রোববার   ০১ ডিসেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১৬ ১৪৩১   ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ছবিতে ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেট ইতিহাসের স্মরণীয় মুহূর্ত

নিউজ ডেস্ক

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ১২:০৫ পিএম, ১৪ অক্টোবর ২০২৩ শনিবার

১৯৫৫ সাল থেকে শুরু। মাঝে পেরিয়ে গিয়েছে অনেকগুলো বছর। প্রজন্মের পর প্রজন্ম এসেছে, তবে রঙ হারায়নি ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেট দ্বৈরথ। দুই দল ১৩৪ ওয়ানডেতে জন্ম দিয়েছে বহু স্মরণীয় মুহূর্ত। ২০২৩ সালের বিশ্বকাপে আরও একবার মুখোমখি হচ্ছে এই দুই পরাশক্তি। এখন পর্যন্ত দুই দেশের মুখোমুখি লড়াইয়ে পাকিস্তান জিতেছে ৭৩ ম্যাচ। ভারতের পক্ষে গিয়েছে ৫৬ ম্যাচ। আর ৫ ম্যাচে আসেনি ফল। 

ইমরান খান, কপিল দেব থেকে শুরু করে ওয়াসিম আকরাম-শচীন টেন্ডুলকার। কখনো শোয়েব আকতার, কখনো শহিদ আফ্রিদি। কখনোবা সৌরভ গাঙ্গুলি, বিরাট কোহলি, পাকিস্তান আর ভারত ম্যাচে তারা উপহার দিয়েছেন অজস্র স্মরণীয় মুহূর্ত। ২০২৩ বিশ্বকাপের আজকের ম্যাচের আগে একবার দেখে নেওয়া যাক পাক-ভারত লড়াইয়ের স্মরণীয় কিছু ছবি।  

১৯৮৭ সালের জাভেদ মিঁয়াদাদ

ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে স্মরণীয় ইয়র্কার করেছিলেন সম্ভবত চেতন শর্মা। ইয়র্কার অবশ্য হয়নি। হয়েছে ফুলটস। তাতে ছয় মেয়ে দলকে জিতিয়েছিলেন পাকিস্তান ক্রিকেটের বড়ে মিয়া খ্যাত জাভেদ মিঁয়াদাদ। ক্রিকেটের ইতিহাস প্রথমবার দেখলো শেষ বলে ছয় মেরে জয়ের ঘটনা।

মিঁয়াদাদের সেই লাফ

আরও একবার জাভেদ মিঁয়াদাদ। ১৯৯২ বিশ্বকাপ। উইকেটের পেছনে দাঁড়িয়ে বারবার আপিল করেই যাচ্ছিলেন ভারতীয় উইকেটরক্ষক কিরণ মোরে। মোরের চেষ্টা ছিল পাকিস্তানি ব্যাটারদের ভুল করতে বাধ্য করা। মিঁয়াদাদ পাল্টা উত্তরে কিংবা রাগের বশে বানরের মত লাফিয়েছেন। জন্ম নেয় আরও এক স্মরণীয় মুহূর্ত। 

আমির সোহেল- ভেঙ্কেটশ প্রসাদ (১৯৯৬)

ভেঙ্কেটশ প্রসাদকে আগের বলেই চার মেরেছেন আমির সোহেল। দেখিয়ে দিলেন কাভার অঞ্চল। বোঝালেন, পরের বলটাও সেখানেই পাঠাবেন। তবে প্রসাদ পরের বলেই উড়িয়ে দিলেন উইকেট। বুনো উল্লাস ভারতের। হতাশ আমির সোহেল। 

মহাকাব্যিক সাঈদ আনোয়ার (১৯৯৭)

সাঈদ আনোয়ারের ১৯৪ রানের মহাকাব্যিক ইনিংস। তাও কিনা ভারতের মাটিতে। পরের অনেকগুলো বছর এটিই ছিল ওয়ানডে ইতিহাসের সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। সাঈদ আনোয়ার এরপরেও সেঞ্চুরি করেছেন ভারতের বিপক্ষে। ২০০৩ বিশ্বকাপের দেখায়। তবে সেবার আলো কেড়ে নিয়েছিলেন সেঞ্চুরি না করা শচীন।  

দুর্দান্ত টেন্ডুলকার, হতাশ শোয়েব (২০০৩ বিশ্বকাপ)

২০০৩ বিশ্বকাপ। ম্যাচের আগেই শোয়েব আখতার বললেন, শচীনের উইকেট তিনি চান। উইকেট পেয়েছেনও বটে। তবে তখন শচীন করে ফেলেছেন ৯৮ রান। তর্কসাপেক্ষে পাক-ভারত দ্বৈরথের সেরা ইনিংস সেটি। ওই ইনিংস খেলার পথেই শোয়েবের বাউন্সারকে লাফিয়ে থার্ডম্যান দিয়ে ছয় করেছিলেন তিনি। পরে সেই শটই হয়ে যায় ২০০৩ বিশ্বকাপের পোস্টার। শোয়েব অবশ্য শচীনের উইকেট পেয়েছিলেন। তবে ততক্ষণে ম্যাচটা অনেকটাই হেলে গিয়েছিল ভারতের কাছে

