গাজায় বিমানবন্দরের চেয়েও ছোট এলাকায় থাকছে ১৮ লাখ মানুষ
নিউজ ডেস্ক
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ১২:১৯ এএম, ৯ ডিসেম্বর ২০২৩ শনিবার
ইসরাইল-হামাস যুদ্ধের ৬৪তম দিন আজ। প্রতিদিনেই বাড়ছে ফিলিস্তিনি বেসামরিক মৃতের সংখ্যা। গাজায় বেসামরিক হত্যায় এখন বিশ্বের বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থাগুলোও ক্ষেপে উঠেছে। বেসামরিক হত্যা কমাতে উদ্যোগ নিতে বলছে ইসরাইলকে। যুদ্ধ শুরুর পরপরই ফিলিস্তিনিদের উত্তর গাজা থেকে সরে দক্ষিণ গাজায় চলে যাওয়ার নির্দেশনা দিয়েছিল ইসরাইল। কিন্তু গাজার কোনো অঞ্চলেই নিরাপদ নয় তারা।
গত ২৪ নভেম্বর গাজায় শুরু হওয়া ৭ দিনের যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার পরপরই দক্ষিণ গাজায়ও আক্রমণ শুরু করেছে ইসরাইলের সামরিক বাহিনী। বাস্তুচ্যুত হয়েছে দক্ষিণ গাজার খান ইউনুসে আশ্রয় নেওয়া হাজার হাজার ফিলিস্তিনি। খান ইউনুসে আক্রমণ শুরুর পর তাদের দক্ষিণ গাজার আল-মাওয়াসি শহরের ৬.৫ বর্গকিলোমিটার (২.৫ বর্গমাইল) জনশূন্য, বালুকাময় একটি এলাকাকে ‘নিরাপদ স্থান’ হিসাবে ঘোষণা দিয়ে ফিলিস্তিনিদের এখানে আশ্রয় নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে ইসরাইল।
আল-মাওয়াসি শহর আয়তনে লন্ডনের ১২.১৪ বর্গকিলোমিটারের হিথ্রো বিমানবন্দরের প্রায় কাছাকাছি, যা প্রায় ১ কিলোমিটার (০.৬ মাইল) প্রশস্ত ও ১৪ কিলোমিটার (৮.৭ মাইল) দীর্ঘ। বর্তমানে একটি বিমানবন্দরের চেয়েও ছোট এলাকায় থাকছে প্রায় ১৮ লাখ মানুষ। আল-জাজিরা।
তবে ইসরাইলের দাবি অনুযায়ী এটি ফিলিস্তিনিদের জন্য এটি আসলেই ‘নিরাপদ স্থান’ অথবা বসবাস উপযোগী কি না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। গত বছর লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর দিয়ে প্রায় ৬ কোটি ১০ লাখ মানুষ যাতায়াত করেছে। এই সংখ্যা গড়ে প্রতিদিনে দাঁড়ায় এক লাখ ৬৭ হাজার জনে। আর এই হিসাবে আল-মাওয়াসির ‘নিরাপদ’ অংশে জনসংখ্যার ঘনত্ব হিথ্রোর চেয়ে ২০ গুণের বেশি। বিশেষজ্ঞরাও ইসরাইলের ঘোষণা করা নিরাপদ স্থানগুলোকে ফিলিস্তিনি জনসংখ্যা ধারণে অক্ষম বলে মনে করছেন।
রামাল্লা-ভিত্তিক আইন বিশেষজ্ঞ বুশরা খালিদি এ বিষয়ে বলেন, ‘এই স্থানগুলোতে জনাকীর্ণ অবস্থার কারণে কলেরা ও গ্যাস্ট্রোএন্টেরাইটিসের মতো রোগ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে।’ ইসরাইলের এমন সিদ্ধান্তকে বিপর্যয়ের একটি উপায় বলে অভিহিত করেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান টেড্রোস আধানম ঘেব্রেইসাস। বলেন, ‘এত বেশি মানুষের জন্য এই স্বল্প পরিকাঠামো বা পরিষেবা স্বাস্থ্যের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়ে তুলবে। এই অঞ্চলগুলো জনসাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মৌলিক শর্ত বা অন্যান্য প্রয়োজন পূরণ করতে পারছে না।’
ইসরাইলের ঘোষণা করা আল-মাওয়াসির ‘নিরাপদ’ স্থান পরিদর্শন করেছে স্কাই নিউজের একটি দল। সেখানে তারা ফিলিস্তিনিদের জন্য তারা কোনো আশ্রয়ের ব্যবস্থা, তাঁবু বা খাবার তৈরি রান্নাঘর দেখতে পায়নি। এছাড়া সেখানে কোনো স্বাস্থ্যসেবার ব্যবস্থাও নেই বলে জানিয়েছে তারা।