সেদিন মেতে উঠেছিল জ্যাকসন হাইটস
আজকাল রিপোর্ট -
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ০২:০৯ এএম, ১ জুন ২০২৪ শনিবার
‘বাংলাদেশ ডে প্যারেড’ সফলভাবে সম্পন্ন
সেদিন মেতে উঠেছিল বালাদেশি অধ্যূষিত জ্যাকসন হাইটস। নগরীর নানা এলাকা থেকে এসে সমবেত হয়েছিলেন নারী-পুরুষ নির্বিশেষে প্রবাসী বাংলাদেশিরা। দীর্ঘ দিন ধরেই সবাই প্রতীক্ষায় ছিলেন এই দিনটির। এই দিনটিকে নির্ধারণ করা হয়েছিল বাংলাদেশ ডে প্যারেডের জন্য। দিনটি ছিল ২৬ মে রোববার।
এ ছিল বাংলাদেশিদের জন্য এক অভূতপূর্ব ঘটনা। দীর্ঘ আকাঙ্খিত ও বহুল প্রত্যাশিত ‘বাংলাদেশ ডে প্যারেড’ এদিন সাফল্যজনকভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে জ্যাকসন হাইটসের ৩৭ এভিনিউতে ৬৯ স্ট্রীট থেকে ৮২ স্ট্রীট পর্যন্ত। নিউইয়র্কে বাংলাদেশিদের জন্য এ ছিল অনন্য ইতিহাস সৃষ্টিকারী এক মাইল ফলক।
‘ওয়ার্ল্ড হিউম্যান রাইটস ডেভেলপমেন্ট’র উদ্যোগে এবং গোল্ডেন এজ হোম কেয়ারের ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠিত এই বাংলাদেশ ডে প্যারেডের উদ্বোধন করেন সিটি মেয়র এরিক এডামস। তাকে ‘আইকন অব দ্য প্যারেড’ ক্রস ব্যান্ড পরিয়ে দেন গোল্ডেন এজ হোম কেয়ারের প্রেসিডেন্ট শাহনেওয়াজ ও মেয়র অফিসের চিফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসার মীর বাশার। এছাড়া বিপুল করতালির মধ্যে মেয়রকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করেন প্যারেডের আহ্বায়ক শাহনেওয়াজ।
৬৯ স্ট্রীটে অনুষ্ঠিত এই উদ্বোধনী সমাবেশে মেয়র এরিক এডামস তার বক্তব্যে বাংলাদেশিদের সততা-কর্মনিষ্ঠা এবং মেধার প্রশংসা করে বলেন, আমি এই কম্যুনিটির সমর্থন পাওয়ায় নিজেকে ধন্য মনে করছি এবং সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশি আমেরিকানদের কল্যাণে সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার করছি।
প্যারেডের শুরুতেই আহ্বায়ক সপ্তাহিক আজকাল সম্পাদক এবং গোল্ডেন এজ হোম কেয়ারের প্রেসিডেন্ট শাহ নেওয়াজকে গ্র্যান্ড মার্শালের ব্যাজ পরিয়ে দেন শাহ শহীদুল হকসহ অন্য কর্মকর্তারা। এসময় শাহ নেওয়াজ তার স্বাগত বক্তব্যে প্যারেড সফল করার জন্য সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন এবং আগামীতে ভালো কাজের সঙ্গে তার সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন। তিনি বলেন,এই প্যারেডের মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রবাসী বাঙালিরা এক ইতিহাস সৃষ্টি করলো। তাই আমি আমার গ্র্যান্ড মার্শালের এই ‘ব্যাজ’ এখানে উপস্থিত সকলের জন্য উৎসর্গ করলাম, কারণ আজকের আয়োজনের কৃতিত্ব সব আপনাদের। শাহনেওয়াজ তাকে পরিয়ে দেয়া ব্যাজ খুলে ফেলেন।
