রবীন্দ্রনাথ মানুষের দু:খ, দূর্দশা চিহ্নিত করতে পারতেন
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ০২:০৬ এএম, ৭ অক্টোবর ২০২৩ শনিবার
'সাহিত্য একাডেমির অনুষ্ঠানে ড. আতিউর রহমান
আজকাল রিপোর্ট -
সাহিত্যের প্রথম স্পর্শ পাই রবীন্দ্র চর্চার মধ্য দিয়ে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শুধু একজন বড় সাহিত্যিক,সৃজনশীল মানুষ-ই ছিলেন না, তিনি অত্যন্ত কাজের মানুষও ছিলেন। মানুষের দু:খ, দূর্দশা তিনি চিহ্নিত করতে পারতেন এবং সে সমস্যাগুলো কীভাবে দূর করা যায় সেটি হাতে, কলমে করে দেখিয়েছেন। এটি একটি বিরাট বিষয়। অর্থনীতি ও সমাজ নিয়ে যখন তাঁর লেখা পড়ি তখন মনে হয় তিনি অনেক বড় অর্থনীতিবিদ। তিনি জীবন খুব ভালো করে বুঝতেন বলে জীবনের দু:খ, কষ্ট, আনন্দ ভালো করে ধরতে পারতেন। সাহিত্য একাডেমীর নিয়মিত মাসিক সাহিত্য আসরে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্ণর ও অর্থনীতিবিদ ড. আতিউর রহমান একথা বলেন।
গত ২৯ সেপ্টেম্বর জ্যাকসন হাইটসের গোল্ডেন এজ পার্টি হলে 'সাহিত্য একাডেমি, নিউইয়র্ক'র নিয়মিত মাসিক সাহিত্য আসরটি অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠান পরিচালনায় ছিলেন একাডেমির পরিচালক মোশাররফ হোসেন।
এবারের আসরে বিশেষ অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্ণর ও অর্থনীতিবিদ ড. আতিউর রহমান।
তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, প্রবাসের বুকে এমন একটি মিনি বাংলাদেশ দেখে আমি অভিভূত। এত দূরে বসেও আপনারা সাহিত্য চর্চা করছেন মানে বাংলাদেশকে শুধু মুখে নয় অন্তরে ধারণ করেছেন। তিনি বলেন, ছাত্রাবস্থা থেকেই আমি অর্থনীতির চর্চা করি, লিখি। অনেকে বলেন আমার এই অর্থনীতি চর্চাও সাহিত্যের মধ্যে পড়ে। আমি মনে করি, তিনি বলেন,রবীন্দ্র চর্চা করলে যে কোন সমাজ বিজ্ঞানী উপকৃত হবেন, আমি হয়েছি। আমার কথা, কাজে ঘুরেফিরে রবীন্দ্রনাথ আসে। রবীন্দ্রনাথ থেকে নতুন করে আমরা উন্নয়ন ভাবনার খোরাক পাই। রবীন্দ্রনাথের শিক্ষা ভাবনা, কৃষি ভাবনা, সমাজ ভাবনা, দারিদ্র ভাবনা, সমবায় ভাবনা, পরিবেশ ভাবনা এগুলো নিয়ে আমি বই লিখেছি। রবীন্দ্রনাথ এবং বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা ভাবনায় আমরা প্রচুর মিল পাই। বঙ্গবন্ধু কতবড় উঁচুমানের সাহিত্যিক ছিলেন তা আমরা সকলে জানি এখন। বঙ্গবন্ধুর 'আমার দেখা নয়া চীন ' বইটির ভাষা পড়লে মনে হয় তিনি অল্প বয়স থেকেই তৈরি হয়েছেন। বঙ্গবন্ধু শুধু বই লিখেই ক্ষান্ত হোন নি তিনি শ্রমিকের ঘরে গেছেন, শ্রমিকের ছেলেমেয়েরা কোথায় পড়ছে তা দেখেছেন। এগুলো দেখে বোঝা যায় তিনি মনে মনে তৈরি হচ্ছিলেন সবাইকে নিয়ে একটি বিপ্লব করবেন, যেখানে সমাজ এবং অর্থনীতির ব্যাপক পরিবর্তন আনা যাবে। বঙ্গবন্ধু খুব রবীন্দ্র ভক্ত ছিলেন। তিনি জেলখানায় যাওয়ার সময় সঞ্চয়িতা নিয়ে যেতেন। বঙ্গবন্ধু লিখেছেন, তিনি চাইলেও জেলখানায় রবীন্দ্রনাথের বিপ্লবী ভাবনা সম্বলিত লেখা রাশিয়ার চিঠি কিংবা ঘরে বাইরে এগুলো নিতে দিতো না। রবীন্দ্রনাথ ও বঙ্গবন্ধু, এই দুই শ্রেষ্ঠ বাঙালিকে নিয়ে জীবন বোধ ও জীবন গঠনের জন্য আমাদের আরো বেশী চর্চা প্রয়োজন।
আলোচনায় অংশ নেন ভাস্কর আখতার আহমেদ রাশা, দৌড়বিদ নাসির শিকদার, সাঈদা উদিতা প্রমূখ। আবৃত্তি করেন, আনোয়ারুল হক লাভলু।
এবারের আসরে স্বরচিত কবিতা, লেখা পাঠ করেন,নীরা কাদরী, কাজী আতীক, ম্যারীষ্টেলা শ্যামলী আহমেদ,স্বপন বিশ্বাস, সুরীত বড়ুয়া,বেনজির শিকদার,তাহমিনা খান, রিমি রুম্মান, মনিজা রহমান,ফারহানা হোসেন,এলি বড়ুয়া, সেজান আহমেদ,পলি শাহীনা প্রমুখ।