জিম্মি উদ্ধারে ইসরাইলে সেনা পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র
নিউজ ডেস্ক
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ১২:৫০ পিএম, ১৪ অক্টোবর ২০২৩ শনিবার
বিশাল রণতরি আর অস্ত্রের চালান পাঠিয়েছে আগেই। বলা যায় ঢাকঢোল পিটিয়েই। এবার হামাসের হাতে আটক জিম্মিদের উদ্ধারে ইসরাইলে সেনা পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র। ১০ হাজার ৭৪১ কিলোমিটার দূরের মিত্রদেশের বিপদ উদ্ধারের ‘দ্বিতীয় পদক্ষেপ’ খানিকটা চুপিসারেই সেরে ফেললেন ‘বিশ্ব মোড়ল’! দুদেশের ‘জয়েন্ট স্পেশাল অপারেশন কমান্ডো’র অধীনে সেনা পাঠানো হয়েছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য মেসেঞ্জার বুধবার এক প্রতিবেদনে বলেছে, জয়েন্ট স্পেশাল অপারেশন কমান্ডের অধীনে দুটি বিশেষ ইউনিট রয়েছে-সেনাবাহিনীর ডেল্টা ফোর্স এবং নেভি সিল টিম সিক্স।
যারা আগেও জিম্মি উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করেছে। যাদের ওসামা বিন লাদেনকে হত্যা করার জন্য পাঠানো হয়েছিল। প্রতিকূল পরিস্থিতিতে হামাসের সঙ্গে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত রাখা (স্ট্যান্ডবাই) হয়েছে দেশটির স্পেশাল ফোর্স ‘নেভি সিল’কেও। ফক্স নিউজ, ডেইলি মেইল, স্কাই নিউজ, নিউইয়র্ক পোস্ট, ডেইলি মিরর। যুক্তরাষ্ট্রের ২০ জন নাগরিকসহ মোট ১৩০ জন জিম্মিকে মুক্ত করতে মার্কিন সেনাবাহিনীর ডেল্টা ফোর্স বুধবার রাতে ইসরাইলে পাঠানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী অস্টিন।
বলেছেন, ইসরাইলি কর্তৃপক্ষকে জিম্মি উদ্ধার প্রচেষ্টায় জড়িত সম্ভাব্য অপারেশনগুলোর জন্য ‘গোয়েন্দা তথ্য ও পরিকল্পনা’ দিয়ে সহায়তা করতে মার্কিন জিম্মি উদ্ধার বাহিনীকে পাঠানো হয়েছে। আরও বলেন, ইসরাইলের সঙ্গে পেন্টাগনের (মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ) একটি যোগসূত্র রয়েছে যারা ইসরাইলি বিশেষ অভিযান বাহিনীর সঙ্গে কাজ করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন উচ্চপদস্থ মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাও নিশ্চিত করে বলেছেন, ইতোমধ্যেই ইসরাইলের মাটিতে কিছু বিশেষ অপারেশন বাহিনী রয়েছে। বৃহস্পতিবার দেশটির নির্ভরযোগ্য আরেকটি গণমাধ্যম নিউজ নেশনও (নেক্সটার মিডিয়া গ্রুপের মালিকাধীন আমেরিকান টেলিভিশন নেটওয়ার্ক) এ খবর নিশ্চিত করেছে। নেভি সিল বাহিনীকে জরুরি অবস্থায় (নির্দেশের অপেক্ষা) রাখা হয়েছে বলেও জানায় সংবাদমাধ্যমটি।
দ্য মেসেঞ্জারের সঙ্গে কথা বলার সময় দুই ঊর্ধ্বতন মার্কিন সামরিক কর্মকর্তা জানান, কাছাকাছি একটি ইউরোপীয় দেশে নেভি সিলকে সতর্কতার সঙ্গে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যুদ্ধে প্রয়োজনে ইসরাইলকে হামাসের বিরুদ্ধে সহায়তা করতে পুরোদমে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ইসরাইলের বিশেষ বাহিনীর বিশেষজ্ঞ অ্যারন কোহেন মার্কিন গণমাধ্যম ফক্স নিউজকে বলেছেন, ইসরাইল বড় আক্রমণের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।
বিশেষ বাহিনী মোতায়েন ছাড়াও হামলার পর থেকে, যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলে যুদ্ধাস্ত্র এবং বিমান প্রতিরক্ষা সরবরাহ করেছে। বিমানবাহী জাহাজ ইউএসএস জেরাল্ড আর. ফোর্ড পাঁচটি ক্ষেপণাস্ত্র গাইডেড-মিসাইল ক্রুজার এবং মিসাইল ডেস্ট্রয়ারসহ আটটি স্কোয়াড্রন মঙ্গলবার পূর্ব ভূমধ্যসাগরের মধ্য দিয়ে ইসরাইলের উপকূলে পৌঁছেছে। ইউএস সেন্ট্রাল কমান্ড মঙ্গলবার বিকালে এক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা বলেছেন, ইরান বা হিজবুল্লাহকে সংঘাতে বাধা দিতে ফোর্ড ক্যারিয়ার স্ট্রাইক গ্রুপ মোতায়েন করা হয়েছে। এই গ্রুপটি গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ ও সামুদ্রিক আধিপত্য থেকে শুরু করে দূরপাল্লার স্ট্রাইক পর্যন্ত একটি সম্পূর্ণ মিশন পরিচালনা করতে পারে। পেন্টাগন ইসরাইলকে আরও অস্ত্র সরবরাহের দিকে নজর দিচ্ছে বলে জানা যায়। গাজা যুদ্ধকে কেন্দ্র করে সমরাস্ত্রের উৎপাদন বাড়াতে প্রতিরক্ষা ঠিকাদারদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে পেন্টাগন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনও বুধবার থেকে ইসরাইলকে আরও সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
এদিকে হামাসের মুখপাত্র আবু ওবাইদা আগেই (সোমবার) হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ইসরাইল যদি সতর্কতা ছাড়াই গাজার লোকদের লক্ষ্য করে তবে গোষ্ঠীটি তাদের জিম্মিদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া শুরু করবে।