মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১   ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মিয়ানমারে বিদ্রোহীদের হামলায় ৬২ সেনা নিহত, আরও ঘাঁটি দখল

নিউজ ডেস্ক

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ০৫:২৫ পিএম, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ সোমবার

মিয়ানমারে সামরিক বাহিনীর আরও বেশ কয়েকটি ঘাঁটি দখল করেছে বিদ্রোহীরা। এছাড়া গত তিন দিনে বিদ্রোহীদের হাতে প্রাণ হারিয়েছে দেশটির অন্তত ৬২ জন সেনা। সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ইরাবতী।

ইরাবতীর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারজুড়ে হামলা জোরদার করেছে দেশটির জাতিগত বিদ্রোহীরা। এতে গত তিনদিনে পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেস (পিডিএফ) ও এথনিক আর্মড অর্গানাইজেশনসের (ইএও) হামলায় ৬২ জন সেনা নিহত হয়েছে। এছাড়া বেশকিছু সামরিক ঘাঁটিও দখল করেছে বিদ্রোহীরা।

দেশটির সাগায়িং, ম্যাগওয়ে ও মান্দালা অঞ্চলসহ কাচিন ও কারেন প্রদেশে এসব ঘাঁটি দখলের পাশাপাশি সেনা সদস্যদের হত্যা করা হয় বলে জানা গেছে। বেশকিছু হামলার কথা পিডিএফ ও ইএও’র কাছে থেকে নিশ্চিত হয়েছে ইরাবতী। তবে অনেক সেনার হতাহতের খবর যাচাই করা সম্ভব হয়নি।

জানা গেছে, সবচেয়ে বেশি সেনাসদস্য নিহত হয়েছেন মান্দালয় জেলার সান পিয়া ও কারেন প্রদেশের থান্ডুয়াঙ্গি শহরে। পিডিএফ জানিয়েছে, এ দুই এলাকায় জান্তা-বিদ্রোহী সংঘাতে এখন পর্যন্ত অন্তত ৪০ সেনা নিহত হয়েছেন। এছাড়া কারেন প্রদেশের একটি রত্নপাথরের পাথরের খনিও বর্তমানে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর হাতে চলে গেছে।

গত ৫ দশকেরও বেশি সময় ধরে মিয়ানমারে সামরিক বাহিনীর সঙ্গে দ্বন্দ্ব-সংঘাত চলছে দেশটির বিভিন্ন সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর। তবে ২০২১ সালে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সামরিক বাহিনীর রাষ্ট্র ক্ষমতা দখলের পর এই সংঘাত বেড়ে যায়।

ওই বছরের ১ ফেব্রুয়ারি সেনাপ্রধান মিন অং হ্লেইংয়ের নেতৃত্বে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সুচিকে হটিয়ে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। তার পরেই মূলত ফুঁসে উঠেছিল মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী জনগণ।

গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার দাবিতে দেশজুড়ে আন্দোলন শুরু করে সাধারণ জনগণ। কিন্তু মিয়ানমার পুলিশ ও নিরাপত্তাবাহিনী বিক্ষোভ দমনে আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার শুরু করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০২২ সালে গণতন্ত্রপন্থীদের একাংশ জান্তাবিরোধী বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোতে যোগ দেওয়া শুরু করে।

গত বছরের ২৭ অক্টোবর থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্সের ‘অপারেশন ১০২৭’ শুরুর পর থেকে জাতিগত জোট পিডিএফ ও ইএও উত্তরাঞ্চলীয় শান রাজ্যের বেশিরভাগ অংশ দখল করে নিয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে প্রায় ২০টি শহর ও চীনের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যপথ। মিয়ানমারের সামরিক শাসকের সঙ্গে চীনের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হওয়ার পর জোটটি জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে আক্রমণ বন্ধ রাখে।

গত ১৩ নভেম্বর রাখাইনে অপারেশন-১০২৭ শুরু করার পর থেকে আরাকান আর্মি ১৬০টিরও বেশি জান্তা ঘাঁটি দখল করেছে, যার মধ্যে সিত্তওয়ের কাছে পাউকতাও শহর ও চিন রাজ্যের পালেতওয়া শহরও রয়েছে।