বিমানের নিউইয়র্ক ফ্লাইট ফের যুক্তরাষ্ট্রের শর্ত
ঢাকা অফিস
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ০৩:৩৬ এএম, ১৫ জুন ২০২৪ শনিবার
ঢাকা ও নিউইয়র্কের মধ্যে সরাসরি বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট চালু করা নিয়ে আবারও কতিপয় কারিগরি শর্ত দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ফেডারেল এভিয়েশন এডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) অ্যাটাশে ডানিয়েল জ্যাকব ৯ থেকে ১২ জুন বাংলাদেশ সফরকালে এসব শর্ত আরোপ করেন। তিনি বাংলাদেশ সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমানের সঙ্গে বৈঠক করেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গেও তার আলোচনা হয়েছে। বিমানের নিউইয়র্ক ফ্লাইট চালুর লক্ষ্যে জ্যাকব এসব শর্তকে প্রক্রিয়াগত বাধ্যবাধকতা বলে উল্লেখ করেন।
জ্যাকব যেসব প্রক্রিয়ার কথা বলেছেন, সেগুলো হলো, বাংলাদেশের ‘ক্যাটাগরি-১’ সেইফটি রেটিং অর্জন করতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের ওপর দিয়ে বিমান চলাচলের জন্যে এটার প্রয়োজন। ইন্টারন্যাশনাল এভিয়েশন সেইফটি অ্যাসেসমেন্ট (আইএএসএ) এই ক্যাটাগরির রেটিং নির্ধারণ করে থাকে। ক্যাটাগরি-১ অর্জনের মানে হলো, ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশনের (আইকাও) স্ট্যান্ডার্ড অর্জন করা।
দ্বিতীয়ত, ক্যাটাগরি-১ রেটিং দেবার জন্যে সিভিল এভিয়েশন অথরিটির পক্ষ থেকে একটি অনুরোধ যুক্তরাষ্ট্রের ইন্টারন্যাশনাল এভিয়েশন সেইফটি অ্যাসেসমেন্ট বরাবর কারতে হবে। বাংলাদেশের তরফে এই অনুরোধ এখনও করা হয়নি।
তৃতীয়ত, বাংলাদেশ যদি ক্যাটাগরি-১ রেটিং অর্জন করে তবে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রান্সপোর্টেশন সিকিউরিটি এডমিনিস্ট্রেশন (টিএসএ) একটি পৃথক অ্যাসেসমেন্ট করবে। টিএসএ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং বিমান এয়ারলাইন্স পরিদর্শন করবে। তারা এটা জানার চেষ্টা করবে যে, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনার জন্য যোগ্যতা অর্জিত হয়েছে কিনা।
ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস বলছে, বিগত কয়েক বছর যাবত যুক্তরাষ্ট্রের এফএএ এবং টিএসএ বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ এবং বিমান এয়ারলাইন্সকে সেইফটি ও সিকিউরিটি স্ট্যান্ডার্ড অর্জনের জন্যে বিনামূল্যে কারিগরি সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের সরকার হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরকে বিনামূল্যে তল্লাশি সরঞ্জাম দিয়েছে। বাংলাদেশী এভিয়েশন কর্মকর্তাদের বিনামূল্যে প্রশিক্ষণও দিয়েছে। এসবের উদ্দেশ্য হলো, বাংলাদেশ যাতে এভিয়েশনের ব্যাপারে সর্বোচ্চ নিরাপত্তার মান অর্জন করতে পারে।
বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রী ফারুক খান সম্প্রতি বলেছেন, নিউইয়র্ক ফ্লাইট চলার জন্যে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিভিন্ন সময়ে শর্ত দেয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ এসব শর্ত পূরণ করার পর নতুন নতুন শর্ত দেয়া হচ্ছে। অপরদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের এয়ারক্রাফট মেকার বোয়িং কোম্পানীর কয়েকটি বোয়িং ম্যাক্স দূর্ঘটনায় নিখোঁজ হওয়ার পর বোয়িংয়ের চাহিদা কমে গেছে। ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বোয়িং বিক্রির জন্যে বাংলাদেশের কাছে তদবির করেছেন। তবে বাংলাদেশ ইউরোপীয় কোম্পানী এয়ারবাস থেকে উড়োজাহাজ কেনার ব্যাপারে আগ্রহ দেখাচ্ছে। নিউইয়র্ক ফ্লাইট চালু করতে রাজি হলে বিমানের কিছু উড়োজাহাজ বোয়িং থেকেও কেনা হতে পারে। ঢাকার কর্মকর্তারা বলছেন, প্রায় সমান দূরত্বে ঢাকা-টরেন্টো সরাসরি ফ্লাইট সুন্দরভাবে পরিচালনা করছে বিমান। ফলে ঢাকা-নিউইয়র্ক ফ্লাইট পরিচালনার সক্ষমতাও বিমানের রয়েছে।