বিশ্বের শান্তি কামনা
নিউইয়র্কে বড়দিন উদযাপন
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ১০:০৮ এএম, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৩ শনিবার
আজকাল রিপোর্ট
খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব ‘বড়দিন’ বা ‘ক্রিসমাস ডে’। এই বড়দিনে বিশ্ববাসীর সুখ শান্তি কামনা করে নিউইয়র্কে গির্জায় গির্জায় প্রার্থনা করেছেন খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীরা। সারা বছরই নিউইয়র্কের খ্রিষ্টানরা এই দিনটির অপেক্ষায় থাকেন। দিনটি শুরু হবার আগেই ডিসেম্বর মাসজুড়ে থাকে আনন্দ উৎসবের আয়োজন।
সোমবার চার্চে ছিল উপচে পড়া ভিড়। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ গির্জায় উপস্থিত হয়ে বিশ্ববাসীর জন্য সুখ শান্তি কামনা করে প্রার্থনা করেছেন। অন্যদিকে বড়দিনকে ঘিরে পুরো উৎসবমুখর ও বর্ণিল আয়োজনে সেজেছে নিউইয়র্ক। আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়েছিল বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বাসা-বাড়ি। শপিং কমপ্লেক্সগুলোতে দেখা গেছে উপচে পড়া ভিড়। পরিবার পরিজন নিয়ে আনন্দ আয়োজন ছিল। প্রবাসী বাংলাদেশিরাও যোগ দিয়েছেন বড়দিনের এই উৎসবে।
বড়দিনকে ঘিরে আনন্দ উৎসবে মেতেছেন প্রবাসী বাঙালিরা। বড়দিনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক হলো প্রিয়জনের মধ্যে উপহার বিনিময়। সিক্রেট শান্তা আর প্রগাঢ় ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে তারা ভাগাভাগি করে নেন বড়দিনের আনন্দ।
নিউইয়র্কে প্রতি বছরের মত এবারও শহরের কুইন্স বরোর উডসাইডে বাংলাদেশি-আমেরিকান খ্রিষ্টান সম্প্রদায় পরিচালিত ইউনাইটেড বেঙ্গলী লুথারান চার্চ অব আমেরিকায় ব্যাপক আডম্বরে বড়দিনের অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।
চার্চের পাদ্রী রেভা. মি. জেমস রয় কমিউনিটির আন্তধর্মীয় ইমাম, পন্ডিতসহ বিশিষ্টজনদের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানান। নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কন্স্যুলেটের কন্সাল জেনারেল মোহাম্মদ নাজমুল হুদা বিশেষ অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে যোগদান করেন।
কন্সাল জেনারেল মোহাম্মদ নাজমুল হুদা দিনটির শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশে আজ এই দিন পালিত হচ্ছে মহাসমারোহে। ধর্মে ধর্মে সহাবস্থানের মডেল রাষ্ট্র হিসেবে আন্তধর্মীয় সম্প্রীতির শীর্ষে অবস্থান করছে আজকের বাংলাদেশ, যা সম্ভব হয়েছে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টির বদৌলতে। অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথির মধ্যে ড. থমাস দুলু রায় ও ব্রুকলীন সেন্ট পিটার্স চার্চের আমেরিকান পাদ্রী রেভা. বেংকী উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও সানিসাইডের কুইন অব অ্যাঞ্জেলেস চার্চে খ্রিষ্টমাস ইভের আয়োজন করে প্রবাসী খ্রিষ্টান বাঙালি এসোসিয়েশন। প্রচলিত রীতি অনুযায়ী আগের দিন সন্ধ্যায় প্রার্থনা সভার মধ্য দিয়ে শুরু হয় উৎসবের। বিভিন্ন শ্রেণী-পেশা ও বয়সী মানুষ আলো জ্বালিয়ে উৎসবের সূচনা করেন। প্রভু যীশু খ্রিষ্টের মানব কল্যানের বাণী তুলে ধরেন ফাদার মিন্টো রোজারিও। সেই সাথে বিশ্বময় শান্তির কথা বলেন বাংলাদেশি খ্রিষ্টানরা।
বাংলাদেশ থেকে বারো হাজার মাইল দূরে। আত্মীয়-স্বজন থেকে কেউ কেউ বিচ্ছিন্ন। এখানে তাদের কথা যেমন মনে করেছেন তেমনি প্রবাসী খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীরা একে অন্যের সাথে আনন্দ ভাগাভাগি করে নিয়েছেন নিজেদের মতো করে। প্রবাসী বাঙালি খ্রিষ্টান এসোসিয়েশনের আয়োজনে গির্জায় প্রার্থনা থেকে শুরু করে কীর্তন সব কিছু হয়েছে বাংলায়। বিদেশে বাংলা সংস্কৃতিকেও তারা সমুন্নত রেখেছেন।
অনুষ্ঠানে প্রার্থনায় অংশ নেন ফাদার মিন্টো রোজারিও। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন প্রবাসী খ্রিষ্টান বাঙালি এসোসিয়েশন সভাপতি গেব্রিয়াল তাপস গমেজ, কমিউনিটি নেতা জেমস কোরায়া, সুখেন জোসেফ গমেজ, সিনথিয়া স্মিতা গমেজ, জেসিকা গমেজ প্রমুখ।