মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১   ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আজিজের অসত্য বক্তব্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া

আজকাল রিপোর্ট

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ১০:০২ এএম, ৮ জুন ২০২৪ শনিবার

আজকাল-এর বিরুদ্ধে বিষোদ্গারই লক্ষ্য


গত মঙ্গলবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে ‘ইউর ড্রিম হোম কেয়ার’-এর মালিক মোহাম্মদ আজিজের দেয়া বক্তব্য কমিউনিটিতে ব্যাপক বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তার স্ববিরোধী বক্তব্যে ওয়াকেবহাল মহল বিস্ময় ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন এমন একজন বলেছেন, মোহাম্মদ আজিজের এই সংবাদ সম্মেলনের একমাত্র লক্ষ্য ছিল নিউইয়র্কের জনপ্রিয় পত্রিকা সাপ্তাহিক আজকাল-এর বিরুদ্ধে বিষোদগার এবং নিজের অপকর্ম ঢাকতে অসত্য বক্তব্য উপস্থাপন করা। তার বক্তব্যকে চরম তথ্য বিকৃতি এবং  মানহানিকর বলে অভিহিত করেছেন কমিউনিটির সংশ্লিষ্ট মহল। তাদের মতে মোহাম্মদ আজিজের বক্তব্যের কোন বিশ্বাসযোগ্যতা নেই।
উল্লেখ্য, মোহাম্মদ আজিজের ‘ইউর ড্রিম হোম কেয়ার’ প্রতিষ্ঠানটির ওপর আদালতের কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি নিয়ে ‘আজকাল’-এ একটি তথ্যভিত্তিক খবর প্রকাশিত হয়। এই খবরটিই তার গাত্রদাহের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। অথচ সংবাদ সম্মেলনে মোহাম্মদ আজিজ এ খবরের সত্যতা স্বীকার করে নিয়েছেন। তিনি স্পষ্টতই বলেছেন, ‘আমার প্রতিষ্ঠানকে কারণ দর্শনোর  নোটিশ দেয়া হয়েছে। তার নিষ্পত্তিও হয়েছে।’ খবরটির সত্যতা স্বীকার করে নিয়েও কেন তিনি একই সঙ্গে আবার  খবরটিকে মিথ্যা হিসেবে অভিহিত করে আজকাল-এর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন তা কারো বোধগম্য নয়। অভিজ্ঞ মহল একে তার স্ববিরোধিতা বলেই মনে করছেন।
উল্লেখ্য, আজকাল-এ প্রকাশিত খবরটি তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে তৈরি করা। এ সম্পর্কিত ডকুমেন্টও ‘আজকাল’ কর্তৃপক্ষের হাতে রয়েছে। তিনি নিষ্পত্তি হয়ে যাওয়ার যে দাবী করেছেন তার সপক্ষে কোন ডকুমেন্ট সাংবাদিকদের দেখাতে পারেননি। সাংবাদিকদের দাবীর মুখে তিনি বারবারই বলেছেন, ডকুমেন্ট্ পরে দেখাবেন। নিষ্পত্তি হয়ে যাওয়ার কথা তিনি বলেছেন, কিন্তু নিষ্পত্তির বিষয়টি যে পুরোপুরিভাবেই আদালতের এখতিয়ারভুক্ত এ সত্য তো সবারই জানা।
মোহাম্মদ আজিজের বক্তব্যের আরো একটি বিষয় নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। প্রকাশিত খবরটিকে তিনি অপপ্রচার বলছেন। তাই যদি হবে তবে তিনি এ ব্যাপারে আজকাল-এ কোন প্রতিবাদ পাঠাননি কেন? তিনি এ ব্যাপারে আজকালকে উকিলের নোটিশ পাঠিয়েছেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। কিন্তু এ ধরনের কোন নোটিশ আজকাল-এর হস্তগত হয়নি।
মোহাম্মদ আজিজের আরো মিথ্যাচার নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তিনি বলেছেন,  ‘শাহ নেওয়াজ সাহেব মিসবাহ আবদীনকে দিয়ে মামলা করিয়েছেন।’
প্রশ্ন  উঠেছে, একটি পত্রিকা কেন ব্যবসায়ী মিসবাহ আবদীনকে দিয়ে মামলা করাতে যাবে? তাদের হোম কেয়ার প্রতিষ্ঠানে লেনদেনে অসততার কারণে মোহাম্মদ আজিজকে ৭ লাখ ৬০ হাজার ডলার পরিশোধ করতে হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে তিনি স্বীকার করেছেন। তা হলে মামলার বিষয়টি তাদের ব্যবসা কেন্দ্রিক লেনদেন এবং তাদের নিজস্ব বিষয়। ‘আজকাল’ মামলার তথ্য নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছে মাত্র। প্রকাশিত সংবাদটি সত্য বলে মোহাম্মদ আজিজ স্বীকারও করেছেন। বাংলাদেশ সোসাইটি নিয়ে আজকালের সম্পাদক কোথাও কোন কথা বলেননি। তারপরও সংবাদ সম্মেলনে মোহাম্মদ আজিজ মিথ্যাচারের আশ্রয় নিয়ে মিডিয়াকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করায় সংশ্লিষ্ট মহলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
ঘুষ মামলায় অভিযুক্ত আজিজ
ব্রুকলিনের একজন  সিটি কাউন্সিলওম্যানকে ৫ হাজার ডলার ক্যাশ ঘুষ দেবার চেষ্টা করার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছিলেন মোহাম্মদ আজিজ। ম্যানহাটান ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি অফিসের তদন্তে এর প্রমাণ পাওয়া গেছে। ডিপার্টমেন্ট অব হাউজিং প্রিজারভেশন এন্ড ডেভলপমেন্ট থেকে সুবিধা পেতে বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত কন্ট্রাক্টর মোহাম্মদ আজিজ ২০১২ সালের ১১ ডিসেম্বর ব্রুকলিনের একজন কাউন্সিলওম্যানকে এই ঘুষ দিতে যান বলে তদন্তে উল্লেখ করা হয়। আদালতের রেকর্ডে দেখা যায়, তাকে কারাগারে না পাঠালেও ১ হাজার ডলার জরিমানা করা হয়।
ক্রিমিনাল কমপ্লেইন মোতাবেক,  লোয়ার ম্যানহাটনের মেইডেন লেনের সাউথ স্ট্রিট কর্ণারে ২০১১ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে অভিযোগ রেকর্ড করা হয়। তখন রেকর্ডে মোহাম্মদ আজিজের বয়স উল্লেখ করা হয়েছে ৫৫।
সিটির বড় বড় ভবনের কাজ পাবার জন্য ইলেকটেড অফিসিয়ালদের নির্বাচনের সময় ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ ওঠে মোহাম্মদ আজিজের ফার্ম ‘ডিলাইট কনস্ট্রাকশনে’র বিরুদ্ধে। বিভিন্ন রেকর্ডে দেখা যায় ইলেকশন ক্যাম্পেইনের সময় বড় অংকের নগদ অর্থ এই প্রতিষ্ঠান থেকে দেওয়া হয়েছে।
এসব ঘটনা সামনে চলে আসে মোহাম্মদ আজিজ কর্তৃক নিউইয়র্ক সিটি হাউজিং অথরিটির বিরুদ্ধে ১৫ মিলিয়ন ডলারের ক্ষতিপূরণ মামলা দায়ের করার সময়।