সিরিজ জয়ের আনন্দে মাতোয়ারা ভারত (২০০৪)

২০০৪ সালের দ্বিপাক্ষীয় সিরিজ। ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা দ্বিপাক্ষীয় সিরিজ বলা হয় যাকে। ৩-২ ব্যবধানে ভারতের জয়। এই সিরিজই প্রথম দেখেছিলো ৩০০ রান করাও ওয়ানডে ইতিহাসে নিরাপদ নয়। ভারত শেষ পর্যন্ত সিরিজ জেতে শেষ ওয়ানডেতে গিয়ে। ইনজামামের বীরত্ব। ভারতে তারুণ্যের উত্থান। ১৯৯৯ এর টেস্ট সিরিজের পর এটিই সবচেয়ে আলোচিত ছিল দুই দেশের ক্রিকেট অঙ্গনে

আফ্রিদি-গম্ভীরের যে দ্বন্দ আজও মেটেনি (২০০৭)

২০০৭ সাল। আরও একবার দ্বিপাক্ষীয় সিরিজ। আফ্রিদি তখন ক্রিকেট বিশ্বের বড় নাম। আর গম্ভীর কেবল নিজেকে প্রতিষ্ঠার চেষ্টায়। দুজনই মেজাজ হারিয়েছেন মাঠের মাঝে। সেটাও একবার না। কয়েকবার। যে তিক্ততা মিটেনি আজকের দিনেও। 

২০১১ বিশ্বকাপে ভারতের দারুণ জয়

২০১১ বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল। নিজ দেশে পাকিস্তানকে হারানো। ফাইনালে ভারত। শেষ পর্যন্ত জিতেছিল বিশ্বকাপটাও। শচীন টেন্ডুলকার আরও একবার নিজেকে প্রমাণ করেছিলেন পাকিস্তানের বিপক্ষে। পাকিস্তানের হয়ে সেদিন অজ্ঞাত কারণে মাঠে নামা হয়নি শোয়েব আকতারের। পরে দাবি করেছিলেন, খেলতে পারলে শচীনকে আরও আগেই ফেরাতে পারতেন তিনি। 

ভারত পাকিস্তানের শেষ সিরিজ (২০১২)

২০১২ সালের পাকিস্তানের সিরিজ জয়। এটাই শেষ। এরপর দীর্ঘ ১১ বছরে আর দ্বিপাক্ষীয় সিরিজ খেলেনি ক্রিকেটের এই দুই পরাশক্তি। তিন ম্যাচের সেই সিরিজ পাকিস্তান জিতে নেয় ২-১ ব্যবধানে। দুই দেশ আবার কবে সিরিজ খেলবে তা অজানা। সে হিসেবেও স্মরণীয় এই ছবিটি। 

দ্য বিরাট শো (২০১৫)

শচীনের রেখে যাওয়া শূন্যতা যেন পূরণ করতেই বিশ্বক্রিকেটে বিরাট কোহলির আবির্ভাব। পাকিস্তানের বিপক্ষে বরাবরই সাবলীল এই ব্যাটার। ২০১৫ বিশ্বকাপে অ্যাডিলেডের ইনিংসটাও ঠিক তেমন। একপ্রান্ত আগলে রেখে কোহলির করা ১০৭ রানের ইনিংসটাই ভারতকে মানসিকভাবে এগিয়ে দিয়েছিল অনেকখানি। ম্যাচটাও জিতেছিল তারা।

ভারতকে হারিয়ে পাকিস্তানের শিরোপা (২০১৭)

ভারত বনাম পাকিস্তানের ফাইনাল। সম্ভবত ক্রিকেট বিশ্বের সবচেয়ে আরাধ্য ফাইনাল। ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ঘটলো সেটাই। গ্রুপপর্বেও ছিল একই ফিক্সচার। তাতে পাত্তা পায়নি পাকিস্তান। তবে ফাইনালে উলটে গেল পাশার দান। দুর্দান্ত ক্রিকেট উপহার দিয়ে শিরোপা ঘরে তোলে পাকিস্তান। 

রোহিত-বিরাটের ব্রোমান্সে পাকিস্তান বধ (২০১৯)

রোহিত শর্মার ১৪০ রানের ম্যারাথন ইনিংস। বিরাট কোহলি ৭৭। এক ইনিংস পরেই বোঝা গিয়েছিল, একপেশে লড়াই হচ্ছে ম্যানচেস্টারে। হয়েছিল সেটাই। দুই রাজসিক ইনিংসে ভর করে পাকিস্তানকে সপ্তমবারের মত বিশ্বকাপে পরাজয় উপহার দেয় ভারত।