ওজোন পার্ক
বাংলাদেশিকে বন্দুক ঠেকিয়ে ডাকাতি
আজকাল রিপোর্ট
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ০৪:০৩ এএম, ১৮ মে ২০২৪ শনিবার
বাংলাদেশি অধ্যুষিত ওজোন পার্ক এলাকার এক দুর্ধর্ষ ডাকাতির শিকার হয়েছেন একজন বাংলাদেশি দোকানি। গত ১৩ মে রাত সাড়ে নয়টার দিকে সংঘঠিত এ ঘটনায় বন্দুকের মুখে বাংলাদেশি দোকানি আখলাকুর রহমানকে জিম্মি করে ১০ হাজার ডলারের বেশি নগদ অর্থ, মোবাইল ও ওয়ালেট ছিনিয়ে নেয় ডাকাতরা। এ ঘটনার প্রতিবাদে আজ শুক্রবার ব্যবসায়ী ও কমিউনিটির সদস্যরা এক প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করেছেন।
১০১ এভিনিউতে অবস্থিত পোশাকের দোকান জারা লাইফ স্টাইলে এ ঘটনা ঘটে। দোকানে বিভিন্ন দেশে টাকা পাঠানোর মানি এক্সচেঞ্জ ব্যবসাও রয়েছে। ঘটনার সময় আখলাকুর রহমান দোকানের একাই ছিলেন। তার বুকে বন্দুক ঠেকিয়ে ক্যাশ থেকে সব টাকা নিয়ে তাকে বাথরুমে আটকে রেখে সটকে পড়ে ডাকাতরা। এছাড়া তাকে শারীরিকভাবে আঘাতও করা হয়।
এ ঘটনায় বাংলাদেশি ব্যবসায়ী ও কমিউনিটিতে আতংক ও উঠকণ্ঠা বিরাজ করছে। তাদের অভিযোগ প্রায়ই ওজোন পার্ক এলাকায় ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটানা ঘটছে। কিন্তু কোন প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না। এজন্য অনেকেই ঘটনা প্রকাশও করেন না। বিষয়টি নিয়ে সিটি পুলিশের সক্রিয় পদক্ষেপ চান তারা। এর আগের সপ্তাহেও একই এলাকার অন্য একটি দোকানে ডাকাতির ঘটনা ঘটে।
জারা লাইফ স্টাইলে ঘটনার সময় দোকানে দায়িত্বে থাকা আখলাকুর রহমান আজকালকে জানান, ‘সন্ধ্যা ৯টা ৪০ মিনিটের দিকে এ ঘটনা ঘটে। দোকানে একজন কাস্টমার ছিল, তিনি চলে যাবার পর দোকানে আমি একাই ছিলাম। এমন সময় দুইজন ডাকাত দোকানে আসে। একজন আমার কাছে এসে পিস্তাল বের করে, তাক করে। অন্যজন দোকানের বাইরে পাহারায় ছিল। দোকানের ভিতরের ডাকাত পিস্তল দেখিয়ে ভয় দেখায়। সে আমার বুকে ও মাথায় আঘাত করে ক্যাশে যা আছে তা বের করে দিতে বলে। ক্যাশ থেকে ১০ হাজার টাকার বেশি নিয়ে যায়। এছাড়া আমার আইফোন ১৪ প্রোম্যাক্স এবং ওয়ালেটও ছিনিয়ে নেয়। দোকানের কাস্টমারের টাকা ও দোকান ভাড়া ছিল সবই নিয়ে গেছে। টাকা নেয়ার পর ডাকাত আমাকে পিস্তলের মুখে বাথরুমে আটকে রাখে। কোন ধরনের চিৎকার করতে নিষেধ করে। কিছুক্ষণ পর দোকান থেকে কোন শব্দ না পেয়ে আমি জোরে ধাক্কা ধাক্কি করলে বাথরুমের দরজা খুলে যায়। পরে দোকানে থাকা একটি ইমার্জেন্সি ফোন অন করে মালিককে কল দিই। কল পেয়ে মালিক রাজু আহমেদ পুলিশকে ঘটনাটি জানান। পুলিশ এসে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। পরের দিনও পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। তবে এখনও পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।
জারা লাইফ স্টাইলের মালিক রাজু আহমেদ বলেন, মঙ্গলবারও পুলিশ আসে কিন্তু এ ঘটনার কোন অগ্রগতি নেই বলে জানায়। এমন ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। আমরা এর প্রতিকার চাই। অন্যান্য এলাকায় পুলিশের সিকিউরিটি ক্যাম্প আছে, টহল দল আছে। কিন্তু ওজোন পার্ক এলকায় নাই। তাই আমরাও এই এলাকায় পুলিশের সার্বক্ষণিক টহল টিম চাই।
এদিকে একের পর এক ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটানা নিয়ে এক জরুরি সভা করে সিটিলাইন-ওজোন পার্ক বিজনেস এসোসিয়েশন। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কমিউনিটি অ্যাকটিভিস্ট ও স্থানীয় কমিউনিটির নেতৃবৃন্দও এতে উপস্থিত ছিলেন। সভায় প্রতিবাদ র্যালি ও সমাবেশের আয়োজন করার সিদ্ধান্ত হয়। এসোসিয়েশন নেতারা বলেন, বেশ কিছু দিন ধরেই এই এলকায় অপরাধের ঘটনা ঘটে চলেছে। তাই সময় হয়েছে ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী মিলে এর প্রতিবাদ করা।
লিটল বাংলাদেশ ওয়ে, ১০১ এভিনিউ, ড্রিউ স্ট্রিটে স্থানীয় আল-আমিন মসজিদে আজ শুক্রবার জুমার পর এক প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
জানা গেছে, গত মঙ্গলবার ওজোন পার্কে এক পথচারীকে ধরে ছিনতাইকারীরা তার সবকিছু কেড়ে নেয়। তিনি কাজ থেকে বাসায় ফিরছিলেন। এ সপ্তাহেই ৮০ স্ট্রিটের একটি দোকানে ঢুকেও টাকা কেড়ে নেয় দুর্বৃত্তরা।
বিজনেস এসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ আবদুর নূর বলেন, এমন ধরনরে ঘটনা কখনোই আশা করি না। কিন্তু ঘটছেই। ডাকাতির ঘটনায় মঙ্গলবার আমরা জরুরি বৈঠক করেছি। সেখানে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বিজনেস এসোসিয়শেনের সেক্রেটারি খাইরুল ইসলাম খোকন বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে এই এলাকায় এমন ঘটনা বেড়ে গেছে। ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে এলাকার বাসিন্দা কেউ রেহাই পাচ্ছেন না। এক সপ্তাহেই তিনটি ঘটনা ঘটেছে।