জব্দ গাড়িতে ফুটপাত-সড়ক দখল, পথচারীদের ভোগান্তি
নিউজ ডেস্ক
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ০৮:০১ পিএম, ৬ জুন ২০২৪ বৃহস্পতিবার
রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও আদাবরের সীমানা প্রাচীর রিং রোড সড়কের একাংশ ও ফুটপাত দখল করে সারি সারি রাখা হয়েছে আদাবর থানার মামলার আলামত হিসেবে জব্দ করা প্রায় কয়েকশ গাড়ি। জব্দ করা এসব গাড়ি বছরের পর বছর ফুটপাত ও সড়ক দখল করে রাখায় পথচারীদের চলাচলে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। জব্দ করে রাখা গাড়ির পাশে টিনশেড ঘর বানিয়ে সড়ক ও ফুটপাত দখল করে রাখা হয়েছে। সড়কটি থানার সামনে হলেও স্থানীয়দের কাছে এখন বেপরোয়া গাড়ির দুর্ঘটনার শঙ্কায় আতঙ্কের নাম হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ ফুটপাত ও সড়ক দখল হওয়ায় রিং রোডের এ সড়কটির ওপর দিয়ে বাধ্য হয়েই পথচারীদের চলাচল করতে হয়।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, আদাবর থানার ঠিক উল্টা পাশে রিং রোডে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের বহুতল এনএইচ ভবনগুলোর সামনের ফুটপাত ও সড়কের একাংশের ওপর স্তূপ করে রাখা হয়েছে ট্রাক, প্রাইভেটকার, পিকআপ, মোটরসাইকেলসহ কয়েকশ গাড়ি। এসব গাড়ি একেবারে জরাজীর্ণ অবস্থায় অকেজো হয়ে পড়ে আছে। কোন কোন গাড়ি মরিচা ধরে মাটির সঙ্গে মিশে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে সড়ক ও ফুটপাতের ওপর জব্দ করা এসব গাড়ি রাখার ফলে ফুটপাত ব্যবহারের কোনো সুযোগ নেই। তাই সড়কের ওপর দিয়েই বাধ্য হয়ে চলাচল করছে সাধারণ বাসিন্দারা। ফুটপাত ও সড়ক দখল করে গাড়িগুলো যে অংশে রাখা হয়েছে, সেই অংশটি রিং রোডের মোহাম্মদপুর থানার মধ্যে পড়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এ সড়কে দীর্ঘদিন ধরে আদাবর থানার জব্দ করা গাড়ি ফেলে রেখে সড়ক ও ফুটপাত দখল করায় সড়কের ওপর দিয়েই পথচারীদের চলাচল করতে হচ্ছে নিয়মিত। ফুটপাত ব্যবহার করতে না পেরে সড়কের ওপর দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে বেপরোয়া গতির গাড়ি কবলে পড়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়ছেন পথচারীরা।
রিং রোডে বাদশা ফয়সাল ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থী আহনাফ মুনির জানায়, প্রতিদিন স্কুলে আমরা এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করি। ফুটপাত ও সড়ক দখল করে গাড়ি রাখা হয়েছে। গাড়িগুলোর পাশেই টিনশেড ঘর ও নার্সারি দিয়ে পুরো সড়ক ও ফুটপাত দখল করে রেখেছে। আহনাফ মুনিরের মতো শরীফ আবদুল্লাহ, মুসতারিন জাহানসহ প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থী এ সড়ক দিয়ে চলাচলের আতঙ্কের কথা জানিয়েছেন।
শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের এনএইচ বহুতল ভবনের বাসিন্দা আকরাম হুসাইন জানান, এ সড়ক দিয়ে আমার পরিবারের সদস্যরা নিয়মিত ব্যবহার করে। এখানে ফুটপাত ব্যবহার করার মতো অবস্থা নেই। ফুটপাতের পাশাপাশি সড়কের একাংশ দখল করে থানার জব্দ করা গাড়ি রাখা হয়েছে।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন অঞ্চল-৫ এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোতাকাব্বির আহমেদ জানান, আদাবর থানার উল্টাপাশ ও থানার সামনের সড়ক ও ফুটপাত দখল করে জব্দ করে রাখা গাড়ি সরানোর জন্য আমরা কয়েক দফায় থানাকে চিঠি দিয়েছি। কারণ ফুটপাত পথচারীদের চলাচলের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে। সেই ফুটপাত দখল হয়ে গেলে পথচারীরা চলাচল করবে কোন দিক দিয়ে। আমরা তাদের চিঠি দেওয়ার পরও বিষয়টি নিয়ে থানা কর্তৃপক্ষের কোনো মাথা ব্যাথা নেই।
ডিএমপি আদাবর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহবুবুল হক জানান, রাস্তার ওপর রাখা গাড়িগুলো আসলে আমাদের বিভিন্ন মামলার আলামত। মূলত মামলার আলামত হিসেবে জব্দ করা এসব গাড়িগুলো রাখার কোনো জায়গা নেই। তাই বাধ্য হয়েই আমরা সড়কে রেখে জায়গাটাকে মালখানা হিসেবে ব্যবহার করতে হয়। আলাদাভাবে এ গাড়িগুলো পাহাড়া দেওয়ার জন্য একজন পুলিশ দায়িত্ব পালন করে নিয়মিত। আমাদের থানা ভাড়া ভবন থেকে কার্যক্রম পরিচালনা হয়। এ নিয়ে সিটি কর্পোরেশনের আমাদের চিঠি দিয়েছে। আমরা জায়গা সংকটের কারণে এগুলো সরিয়ে অন্য কোথাও নিতে পারছি না।