শামীম ওসমানকে মন্ত্রী হিসেবে দেখতে চান না.গঞ্জবাসী
নিজস্ব প্রতিবেদক
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০৫:০০ পিএম, ৩ জানুয়ারি ২০১৯ বৃহস্পতিবার
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। তাই টানা তৃতীয়বারের মতো এবং স্বাধীনতার পর চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছে দলটি। এখন উৎসুক সবার মনে ঘুরপাক খাচ্ছে নতুন মন্ত্রিসভায় কারা স্থান পাচ্ছেন, পুরনোদের মধ্যে কারা থাকছেন, আবার নতুন করেই বা কারা আসছেন, কে পাচ্ছেন কোন দফতর- এমন নানা প্রশ্ন।
রাজনীতিতেত পরীক্ষিত, ক্লিন, তারুণ্যদীপ্ত, ডায়মানিক এবং যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ নেই তারাই মূলত নতুন মন্ত্রীসভায় স্থান পেতে যাচ্ছেন। আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
সূত্রগুলো বলছে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বনের পাশাপাশি জঙ্গি, মাদক এবং ব্যাংকিং সেক্টরে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার মধ্যদিয়ে কিংবদন্তি রাষ্ট্রনায়ক হয়ে থাকতে চান জাতির জনকের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর সেই আঙ্গিকেই গঠন করতে চান নতুন মন্ত্রীসভা। সেক্ষেত্রে সিনিয়র কয়েকজন ছাড়া বাদ পড়তে পারেন বর্তমান মন্ত্রীসভার অধিকাংশ সদস্য।
সূত্র মতে, জাতীয় পার্টি যদি সরকারের অংশীদার হয়, সেক্ষেত্রে দলটির ২ থেকে ৩ জন এবং মহাজোটের শরীক অন্যান্য ছোট দলগুলোর ৩ থেকে ৪ জন মন্ত্রীসভায় ঠাঁই পেতে পারেন। সেক্ষেত্রে বিকল্পধারার যুগ্ম মহাসচিব তারুণ্যদীপ্ত মেধাবী রাজনীতিক মাহী বি চৌধুরীর মন্ত্রীসভায় থাকার সম্ভাবনা উজ্জ্বল। সবমিলিয়ে একটি মেধাবী, ক্লিন, এনার্জেটিক মন্ত্রীসভা গঠন করতে ইতোমধ্যেই প্রাইমারি খসড়া তৈরি করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
এদিকে, চমকপূর্ণ মন্ত্রীসভায় নারায়ণগঞ্জ থেকে কেউ এবার স্থান পাচ্ছেন তা নিয়ে চলছে নানা আলোচনা, সমীকরণ। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান এ কে এম শামীম ওসমানের নতুন মন্ত্রীসভায় থাকার সম্ভাবনা বেশি। ২০১৮ সালের নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন থেকে নৌকা প্রতীত নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছেন। তার এ বিজয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত, উদ্দীপ্ত।
অর্থনৈতিক ও রাজনীতিক দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নারায়ণগঞ্জ। রাজনৈতিক দিক থেকে এ জেলার গুরুত্ব অপরিসীম বলে মনে করেন এ এলাকার রাজনীতিবিদরাও। কেননা এ জেলার চাষাড়ায় খান সাহেব ওসমান আলীর বাসভবন বাইতুল আমানে জন্ম হয়েছিল আওয়ামী লীগের।
ঢাকার কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচিতে এ জেলার লোকজন যোগদান না করলে রাজনৈতিক কর্মসূচিগুলোতে মানুষের অভাববোধ করে থাকেন রাজনৈতিক দলগুলোর কেন্দ্রীয় নেতারা। এ জেলার মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আসন হল নারায়ণগঞ্জ-৪ (সিদ্ধিরগঞ্জ-ফতুল্লা) আসন। কিন্তু এ এলাকার রাজনীতিবিদদের দুঃখ এ আসনে স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত কোনো মন্ত্রী হয়নি।
বিএনপি’র শাসনামলে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের বিএনপি নেতাকর্মীরা বিএনপির সাবকে এমপি গিয়াসউদ্দিনকে মন্ত্রী করার আশাবাদ ব্যক্ত করলেও তাকে মন্ত্রী করা হয়নি। এরপর এ আসনকে ভাগ করে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সাথে সিদ্ধিরগঞ্জকে যুক্ত করা হয়েছিল।
১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনকে পূর্বাবস্থায় তথা সিদ্ধিরগঞ্জ-ফতুল্লার অবস্থায় নেয়া হয়। সে সময় এ আসনে এমপি শামীম ওসমান। ওই যাত্রায় তিনি দ্বিতীয়বার সংসদ সদস্য হয়েছিলেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন। সংসদ সদস্য শামীম ওসমান দেশের জন্য আরও দায়িত্ব পালন করুক তা কামনা করেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা। আর এ দায়িত্বপালনে তারা তিনবারের সংসদ সদস্য শামীম ওসমানকে মন্ত্রী হওয়ার মধ্য দিয়ে দেখতে আগ্রহী।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবুর রহমান এ ব্যাপারে বলেন, নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগের জন্ম। আমরা সিদ্ধিরগঞ্জবাসী বিপুল পরিমাণ ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করলেও আমরা স্বাধীনতার পর এ পর্যন্ত কখনও মন্ত্রী পাইনি। তাই প্রধানমন্ত্রীর কাছে আশাবাদী তিনি বিপুল ভোটে বিজয়ী শামীম ওসমানকে মন্ত্রীত্ব দিয়ে নারায়ণগঞ্জ তথা পুরো দেশের আরও গুরুত্বপূর্ণ কাজ করার সুযোগ দিবেন।
জেলা ছাত্রলীগের সাবেক ক্রীড়া সম্পাদক ও নাসিক-৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আরিফুল হক হাসান জানান, শামীম ওসমান নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে ইতিপূর্বে ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। তিনি দলের জন্য অনেক গোছালো ভূমিকা পালন করেন। তাকে মন্ত্রী করা হলে তিনি দেশের জন্য আরও কল্যাণকর কাজ করবেন বলে আমি মনে করি।