মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১   ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বছরের শেষ আসরে মুখর সাহিত্য একাডেমি

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ০৮:৩৪ এএম, ৬ জানুয়ারি ২০২৪ শনিবার

লেখকের মুখোমুখি মনজুর আহমদ
 

 

আজকাল রিপোর্ট-
নতুন একটি পর্ব সংযোজনের মধ্য দিয়ে গত শুক্রবার ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হলো সাহিত্য একাডেমীর বছরের শেষ সাহিত্য আসর। ১৩ বছর ধরে নিয়মিত একটানা চলে আসা একাডেমীর মাসিক সাহিত্য আসরের এই নতুন সংযোজিত পর্বটি হচ্ছে ‘লেখকের মুখোমুখি’। লেখকের মুখোমুখি বসে তাঁর সাহিত্যকর্ম নিয়ে আলোচনার এই পর্বের প্রথম আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন সাংবাদিক-সাহিত্যিক মনজুর আহমদ।  
জ্যাকসন হাইটসের জুইস সেন্টারে আয়োজিত এদিনের অনুষ্ঠানটি সূচনা হয় বিজয়ের মাসে পারভীন সুলতানার কবিতা আবৃত্তির মধ্য দিয়ে। আসরের প্রথমেই ছিল লেখকের মুখোমুখি পর্ব। পর্বটি পরিচালনায় ছিলেন লেখক হাসান ফেরদৌস। তিনি বরেণ্য সাংবাদিক ও লেখক মনজুর আহমদের সঙ্গে তাঁর সাংবাদিকতা এবং লেখালেখি নিয়ে কথা বলেন। দ্বিতীয় পর্বটি সাজানো হয় সাহিত্য একাডেমির নিয়মিত আয়োজন আলোচনা ও স্বরচিত পাঠ দিয়ে। পুরো আসর পরিচালনায় ছিলেন একাডেমির পরিচালক মোশাররফ হোসেন।
আলোচনার শুরুতে হাসান ফেরদৌস বলেন, মনজুর আহমদ ৬২ বছর সাংবাদিকতা করেছেন। সাংবাদিকতা তাঁর রক্তে, পাশাপাশি তিনি অনেক গুরুত্বপূর্ণ বই লিখেছেন। তাঁর গ্রন্থ সংখ্যা ২১টি। এগুলোকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। প্রথমত মুক্তিযুদ্ধ, দ্বিতীয়ত স্মৃতিকথা, তৃতীয়ত তাঁর সাহিত্যকর্ম। তিনি গল্প, উপন্যাসও লিখেছেন। অমৃতপথযাত্রী তাঁর গুরুত্বপূর্ণ একটি উপন্যাস।
হাসান ফেরদৌসের প্রশ্নের উত্তরে মনজুর আহমদ বলেন, আমি যত জোর দিয়ে নিজেকে একজন সাংবাদিক বলতে পারি, তত জোর দিয়ে সাহিত্যিক বলতে পারি না। যে নিষ্ঠা আমার সাংবাদিকতায় আছে সে নিষ্ঠা সাহিত্য সাধনায় নেই। আমার পেশার পাশাপাশি যখন কোন ঘটনা প্রবাহ আমাকে স্পর্শ করেছে তখন আমি কবিতা, গল্প, উপন্যাস লিখেছি। এটাকে ঠিক সাহিত্য সাধনা বলা যায় না। তবে কিছু লেখা লিখে আমি অত্যন্ত আনন্দ পেয়েছি। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক তাঁর লেখা পাঁচটি গ্রন্থ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গ্রন্থগুলোর বিষয়বস্তু একটি থেকে অন্যটি সম্পূর্ণ আলাদা। মুক্তিযুদ্ধের পর অনেক মুক্তিযোদ্ধা ও বিশিষ্টজনদের সাক্ষাৎকার নিয়েছিলাম, সেগুলোর সংকলন প্রথম বইটা। শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তরে মনজুর আহমদ বলেন, আত্মজীবনী লেখার কথা ভাবিনি, তবে আমি যে সময়টা দেখেছি সে সময়টা তুলে ধরা দায়িত্ব মনে করি। আমি প্রিয়-অপ্রিয়র মধ্যে বাস করি না। আমি হাড়ে মজ্জায় একজন সাংবাদিক। আমি সাদাকে সাদা বলি, কালোকে কালো বলি।
মনজুর আহমদের সঙ্গে আলাপচারিতার সমাপ্তিতে আরেক বর্ষীয়ান সাংবাদিক সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহ বলেন, মনজুর আহমদের সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে। মনজুর আহমদ এবং আমি বাংলাদেশের রাজনীতির ক্ষেত্রে দুই ধরনের আদর্শে বিশ্বাস করি। মতের বিভেদ থাকা সত্ত্বেও একজন যে আরেকজনের সঙ্গে সুন্দর স্বাভাবিক সম্পর্ক বজায় রাখতে পারে, আমাদের বন্ধুত্ব সেটি প্রমাণ করে।
আসরের নিয়মিত আয়োজনের দ্বিতীয় পর্বে অংশ নেন লেখক ফেরদৌস সাজেদীন, কবি তমিজউদ্দিন লোদী, কবি কাজী আতীক, লেখক নীরা কাদরী, সাংবাদিক নিনি ওয়াহেদ, লেখক আদনান সৈয়দ, মুক্তিযোদ্ধা ও লেখক মহসিন আলী ও লেখক আবু সায়ীদ রতন।
আসরে আবৃত্তি করেন, নজরুল কবীর, ক্লারা রোজারিও, আনিস সিদ্দিকী ও মুনমুন সাহা। স্বরচিত পাঠ করেন, শামস আল মমীন, হোসাইন কবীর, এবিএম সালেহ উদ্দিন, স্বপন বিশ্বাস, তাহমিনা খান, বেনজির শিকদার, রিমি রুম্মান, জেবুন্নেসা জ্যোৎস্না, ফারহানা হোসেন, স্বপ্ন কুমার, এলি বড়ুয়া, আনোয়ার সেলিম, আলম সিদ্দিকী, রওশন সরকার, সুমা রোজারিও, সবিতা দাস, সুলতানা ফেরদৌসী, রুপা খানম, সীমু আফরোজা, রাজিনা চৌধুরী, নানজীব ইমাম চৌধুরী, পলি শাহীনা প্রমুখ।

 
 
   

আসরে উপস্থিত ছিলেন আবেদীন কাদের, আকবর হায়দার কিরন, তাহমিনা শহীদ, রাহাত কাজী শিউলি, নাসির শিকদার, নীহার সিদ্দিকী, সেলিম আফসারী, লুৎফা শাহানা, রওশন হাসান, ফারজিন রাকিবা, শহীদ উদ্দিন, শাহনাজ হায়াত, এম. এ সাদেক, সৈয়দ মোহাম্মদ আলী, পারভীন পিয়া, নুসরাত কবীর, মিয়া এম আসকির, ইমাম চৌধুরী, স্বজন বণিক, মোজাম্মেল হক প্রমুখ।
অনুষ্ঠান শেষে মনজুর আহমদের জন্মদিন উপলক্ষে আকবর হায়দার কিরনের সৌজন্যে সকলের উপস্থিতিতে কেক কাটা হয়।