সোশ্যাল মিডিয়ার বিরুদ্ধে সিটির মামলা
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ০৪:০৪ এএম, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ শনিবার
নিউইয়র্ক সিটি মেয়র এরিক এডামস ফেসবুক, টিকটক ও ইউটিউবসহ পাঁচটি সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফরমের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। অন্য দুটি প্লাাটফরম হচ্ছে ¯œ্যাপচ্যাট ও ইন্সটাগ্রাম। এই মামলায় মেয়রের সাথে স্বাক্ষর করেছেন নিউইয়র্ক সিটি করপোরেশন কাউন্সেল সিলভিয়া ও. হিন্ডস, ডিপার্টমেন্ট অব মেন্টাল হেলথ এন্ড মেন্টাল হাইজিন কমিশনার ড. অসিন ভাসান, হেলথ এন্ড হসপিটাল করপোরেশনের প্রেসিডেন্ট ড. মিশেল কাটজ ও ডিপার্টমেন্ট অব এডুকেশনের চ্যান্সেলর ডেভিড সি. ব্যাংক।
গত বুধবার ১৪ ফেব্রুয়ারি বিকেলে মেয়রের অফিস থেকে এ মামলা দায়েরের ঘোষণা দেয়া হয়। ক্যালিফোর্নিয়ার সুপিরিয়র কোর্টে এই মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে দায়ের করা অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, কোম্পানীগুলো ইচ্ছাকৃতভাবে উঠতি বয়সের ছেলেমেয়েদের আকৃষ্ট করার জন্য প্লাটফরমের ডিজাইন করে। উদ্দেশ্যমূলকভাবে অনেক বিষয়াদি ম্যানিপুলেট করে তাদেরকে আসক্ত করে ফেলে। এ ব্যাপারে সিটি পরিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে, সোশ্যাল মিডিয়ার প্লাটফরমগুলোর নেতিবাচক প্রভাবের কারণে নিউইয়র্ক সিটির শতকরা ৩৮ ভাগ শিক্ষার্থী মানসিক সমস্যা ও হতাশায় ভুগছে। তারা পিছিয়ে পড়েছে শিক্ষা ও দৈনন্দিন কাজকর্মে। এদের বড় একটি অংশ ব্ল্যাক ও ল্যাটিনো কমিউনিটির। এই জরিপে দেখা গেছে, ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা ৭০ ভাগ বেশি আসক্ত সোশ্যাল মিডিয়ার প্রতি। এদিকে ডিওএইচএমএইচ কমিশনার ড. অসিন ভাসান ছেলেমেয়েদের বয়স ১৪ না হওয়া পর্যন্ত সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রস্তাব করেছেন।
মামলার অভিযোগে আরো বলা হয়, সোশাল প্লাটফরমগুলো দেশব্যাপী যুব সম্প্রদায়ের মানসিক স্বাস্থ্য সংকটের জন্য দায়ী। তারা লাখ লাখ ছেলেমেয়ের মানসিক অসুস্থতার কারণ হয়ে উঠেছে। এভাবে সোশ্যাল মিডিয়ার অবাধ ও দায়িত্বহীন আচরণে যুব সম্প্রদায় ধ্বংসের পথে এগুচ্ছে।
পরবর্তী জেনারেশনের কথা চিন্তা করে সিটি প্লাটফরম গুলোকে জবাবদিহিতার আওতায় আনার জন্য মামলার পথ বেছে নেয়া হয়েছে মেয়র অফিস থেকে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সারা দেশের শত শত স্কুল থেকে এ ব্যাপারে যেসব মামলা দায়েরের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে নিউইয়র্ক সিটি তাদের সাথেও সংহতি প্রকাশ করছে। টেক জায়ান্ট প্লাটফরমের আচরণে পরিবর্তন আনতে শক্তি প্রয়োগ করতে হবে। নিউইয়র্ক সিটিকে প্রতি বছর ১০০ মিলিয়ন ডলারের উপর অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে ইয়থ মেন্টাল হেলথ প্রোগ্রামে। এই বিপুল ব্যয়ের জন্য টেক জায়ান্টরা পরোক্ষভাবে দায়ী বলে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে মন্তব্য করা হয়েছে।
মেয়র এরিক এডামস বলেছেন, অনলাইনে ক্ষতিকারক বিষয়বস্তুর বিরতিহীন স্ট্রিমিং যুব সম্প্রদায়কে ধ্বংস করছে। যা কিনা টোব্যাকো ও ফায়ার আর্মসের অপব্যবহারের সমতুল্য। এটি একটি ভয়ংকর নেশায় পরিণত হয়েছে। আমরা সিটির মিলিয়ন মিলিয়ন জনগোষ্ঠীর পক্ষে এ ব্যাপারে শক্তিশালী অবস্থান গ্রহণ করছি। তাদেরকে জনস্বাস্থ্য বিপর্যয়ে জন্য জবাবদিহিতার আওতায় আনা হবে। এই মামলা আমাদের যুব সম্প্রদায়কে রক্ষার জন্যই।
নিউইয়র্ক সিটি ডিপার্টমেন্ট অব মেন্টাল হেলথ এন্ড মেন্টাল হাইজিন (ডিওএইচএমএইচ) কমিশনার ড. অসিন ভাসান বলেছেন, সোশ্যাল মিডিয়া ডিজিটাল দুনিয়ায় একটি বিষফোঁড়া। এটি লিড পয়জন, বায়ু দূষণ ও নিকোটিনের মতোই শরীর ও মনের জন্য ক্ষতিকর। এই বিপদ থেকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষা করতে রেগুলেশন তৈরি জরুরী হয়ে পড়েছে।