অতি-প্রক্রিয়াজাত খাবারে হৃদরোগ-ডায়াবেটিসসহ ৩২ স্বাস্থ্যঝুঁকি
নিউজ ডেস্ক
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ০৯:৪৬ পিএম, ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ বৃহস্পতিবার
যারা অতি-প্রক্রিয়াজাত খাবারের (আল্ট্রা প্রোসেসড ফুড-ইউপিএফ) ওপর নির্ভরশীল—তাদের হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, ক্যানসার, মানসিক স্বাস্থ্যসমস্যাসহ অন্তত ৩২ ধরনের রোগ ও শারীরিক জটিলতায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় জানা গেছে এই তথ্য।
যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স ব্লুমবার্গ স্কুল অব পাবলিক হেলথ, ইউনিভার্সিটি অব সিডনি এবং ফ্রান্সের সোরবোন ইউনিভার্সিটিসহ বিশ্বের বেশ কয়েকটি নেতৃস্থানীয় প্রতিষ্ঠানের বিশেষজ্ঞরা এই গবেষণায় জড়িত ছিলেন। আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান সাময়িকী বিএমজিতে সম্প্রতি তাদের গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশিতও হয়েছে।
সেই প্রবন্ধে বলা হয়েছে, যারা নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণে চিনিযুক্ত সিরিয়েল, প্রোটিন বার, কোমল পানীয়, ফাস্টফুড, রেডি মিল প্রভৃতি গ্রহণ করেন— তাদের হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঝুঁকি ৫০ শতাংশ বেড়ে যায়। এছাড়া টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায় ১২ শতাংশ এবং মানসিক অবসাদ-উদ্বেগ জাতীয় রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ৪৮ থেকে ৫৩ শতাংশ।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অন্যান্য অনেক উন্নত দেশে বর্তমানে অতি প্রক্রিয়াজাত খাবারের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। বিশেষ করে যুক্তরাজ্য-যুক্তরাষ্ট্রের তরুণ প্রজন্ম ও অপেক্ষাকৃত দরিদ্র জনগোষ্ঠীর অন্তত ৮০ শতাংশ এ জাতীয় খাবারের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল।
গবেষণায় যুক্তরাজ্য-যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বয়সের ৯৯ লাখ মানুষের শারীরিক-মানসিক স্বাস্থ্য, খাদ্যাভ্যাস সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
অতি প্রক্রিয়াজাত খাবার ঘুম সংক্রান্ত সমস্যাও উস্কে দেয়। ইউপিএফে নির্ভরশীলদের নিদ্রাহীনতায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অন্যান্যদের তুলনায় ৪০ থেকে ৬০ শতাংশ বেশি। এছাড়া হাঁপানি, গ্যাস্ট্রিক জটিলতা যে কোনো শারীরিক সমস্যায় মৃত্যুর ঝুঁকি ২১ শতাংশ বাড়িয়ে দেয় ইউপিএফ।
বিএমজে-তে প্রকাশিত প্রতিবেদনের উপসংহারে বলা হয়েছে, সামগ্রিকভাবে অকাল মৃত্যু, ক্যানসার ও মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা, শ্বাসযন্ত্র, কার্ডিওভাসকুলার, গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল এবং বিপাকীয় স্বাস্থ্য সমস্যাসহ মানব স্বাস্থ্যের ৩২টি ক্ষতিকারক প্রভাবের সঙ্গে আল্ট্রা-প্রসেসড ফুডের সরাসরি সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে।
গবেষকরা জানিয়েছেন, ইউপিএফ বা অতি-প্রক্রিয়াজাত খাবারগুলোতে সাধারণত উচ্চমাত্রার ফ্যাট, চিনি, কন্টেইন ক্যামিকেল, কৃত্রিম রং, সুইটেনার ও প্রিজারভেটিভ জাতীয় উপাদান থাকে। নিয়মিত যারা অতিপ্রক্রিয়াজাত খাবার গ্রহণ করেন বা এ জাতীয় খাবারের ওপর নির্ভরশীল, তাদের প্রায় সবাই শারীরিক স্থুলতায় (ওবেসিটি) ভোগেন। আর এই স্থুলতা টাইপ ২ ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, যকৃৎ অকার্যকর হওয়াসহ বেশ কিছু শারীরিক জটিলতার জন্য প্রাথমিকভাবে দায়ী।