শনিবার   ৩০ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১৫ ১৪৩১   ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বেনাপোল থেকে ছেড়ে গেলো ‘মোংলা কমিউটার’ ট্রেন

নিউজ ডেস্ক

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ০২:০৯ পিএম, ১ জুন ২০২৪ শনিবার

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে প্রথমবারের মতো যাত্রা শুরু করলো ‘মোংলা কমিউটার’ ট্রেন। শনিবার (১ জুন) সকাল ১০টার দিকে বেনাপোল থেকে মোংলার উদ্দেশে ছেড়ে গেছে ট্রেনটি। এর মাধ্যমে রেলপথে যুক্ত হলো দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর বেনাপোল ও সমুদ্রবন্দর মোংলা।

বেনাপোল থেকে ছেড়ে আসা ‘বেতনা এক্সপ্রেস’ কমিউটার ট্রেনটি খুলনার মোহাম্মদনগর হয়ে ‘মোংলা কমিউটার’ নামে মোংলা সমুদ্রবন্দরে পৌঁছাবে। এই যাত্রায় বেনাপোল স্থলবন্দর এবং মোংলা সমুদ্রবন্দরকে সংযুক্ত করলো ১৩৮ কিলোমিটার দূরত্বের এ রেলপথ।

গত বছরের ১ নভেম্বর খুলনা-মোংলা পর্যন্ত নতুন রেললাইনের উদ্বোধন করা হয়েছিল। উদ্বোধনের ৭ মাস পর এ রুটে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। ট্রেনটি খুলনা থেকে বেনাপোল চলাচলের সময় ‘বেতনা এক্সপ্রেস’ নাম ঠিক রেখে বেনাপোল-মোংলা রুটে চলাচলের সময় ‘মোংলা কমিউটার’ নাম ধারণ করবে।

এর আগে, ২০০০ সালে বেনাপোল ও খুলনার মধ্যে চালু হয় ‘বেতনা এক্সপ্রেস’ নামে একটি কমিউটার ট্রেন। প্রতিদিন দুবার সকাল-বিকাল ট্রেনটি খুলনা ও বেনাপোলের মধ্যে চলাচল করতো। সম্প্রতি খুলনা থেকে মোংলা পর্যন্ত নতুন রেল যোগাযোগ স্থাপিত হওয়ায় বেতনা এক্সপ্রেসের রুট বর্ধিত করে মোংলা পর্যন্ত চালানোর সিদ্ধান্ত নেয় রেল কর্তৃপক্ষ। এ রুটে ট্রেনের ভাড়া ৮৫ টাকা নির্ধারিত হয়েছে।

‘মোংলা কমিউটার’ ট্রেন চলাচলের প্রথম দিনেই বেনাপোল রেলস্টেশনে কোনও আনুষ্ঠানিকতা না থাকলেও স্টেশনভর্তি যাত্রীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। ট্রেনে ৫৪৯ জনের মধ্যে মাত্র ৩৭ জন যাত্রী যাবে মোংলায়। বাকি ৫১২ জন যাত্রী নাভারণ ও মোহাম্মদনগরের মধ্যবর্তী স্টেশনে নেমে যাবে।

যাত্রী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘বেনাপোল-মোংলা রুটে ট্রেন চলাচলের দাবি দীর্ঘদিনের। আজ বেনাপোল থেকে মোংলা যাচ্ছি, খুবই ভালো লাগছে। বেনাপোল স্থলবন্দরের সঙ্গে মোংলা সমুদ্রবন্দর পর্যন্ত ট্রেন চালু হওয়ায় ব্যবসায়িক গতি বাড়বে। বাড়বে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি।’

বেনাপোল স্টেশনমাস্টার সাইদুজ্জামান জানান, বেতনা এক্সপ্রেস প্রতিদিন দুবেলা খুলনা-বেনাপোল রুটে চলাচল করতো। শনিবার সকালে বেনাপোল থেকে ছেড়ে আসা ট্রেনটি খুলনার মোহাম্মদনগর হয়ে দুপুর সাড়ে ১২টায় মোংলায় যাবে। এরপর মোংলা থেকে দুপুর ১টায় ছেড়ে বিকাল সাড়ে ৪টায় বেনাপোল পৌঁছাবে। সবশেষ বেনাপোল থেকে বিকাল ৫টায় ছেড়ে খুলনায় পৌঁছাবে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায়। মঙ্গলবার ছাড়া সপ্তাহের অন্যান্য দিন এ রুটে একই সময়ে একবার করে ট্রেন চলাচল করবে।

ট্রেনটি বেনাপোল থেকে ছাড়ার পর নাভারণ, ঝিকরগাছা, যশোর জংশন, রূপদিয়া, সিঙ্গিয়া, চেঙ্গুটিয়া, নওয়াপাড়া, বেজেরডাঙ্গা, ফুলতলা, আড়ংঘাটা, মোহাম্মদনগর, কাটাখালি, চুলকাটি বাজার, ভাগা ও দিগরাজ স্টেশনে যাত্রাবিরতির পর মোংলায় পৌঁছাবে। বেনাপোল থেকে মোংলা পর্যন্ত রেল চলাচল শুরু হওয়ায় বেনাপোলবাসী ভীষণ খুশি।

জানা গেছে, খুলনা-মোংলা রেলপথ প্রকল্পটি নেওয়া হয় ২০১০ সালে। এটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পায়। প্রকল্পটি তিনটি ভাগে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এর মধ্যে প্যাকেজ-১ রেললাইন নির্মাণ, প্যাকেজ-২ রূপসা নদীর ওপর রেলসেতু এবং প্যাকেজ-৩ টেলিযোগাযোগ ও সিগন্যালিং সিস্টেম। এসব প্রকল্পের আওতায় মূল লাইনসহ রেলওয়ে ট্র্যাকের দৈর্ঘ্য ৮৬.৮৭ কিলোমিটার। তার মধ্যে ৬৪.৭৫ কিলোমিটার ব্রডগেজ রেলপথ। আর রূপসা নদীর ওপর নির্মাণ করা হয়েছে ৫.১৩ কিলোমিটার রেলসেতু।