্তারা নতুন ভিসা নীতির কথা বাংলাদেশকে জানায়। এর এক সপ্তাহ পর যুক্তরাষ্ট্র আনুষ্ঠানিকভাবে ভিসা নীতি ঘোষণা করে। তারও আগে বাংলাদেশের এলিট ফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন-র্যাব এর সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে মার্কিন প্রশাসন।
যুক্তরাষ্ট্র চায় বাংলাদেশের অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন। এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা বিশ্বের সাথে দূরত্ব তৈরি হয়েছে বাংলাদেশের। সরকারের অভিযোগ, তারা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ইস্যুতে হস্তক্ষেপ করছে। বাংলাদেশের এই অবস্থানকে সমর্থন করে রাশিয়া ও চীন। ভারতও বিভিন্নভাবে বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের ধারাবাহিকতা চায় বলে তাদের ভূমিকা পরিস্কার করেছে। বাংলাদেশ সরকার অভিযোগ করেছে, ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছে। তারা মার্কিন রাষ্ট্রদূতের অতিরিক্ত নিরাপত্তা প্রত্যাহার করে নিলে দুদেশের সম্পর্কে টানাপোড়েনের সৃষ্টি হয়।