খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছে যুক্তরাষ্ট্র
নিউজ ডেস্ক
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ১২:৪৩ পিএম, ২৮ অক্টোবর ২০২৩ শনিবার
বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতির বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছে যুক্তরাষ্ট্র। একইসঙ্গে খালেদা জিয়ার জন্য ন্যায্য ও স্বচ্ছ আইনি প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার আহ্বানও জানিয়েছে দেশটি। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ব্রিফিং থেকে এই তথ্য জানানো এছাড়া বাংলাদেশে সরকার বিরোধীদের আসন্ন মহাসমাবেশের প্রসঙ্গটিও পররাষ্ট্র দপ্তরের এই ব্রিফিংয়ে আলোচিত হয়েছে। একইসঙ্গে বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হতে হবে বলেও জানিয়ে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিক ম্যাথিউ মিলারের কাছে খালেদা জিয়ার অসুস্থতা ও চিকিৎসা নিয়ে প্রশ্ন করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি দেয়ার জন্য বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের কাছে যুক্তরাষ্ট্র কোনো আহ্বান জানাবে কিনা, কারণ স্টেট ডিপার্টমেন্টের বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তার বিচারে প্রয়োজনীয় ন্যায্যতা পূরণ করা হয়নি এবং এটি আসলে তাকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেয়ার একটি রাজনৈতিক চক্রান্ত। জন হপকিন্সের তিনজন ডাক্তার বাংলাদেশে গেছেন এবং চিকিৎসার অবস্থা পরীক্ষা করে সরকারি বিধিনিষেধের বেড়াজালে দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রীর মৃত্যুর উচ্চ ঝুঁকির কথা জানিয়েছে ভয়েস অব আমেরিকা। এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কি?
জবাবে মিলার বলেন, ‘আমি এটা বলতে পারি, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার অবনতিশীল শারীরিক অবস্থার প্রতিবেদন পর্যবেক্ষণ করছে যুক্তরাষ্ট্র। তাঁর (খালেদা জিয়া) জন্য একটি ন্যায্য ও স্বচ্ছ আইনি প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকারকে উৎসাহিত করেছি আমরা। তবে এ বিষয়ে আমার বলার কিছু নেই। এটা দেশটির অভ্যন্তরীণ আইনের বিষয়।’
এরপর মিলারকে প্রশ্ন করা হয়, বাংলাদেশে ২৮ অক্টোবরের রাজনৈতিক কর্মসূচি সামনে রেখে সরকার দমনপীড়ন চালাচ্ছে। প্রতিদিনই বিরোধী পক্ষের নেতা–কর্মীদের গ্রেফতার করছে। সমাবেশে বড় ধরনের জমায়েত প্রতিহত করতে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করছে। আপনি, রাষ্ট্রদূত পিটার হাস আগেও বহুবার মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে এবং জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটানোর আহ্বান জানিয়েছেন। এ বিষয়ে আপনার মতামত কী?
এই প্রশ্নের উত্তরে মিলার বলেন, ‘আমাদের (মার্কিন প্রশাসন) বিশ্বাস, বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ হওয়া প্রয়োজন। এ ছাড়া আমার আর বলার কিছু নেই।’
মিলারকে জিজ্ঞাসা করা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আফরিন আক্তারের ঢাকা সফরের সময় বিভিন্ন টক শোতে সরকারবিরোধী বক্তারা বলেছেন, ৩ নভেম্বরের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে সময় বেঁধে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তাঁদের দাবি, মার্কিন প্রশাসন বিরোধীপক্ষের পাশে রয়েছে। দাবির বিষয়টি আপনি নিশ্চিত করবেন, নাকি অস্বীকার করবেন?
জবাবে মিলার বলেন, ‘আমি শুধু বলব যে কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিষয়ে আমরা নির্দিষ্ট কোনো পক্ষ নিই না।’
হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রশ্ন করা হয়, উৎসবের শেষে ২৮ অক্টোবর ঢাকা অবরোধ করার কর্মসূচি দিয়েছে বিরোধী দল বিএনপি। তারা তাদের সহিংস সমর্থকদের ঢাকা অবরোধে যোগ দিতে বলেছে। রাজনৈতিক সহিংসতার রেকর্ড রয়েছে দলটির। দলটির নেতা তারেক রহমান অভিযুক্ত ও পলাতক। সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত তাকে বাংলাদেশে ‘সহিংসতার প্রতীক’ বলেছেন। এই পরিস্থিতিতে বিএনপির রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে আপনার মতামত কী?
এ প্রশ্নের কোনো স্পষ্ট উত্তর দেননি মিলার। তিনি শুধু বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি পরে আপনাকে মন্তব্য জানাব।’