মঙ্গলবার   ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪   আশ্বিন ১ ১৪৩১   ১৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

হজে যেতে পারেননি বহু প্রবাসী

আজকাল রিপোর্ট -

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ০২:১১ এএম, ২২ জুন ২০২৪ শনিবার

ট্রাভেল এজেন্টদের খামখেয়ালি কারণে বিড়ম্বনা

 
ট্রাভেল এজেন্টদের খামখেয়ালিতে কয়েকশ প্রবাসী এবার হজে যেতে পারেননি। সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেও নিউইয়কের্র ২ শতাধিক বাংলাদেশি হজ পালন থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। হজের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ (সিকিউরিটি ডিপোজিট) জমা দেবার পর এ ঘটনা ঘটেছে। অনেকেই পারিবারিকভাবে হজে যাবার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছিলেন। কিন্তু শেষ মুহূর্তে তাদের জনানো হয় ভিসা ও টিকেট কোনটাই হয়নি। মাথায় হাত পড়ে তাদের। নিয়ত করার পরও তাদের আল্লাহ’র ঘরে যাবার ইচ্ছের পরিসমাপ্তি ঘটে। এ ঘটনা নিয়ে হজ পালনে আগ্রহী প্রবাসীদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
এমন ঘটনা ঘটেছে নিউইয়র্কের দুটি ট্রাভেল এজেন্সীর ক্ষেত্রে। তাদের অপরিপক্ক ও অপেশাদার কর্মকান্ডের কারণেই এমনটি ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ দুটি প্রতিষ্ঠানে হজে যাবার জন্য অর্থ জমা দিয়েছিলেন ভুক্তভোগীরা। এদের মধ্যে ছিলেন কমিউনিটির পরিচিত মুখ ও বারী হোম কেয়ারের কর্নধার আসেফ বারী টুটুল, কমিউনিটি নেতা জয়নাল আবেদিন, জসীম ভুঁইয়া, কাজী নয়নের মতো বিশিষ্টজনেরা। কিন্তু শেষ মুহূর্তে আসেফ বারী টুটুল যখন জানতে পারেন সংশ্লিষ্ট ট্রাভেল এজেন্ট তার পরিবারের হজ প্যাকেজ চূড়ান্ত করতে ব্যর্থ হয়েছে তখন তিনি দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে বেশি অর্থ ব্যয়ে স্পেশাল প্যাকেজে হজে গমন করেন। কিন্তু জয়নাল আবেদীন, জসিম ভূইঁয়া ও কাজী নয়নরা যেতে ব্যর্থ হন।
এ প্রসঙ্গে দৃষ্টি আর্কষণ করা হলে ট্রাভেল এজেন্টগুলো বলেছে, নসুক এর তত্ত্বাবধানে আমরা হজ প্যাকেজ পরিচালনা করেছিলাম। প্রবাসী বাংলাদেশিরা এই প্যাকেজের মাধ্যমে হজে যেতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। তাদের কাছ থেকে ৫ হাজার ডলার করে ডিপোজিট মানিও নিয়েছিলাম। কিন্তু নসুকের কোটা জটিলতার কারণে আমাদের কিছু যাত্রী হজে যেতে পারেননি। এজন্য আমরা দুঃখিত। তবে সকল যাত্রীর অর্থ আমরা ফেরত দিয়েছি। কারও টাকা আটকে রাখা হয়নি। একজন যাত্রীও এ অভিযোগ করতে পারবেন না।
এজেন্টগুলো আরও বলেছে, নসুকের মাধ্যমে হজ প্যাকেজ চালু একটি নতুন পদ্ধতি। আমরা সবাইকে এটি আগেই অবহিত করেছিলাম যে, কেউ যেতে চাইলে আমরা চেষ্টা করতে পারি। তারা আগ্রহী হয়ে ডিপোজিট মানিও জমা দেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নসুকের অনুমোদিত হজ প্যাকেজ প্রোভাইডাররা কোটা স্বল্পতার কারণে অপারগতা প্রকাশ করে। সাথে সাথে আমরা তা ক্লায়েন্টদের অবহিত করি এবং তাদের টাকা ফেরত দেই। যারা নিয়ত করে হজে যেতে পারেননি তাদের কাছে আমরা দুঃখিত। তাদের একটি পয়সাও আমরা আটকে রাখিনি। যা ঘটেছে তা অপ্রত্যাশিত। আমাদের হাতে নিয়ন্ত্রণ ছিল না।
আমেরিকান ট্রাভেল এজেন্টস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ এর সভাপতি মোহাম্মদ হারুন সেলিম এ ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। বিষয়টি মোটেও ভালো না। যারা এমন একটি নতুন প্রক্রিয়ায় হজে লোক পাঠানোর উদ্যোগ নিচ্ছিলেন তাদের সাথে আমার কথাও হয়েছিল। যারা ক্লায়েন্ট ছিলেন তাদের উচিত ছিল জেনেশুনে হজে যাবার মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়া।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি সৌদি মিনিস্ট্রি অব হজ এর অধীনে নসুক হজ্ব প্যাকেজ বিক্রির কার্যক্রম শুরু করেছে। যা সম্পূর্ণ অনলাইন পোর্টাল নির্ভর। তাদের হয়ে সৌদি বেজড বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান হজের জন্য প্রাইভেট প্যাকেজ বিক্রি শুরু করে। তাদের কাছে প্রায় ১ হাজারের মতো কোটা ছিল। নিউইয়র্কের কয়েকটি বাংলাদেশি ট্রাভেল এজেন্ট তাদের সাথে যোগাযোগ ও অনুমোদন নিয়ে হজ প্যাকেজ বিক্রি করেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ব্যাপক চাহিদা থাকায় বাংলাদেশি ট্রাভেল এজেন্ট দুটির ভাগ্যে প্যাকেজ জোটেনি।