রোববার   ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪   ভাদ্র ২৩ ১৪৩১   ০৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

৫ দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যে এগিয়ে ট্রাম্প

নিউজ ডেস্ক

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ০৪:৪৫ পিএম, ১৪ মে ২০২৪ মঙ্গলবার

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ ‘ব্যাটলগ্রাউন্ড’ অঙ্গরাজ্য বা সুইং স্টেটে (দোদুল্যমান রাজ্য) এগিয়ে রয়েছেন রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। কোনো নির্বাচনের আগে পরিচালিত বিভিন্ন জরিপে যদি দেখা যায় যে কোনো অঙ্গরাজ্যে দুই দলের কেউই সুস্পষ্টভাবে এগিয়ে নেই, তখন সেই অঙ্গরাজ্যকে সুইং স্টেট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। সাম্প্রতিক এক নতুন জরিপে এ চিত্র উঠে এসেছে।

নিউইয়র্ক টাইমস ও সিয়েনা কলেজের জরিপ অনুযায়ী, বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের চেয়ে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা বেশি। এ জরিপের সঙ্গে যুক্ত ছিল ফিলাডেলফিয়া ইনকোয়ারার। এতে দেখা গেছে, বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তরুণ ও অশ্বেতাঙ্গ ভোটারদের সমর্থন হারিয়েছেন। দেশের অর্থনীতি ও গাজা পরিস্থিতি নিয়ে বাইডেনের অবস্থান নিয়ে অনেক ভোটার তাঁর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারেন।

জরিপে দেখা গেছে, বাইডেনের সঙ্গে সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বী নিবন্ধিত ভোটারদের মধ্যে ছয়টির মধ্যে পাঁচটি ব্যাটলগ্রাউন্ড অঙ্গরাজ্যে ট্রাম্প এগিয়ে রয়েছেন। এগুলো হচ্ছে মিশিগান, অ্যারিজোনা, নেভাদা, জর্জিয়া ও পেনসিলভানিয়া। বাইডেন কেবল নিবন্ধিত ভোটারদের মধ্যে উইসকনসিন অঙ্গরাজ্যে এগিয়ে রয়েছেন।

দোদুল্যমান ভোটারদের ভেতর দুজনের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি প্রতিযোগিতার আভাস পাওয়া গেছে। এ ক্ষেত্রেও পাঁচটি অঙ্গরাজ্যে এগিয়ে রয়েছেন ট্রাম্প। বাইডেন এগিয়ে রয়েছেন মিশিগানে। অন্যদিকে উইসকনসিন ও পেনসিলভানিয়ায় সামান্য ব্যবধানে পিছিয়ে রয়েছেন। এর আগে ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাইডেন ছয়টি অঙ্গরাজ্যেই জিতেছিলেন। এবার যদি তিনি পেনসিলভানিয়া, মিশিগান ও উইসকনসিনে জিততে পারেন, তবেই তাঁর জন্য যথেষ্ট।

ট্রাম্প ও বাইডেন ছাড়া অন্য প্রার্থীদের নিয়ে করা জরিপেও একই রকম ফলাফল দেখা গেছে। অন্য প্রার্থী রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়র ৬টি অঙ্গরাজ্যে ১০ শতাংশ করে ভোট পেয়েছেন।

এর আগে গত নভেম্বর মাসে টাইমস ও সিয়েনা কলেজের জরিপে একই রকম ফলাফল পাওয়া গিয়েছিল। এরপর অবশ্য মার্কিন রাজনীতির দৃশ্যপটে অনেক পরিবর্তন এসেছে। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ম্যানহাটানে ফৌজদারি মামলার বিচার শুরু হয়েছে। বাইডেনের প্রচার উপলক্ষে কোটি কোটি ডলার খরচ করা হচ্ছে। এসব ব্যাটলগ্রাউন্ড অঙ্গরাজ্যে ভোটারদের মন জয় করতে সব ধরনের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বাইডেন। তবে এ ধরনের পদক্ষেপে বাইডেনের উন্নতি বা ট্রাম্পের বড় ধরনের ক্ষতির কোনো বিষয় জরিপে উঠে আসেনি। এর পরিবর্তে মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয়, অভিবাসন, গাজায় ইসরায়েলের হামলা ও পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষার বিষয়টি জরিপে বেশি প্রতিফলিত হয়েছে।

গত মার্চে বাইডেনের দেওয়া স্টেট অব ইউনিয়ন ভাষণের পর বাইডেনের জনপ্রিয়তা হঠাৎ বেড়ে যায়। তবে ব্যাটলগ্রাউন্ড ও অন্যান্য অঙ্গরাজ্যে তিনি এখনো ট্রাম্পের পেছনেই ছুটছেন।

জরিপে দেখা গেছে যে মার্কিন নাগরিকদের জীবনে জো বাইডেন বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে পারবেন কি না, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছে। নাগরিকদের মধ্যে এ নিয়ে অসন্তুষ্টি রয়েছে। বাইডেনের শেষ প্রচারের আগে তাঁর দেওয়া প্রতিশ্রুতিমতো সবকিছু স্বাভাবিক হবে, এ আশায় আছেন অনেকে ভোটার। কিন্তু ব্যাটলগ্রাউন্ড অঙ্গরাজ্যের ভোটাররা পরিবর্তনের অপেক্ষায় রয়েছেন। জরিপে অংশ নেওয়া প্রায় ৭০ ভাগ ভোটার বলেছেন যে দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বড় ধরনের পরিবর্তন প্রয়োজন।

বাইডেনের সমর্থকদের মধ্যে মাত্র ১৩ শতাংশ মনে করেন, বাইডেন দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এলে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে পারবেন। অন্যদিকে ট্রাম্পকে যাঁরা অপছন্দ করেন, তাঁরা ট্রাম্প সবকিছু নাড়িয়ে দিতে পারবেন, এমন বিষয় স্বীকার করতে কুণ্ঠা বোধ করেন।

তরুণ, কৃষ্ণাঙ্গ ও হিস্পানিক ভোটারদের মধ্যেও বিশ্বাস জন্মেছে যে জাতির ভাগ্য পরিবর্তনে বাইডেন বড় ধরনের কিছু করতে পারবেন না। এই তিন দলের পক্ষ থেকেই মার্কিন সমাজে বড় ধরনের পরিবর্তনের কথা বলা হয়েছে। দেশটির ১৮ থেকে ২৯ বছর বয়সী হিস্পানিক ভোটারদের মধ্যে ট্রাম্প ও বাইডেনের জনপ্রিয়তা সমান। অবশ্য ২০২০ সালে তাঁদের ৬০ শতাংশ ভোট বাইডেন পেয়েছিলেন। এ ছাড়া ২০ শতাংশের বেশি কৃষ্ণাঙ্গ ভোট পেয়েছিলেন ট্রাম্প।