ইসরাইলের হামলায় প্রাণ গেল আরও ১৬৫ জনের
নিউজ ডেস্ক
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ০২:১৩ পিএম, ২৯ জানুয়ারি ২০২৪ সোমবার
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের নির্বিচার হামলায় ২৪ ঘণ্টায় আরও অন্তত ১৬৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। একই সময়ে আহত হয়েছেন আরও ২৯০ জন ফিলিস্তিনি। এদিকে হামাস ও দখলদার ইসরাইলের মধ্যে নতুন অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি বিনিময়ের চুক্তির লক্ষ্যে ফ্রান্স গেছেন মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ প্রধান উইলিয়াম বার্নস। খবর রয়টার্স, এপি, আল-জাজিরার।
গাজার হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় রোববার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় গাজা উপত্যকার বিভিন্ন পরিবারে ১৯টি গণহত্যা চালিয়েছে। এতে ১৬৫ ফিলিস্তিনি নিহত ও ২৯০ জন আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে অনেকেই এখনো ধ্বংস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন বলে মন্ত্রণালয় উল্লেখ করেছে। উদ্ধার কর্মীরা এসব হতভাগ্য ফিলিস্তিনিদের উদ্ধার করতে সক্ষম হচ্ছেন না।
এদিকে ইসরাইলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, হুমকি নির্মূল করতে হেজবুল্লাহর বিভিন্ন স্থাপনাতে হামলা চালাচ্ছে বিমান বাহিনী। সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হ্যাগারি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, লেবাননের জিবকুইন এবং হৌলা শহরের হেজবুল্লাহর দুটি আস্থানা গুঁড়িয়ে দিতে ইসরাইলের বিমান বাহিনী তৎপরতা চালাচ্ছে। সেই সঙ্গে তিনি আরও জানিয়েছেন, লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে বেশ কয়েক এলাকা থেকে হুমকি নির্মূল করতে ইসরাইলের পদাতিক বাহিনীও তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে।
এ নিয়ে ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ২৬ হাজার ৪২২ ফিলিস্তিনি নিহত ও আরও ৬৫ হাজার ৮৭ জন আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ১১ হাজারের বেশি শিশু ও সাড়ে ৭ হাজার নারী রয়েছেন।
হামাস ও দখলদার ইসরাইলের মধ্যে নতুন অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি বিনিময় চুক্তি করতে ফ্রান্সে গেছেন যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ প্রধান উইলিয়াম বার্নস। ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে এক বৈঠকে তিনি ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের প্রধান ডেভিড বার্নেয়া, কাতারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আব্দুল রহমান আল থানি এবং মিসরের গোয়েন্দা প্রধান আব্বাস কামেলের সঙ্গে জিম্মিদের বিনিময় চুক্তি নিয়ে আলোচনা করবেন।
গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের হোয়াইট হাউজের জ্যেষ্ঠ পরামর্শক ব্রেট ম্যাকগুর্ক মধ্যপ্রাচ্য সফর করেছেন। কিন্তু তিনি দুই পক্ষকে কোনো চুক্তিতে রাজি করাতে পারেননি। তবে যদি সিআইএ প্রধান উইলিয়াম বার্নস এক্ষেত্রে সফল হন, তাহলে ব্রেট ম্যাকগুর্ককে আবারও মধ্যপ্রাচ্যে পাঠাবেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। তিনি চুক্তিটি চূড়ান্ত করবেন।
তবে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এখনো বলছেন, গাজা উপত্যকায় সম্পূর্ণ বিজয় না পাওয়া ও হামাসকে নির্মূল না করা পর্যন্ত তাদের হামলা চলবে। যুদ্ধের প্রায় চার মাস পার হয়ে গেলেও এখনো সেই লক্ষ্য অর্জন করতে পারেনি ইসরাইলি সেনারা। হামাসের হাতে এখনো ১৩০ জনেরও বেশি ইসরাইলি জিম্মি রয়েছেন। তাদের জীবিত ফিরিয়ে আনতে হামাসের সঙ্গে চুক্তি করতে নেতানিয়াহুর ওপর চাপ বাড়ছে।
এদিকে হোয়াইট হাউজের এক সিনিয়র কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এপি আরও জানিয়েছে, প্রস্তাবিত চুক্তি সরাসরি যুদ্ধ বন্ধ করবে না। তবে মার্কিন কর্মকর্তারা আশা নিয়ে বলেছেন, চুক্তিটি ইসরাইল-হামাস সংঘাত সমাধানের ভিত্তি স্থাপন করতে পারে।