শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১   ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

লক্ষ্মীনারায়ণ কটন মিলে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ বন্ধে স্মারকলিপি

নিজস্ব প্রতিবেদক 

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ০৬:৪১ পিএম, ৩ জানুয়ারি ২০১৯ বৃহস্পতিবার

নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইল ইউনিয়নে অবস্থিত নিউ লক্ষ্মী নারায়ণ কটন মিলে অবৈধভাবে ভবন নির্মাণ বন্ধের দাবিতে জেলা প্রশাসক ও মিলের বর্তমান চেয়ারম্যান রাব্বী মিয়ার কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন আন্দোলনরত শেয়ারহোল্ডাররা। । বুধবার (০২ জানুয়ারি) দুপুরে তার কার্যালয়ে জেলা প্রশাসক রাব্বী মিয়ার হাতে স্মারকলিপি তুলে দেন নিউ লক্ষ্মীনারায়ণ কটন মিল শেয়ারহোল্ডার স্বার্থরক্ষা সংগ্রাম কমিটির আহবায়ক জাহাঙ্গীর আলম। স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন নিউ লক্ষ্মীনারায়ণ কটন মিলের শেয়ারহোল্ডার তামলেক, নিধু কমল দে, বরেন্দ্র চন্দ্র দে, সুশীল ধর প্রমুখ।

স্মারকলিপিতে আন্দোলনরত শেয়ারহোল্ডাররা জানিয়েছেন, ‘লক্ষ্মীনারায়ণ কটন মিল সরকারের নিয়ন্ত্রণে চলাকালীন অবস্থায় লোকসানে পতিত হয়। ফলে ১৯৯৬ সালে মিলটি বন্ধ হয়ে যায়। ২০০০ সালে সরকারি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সাবেক শ্রমিক-কর্মচারীদের মধ্যে জেষ্ঠ্যতার ভিত্তিতে শেয়ার পদ্ধতিতে শ্রমিক- কর্মচারীদের শেয়ারের মালিক করে মিলটি বেসরকারি খাতে হস্তান্তর করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর এটি নিউ লক্ষ্মীনারায়ণ কটন মিল হিসেবে পরিচিত পায়। মিলের পরিচালনা পর্ষদের শেয়ার হোল্ডারদের মালিকানাশূন্য করার পরিকল্পনা থেকে নিট কনসার্ন গ্রুপের চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন মোল্লার সহযোগিতায় মিলটিকে আধুনিকায়নের নামে শেয়ার হোল্ডারদের একজন বিনিয়োগকারী নিয়োগের অনুমতি প্রার্থনা করেন।’

‘কিন্তু বিনিয়োগকারী নিয়োগের কথাটি মুখে থাকলেও শেয়ার হোল্ডারদের মালিকানা কেড়ে নেওয়ার কূটকৌশল অবলম্বন করা হয়। তাদের কূটকৌশলের ফাঁদে পড়ে অনেক শেয়ারহোল্ডার পুঁজি বিনিয়োগকারীর অনুমতিপত্রে স্বাক্ষর করেন। এক পর্যায়ে অনুমতিপত্রে স্বাক্ষর করা শেয়ারহোল্ডারদের জোরপূর্বক অস্ত্রের মুখে মিলের আবাসিক বাসা থেকে উচ্ছেদ করা হয়। সর্বশেষ ৫১০ জন শেয়ার হোল্ডারের মধ্যে বর্তমানে মিলের ভেতর বসবাসকারী ৫৩ জন শেয়ারহোল্ডার দ্বিমত পোষণ করে অনুমতিপত্রে স্বাক্ষর করা থেকে বিরত থাকেন। এর প্রতিক্রিয়ায় ২০১২ সাল থেকে আজ পর্যন্ত বিভিন্ন মিথ্যা মামলা, অস্ত্রের মহড়া, শাররীক নির্যাতন ও পরিবেশগত নির্যাতনের শিকার হয়ে আসছেন ৫৩ জন শেয়ারহোল্ডার। এই শেয়ারহোল্ডাররা ২০১৪ সালে সুপ্রিম কোর্ট বিভাগের কোম্পানি আদালতে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় সাবেক পরিচালনা পর্ষদকে বাতিল বলে ঘোষণা করে জেলা প্রশাসককে নিউট্রাল চেয়ারম্যান ঘোষাণ এবং তিন মাসের মধ্যে সকল শেয়ারহোল্ডারদের নিয়ে সাধারণ সভা করার আদেশ দেওয়া হয়।’

‘ওই আদেশের বলে ২০১৫ সালে জেলা প্রশাসক সাধারণ সভার আয়োজন করেন। কিন্তু মিলের সাবেক পরিচালনা পরিষদ ও নিট কনসার্ন গ্রুপের চেয়ারম্যানের বাহিনী উক্ত সভা আয়োজনে বাধা প্রদান করে। শেয়ারহোল্ডাররা বার্ষিক সাধারণ সভায় প্রবেশ না করে বাইরেই অবস্থান নেন। পরে জেলা প্রশাসক নিট কনসার্ন গ্রুপের শেয়ার হস্তান্তরের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে তাতে জয়েন্ট স্টক রেজিষ্টারের বৈধতা না পাওয়ায় বার্ষিক সাধারণ সভা স্থগিত করেন।’

স্মারকলিপি প্রদানকারীদের দাবি, এখন সাবেক পরিচালক নিট কনসার্ন গ্রুপের চেয়ারম্যানের ছোট ভাই মনির হোসেন মনা গত ২/৩ দিন যাবত রাতের আধারে পাকা স্থাপনা নির্মাণের সরঞ্জামাদি মিলের ভেতরে প্রবেশ করাচ্ছেন। মিলের উত্তর-পূর্ব কোনায় পাকা স্থাপনা নির্মাণের জন্য ভেকু দিয়ে মাটি খনন কাজ ও পাকা ঢালাইয়ের কাজ চলছে। বিষয়টি উচ্চ আদালতের আদেশের পরিপন্থী হওয়ায় সংক্ষুব্ধ শেয়ারহোল্ডাররা ‘নিউট্রাল চেয়ারম্যান’ জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।