রোববার   ০১ ডিসেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১৬ ১৪৩১   ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শুভ নববর্ষ

বাংলা বর্ষবরণের উৎসব রোববার

বিশেষ প্রতিনিধি

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ০৪:০৫ এএম, ১৩ এপ্রিল ২০২৪ শনিবার

 

দরজায় কড়া নাড়ছে পয়লা বৈশাখ। দুটি রাত পোহালেই নতুন আশার আলো নিয়ে হাজির হবে বাংলা নববর্ষ। বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিবঙ্গ-সহ বাঙালি জাতি-গোষ্ঠী অধ্যুষিত বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই দিনটি আনন্দ ও উল্লাসের সঙ্গে পালিত হয়। ইংরেজি ক্যালেন্ডারের ১৪ এপ্রিল বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন পয়লা বৈশাখ হিসেবে পালিত হয়। বাংলা ১৪৩০ সালের শেষ দিন (৩০ চৈত্র) চৈত্র সংক্রান্তি, এরপর দিন থেকেই শুরু হবে বাংলা নববর্ষ ১৪৩১।

বাংলা সনের প্রবর্তক হিসেবে মোঘল সম্রাট আকবরের নামই বেশি শোনা যায়। তবে অনেকের মতে, বাংলা পঞ্জিকা উদ্ভাবক সপ্তম শতকের রাজা শশাঙ্ক। পরবর্তী কালে সম্রাট আকবর সেটিকে খাজনা ও রাজস্ব আদায়ের উদ্দেশে ব্যবহার করতে শুরু করেন। আকবরের সময় প্রচলিত ক্যালেন্ডারের নাম ছিল তারিখ-এ-এলাহি। ওই ক্যালেন্ডারের মাসগুলি হল, আর্বাদিন, কার্দিন, বিসুয়া, তীর ইত্যাদি। তবে কবে ও কীভাবে এই নাম পালটে বৈশাখ, জৈষ্ঠ্য, আষাঢ়, শ্রাবণ হলÑসে বিষয়ে স্পষ্ট ব্যাখ্যা নেই। মনে করা হয়, বাংলা বারো মাসের নামকরণ করা হয়েছে বিভিন্ন নক্ষত্র থেকে। যেমনÑবিশাখা নক্ষত্র থেকে বৈশাখ, জায়ীস্থা থেকে জৈষ্ঠ্য, শার থেকে আষাঢ়, শ্রাবণী থেকে শ্রাবণ।

ভারতবর্ষে মোঘল শাসনকালে হিজরি পঞ্জিকা প্রচলিত ছিল। এই পঞ্জিকা চাঁদের গতিপ্রকৃতির ওপর নির্ভরশীল। এর ভিত্তিতেই কৃষি পণ্যের খাজনা আদায় করা হত। কিন্তু হিজরি সন চাঁদের ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় কৃষি ফলনের সঙ্গে মিলত না। স্বাভাবিক ভাবেই অসময়ে খাজনা দিতে সমস্যায় পড়তেন কৃষকরা। খাজনা শোধে কৃষকদের যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, সে কারণে বর্ষপঞ্জিতে সংস্কার আনেন সম্রাট আকবর। বিখ্যাত জ্যোতির্বিজ্ঞানী ফতেহ উল্লাহ সিরাজি সম্রাট আকবরের আদেশে সৌর সন ও হিজরি সন এর ভিত্তিতে বাংলা সন তৈরি করেন। ১৫৮৪ খ্রিষ্টাব্দের ১০ মার্চ বা ১১ মার্চ থেকে প্রথম বাংলা সন গণনা করা হয়। তবে আনুষ্ঠানিক ভাবে খাজনা আদায়ে এই গণনা কার্যকর হয়েছিল ১৫৫৬ সালের ৫ নভেম্বর থেকে। পূর্বে ফসল কাটা ও খাজনা আদায়ের জন্য এই বছরের নাম দেওয়া হয়েছিল ফসলি সন। পরে তা বঙ্গাব্দে পরিণত হয়। তখন চৈত্র মাসের শেষ দিনের মধ্যে খাজনা ও শুল্ক দিতে হতো কৃষকদের। এর পর দিন, পয়লা বৈশাখে জমি মালিকরা নিজের এলাকার অধিবাসীদের মিষ্টি খাইয়ে আপ্যায়ন করতেন। বিভিন্ন উৎসব আয়োজিত হত সেই উপলক্ষে।

তবে হিন্দু সৌর পঞ্জিকা অনুযায়ী বহু শতাব্দী আগে থেকেই প্রচলিত রয়েছে বাংলার ১২ মাস। সৌর বছরের প্রথম দিন আসাম, বাংলা, কেরল, মণিপুর, নেপাল, ওড়িশ্যা, পঞ্জাব, তামিলনাড়– ও ত্রিপুরার সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। আসামে এটি পরিচিত বোহাগ বিহু নামে। পাঞ্জাবে পালিত হয় বৈশাখী ও তামিলনাড়–তে পুঠান্ডু হিসেবে। কেরলা ও কর্নাটকে বিশু নামে পালিত হয় নববর্ষ।

এবার পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে নিউইয়র্কে বিভিন্ন সংগঠন বেশকিছু অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। এনআরবি ওয়ার্ল্ড ওয়াইড টাইম স্কয়ারে, বেঙ্গলি ক্লাব জ্যাকসন হাইটসের ডাইভারসিটি প্লাজায়, ডায়াসপোরা ইউএসএ জ্যামাইকায় পারফরমিং আর্টস সেন্টারে, ড্রামা সার্কল উডসাইডের গুলশান টেরেসে এবং শো টাইম মিউজিক জ্যামাইকায় মেরী লুই একাডেমীতে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।