চিত্রনায়িকা মৌসুমী, প্যারেডের মার্শাল গিয়াস আহমেদ, প্যারেড কমিটির চেয়ারপার্সন শাহ শহিদুল হক সাঈদ, সিটি মেয়রের এশিয়া বিষয়ক উপদেষ্টা ফাহাদ সোলায়মান, ডেমক্র্যাটিক পার্টির ডিস্ট্রিক্ট লিডার অ্যাট লার্জ এ্যাটর্নী মঈন চৌধুরী, প্যারেডের ভিআইপি মার্শাল নুরুল আজিম, অপর ভিআইপি মার্শাল কাজী সাখাওয়াত হোসেন আজম, জালালাবাদ এসোসিয়েশনের একাংশের প্রেসিডেন্ট বদরুল খান, প্রেসিডেন্সিয়াল অ্যান্ড ন্যাশনাল হেলথকেয়ার চ্যাম্পিয়ন আব্দুল কাদের শিশির, স্টেট সিনেটর জেসিকা গঞ্জালেজ, কুইন্স বরোর ডেপুটি প্রেসিডেন্ট ইবনি ইয়ং, প্যারেডের সদস্য সচিব তরিকুল হোসাইন বাদল এবং বাংলাদেশি আমেরিকান পুলিশ এসোসিয়েশনের শীর্ষ কর্মকর্তারা সমাবেশে বক্তব্য দেন।
চিত্রনায়িকা মৌসুমী তার শুভেচ্ছা বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে আমরা একত্রিত হয়েছি প্যারেডের এ সুন্দর আয়োজনে। আমরা বাংলাদেশিরা এখানে আছি এবং কম্যুনিটি হিসেবে আমরা যে কত বড় তা এই ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সবাইকে দেখানো উচিত।
ওয়ার্ল্ড হিউম্যান রাইটস ডেভেলপমেন্ট’র চেয়ারপার্সন শাহ শহিদুল হক সাঈদ বলেন, এই প্যারেডের মধ্য দিয়ে নিউইয়র্কের মাটিতে বাংলাদেশে সংস্কৃতি সমৃদ্ধ হলো।
প্যারেডের মার্শাল জেবিবিএর সভাপতি গিয়াস আহমেদ বলেন, এরিক এডামস নানাবিধ কাজের মধ্যদিয়ে বাংলাদেশিদের হৃদয় জয় করেছেন।
প্যারেড শুরু হবার আগে মূলমঞ্চে দেশের গান পরিবেশন করেন বিন্দু কত্যা এবং শাহ মাহবুব।
জ্যাকসন হাইটসের ব্যস্ততম সড়ক বন্ধ করে ব্যবস্থা করা হয়েছিল এই প্যারেডের। প্যারেডের অগ্রভাগে ছিলেন ঘোড়া সহ সিটি পুলিশের চৌকষ দুই অশ্বারোহী। বিপুল সংখ্যক পুলিশ কবর্মকর্তা প্যারেডে অংশ নেন। নিউইয়র্ক শহরের বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার বাংলাদেশিরা তাদের নিজ নিজ সংগঠনের ব্যানারসহ প্যারেডে অংশ গ্রহণ করেন। বাংলাদেশের পতাকা, ব্যানার, ফেষ্টুনসহ প্যারেডে যারা অংশ নেন তাদেও মধ্যে ছিল নর্থ আমেরিকা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, বহ্নিশিখা সংগীত নিকেতর্ন, বাংলাদেশী আমেরিকান সোসাইটি, বাংলাদেশি আমেরিকান পোষ্টাল ইমপ্লয়িজ এসোসিয়েশন, কুইন্স বাংলাদেশ সোসাইটি, কুষ্টিয়া জেলা সমিতি ইউএসএ, মৌলভীবাজার ডিস্ট্রিক্ট সোসাইটি, যশোর জেলা এসোসিয়েশন, ছাগলনাইয়া ফাউন্ডেশন ইউএসএ, হৃদয়ে নারায়ণগঞ্জ, এষ্টোরিয়া ফ্রেন্ডস সোসাইটি, কুইন্স বাংলাদেশ সোসাইটি, ষ্টেট সিনেট প্রার্থী জেসিকা রামোসের দল, মুক্তিযোদ্ধা ফারুক হোসাইন, মুক্তিযোদ্ধা শওকত রচি, যুক্তরাষ্ট্র জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ বাবর উদ্দিন, সহ-সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা শহীদ কমান্ডার, সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা গোলাম হোসেন, মুক্তিযোদ্ধা ফিরোজ, মুক্তিযোদ্ধা সুবেদার শফিক উল্লাহ, মুক্তিযোদ্ধা হুমায়ুন কবীর, মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ সেলিম, মুক্তিযোদ্ধা আহসান উল্যাহ, মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ, নাসির আলী খান পল, ভিআইপি মার্শাল সঙ্গীতশিল্পী রানো নেওয়াজ, বাংলাদেশ সোসাইটির প্রাক্তন কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ আলী, মহিউদ্দিন দেওয়ান, এলিন রহমান, আবু তালেব চান্দু, আকতার হুসেন প্রমুখ।