বুধবার   ০৩ জুলাই ২০২৪   আষাঢ় ১৮ ১৪৩১   ২৬ জ্বিলহজ্জ ১৪৪৫

ঢাকায় বড় শোডাউন করবে বিএনপি

ঢাকা অফিস

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ০২:৪২ এএম, ২৯ জুন ২০২৪ শনিবার

খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি


বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শরীর ভাল যাচ্ছে না। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে দ্রুত তাকে পেস মেকার লাগানো হয়। যদিও অনেকে ভয় পেয়েছিলেন, পেসমেকার লাগানোর সময় বেগম জিয়ার অবস্থা আরও খারাপ হতে পারে। কিন্তু নিবিড় পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে অনেকটা নিরাপদে পেসমেকার লাগানো সম্ভব হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বড় শোডাউনের প্রস্তুতি চলছে। গত সোমবার স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভায় ৩ দিনের কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত হয়। শুক্র অথবা শনিবার ঢাকায় সমাবেশের মধ্য দিয়ে কর্মসূচি শুরুর কথা রয়েছে। পরে ঢাকা ছাড়া সব সাংগঠনিক বিভাগীয় শহরে একই দিনে সমাবেশ করবে। এরপর সব জেলায়ও সমাবেশের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এ বিষয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘স্থায়ী কমিটির সভায় দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবনতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। দেশনেত্রীর মুক্তির দাবিতে আন্দোলন গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। স্থায়ী কমিটির বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘সভা মনে করে দেশনেত্রীকে পরিকল্পিতভাবে মিথ্যা মামলায় সাজা প্রদান করে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে চক্রান্ত করছে অবৈধ সরকার। শুধু রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে দেশনেত্রীকে বন্দি করে রাখা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং সংবিধানবিরোধী। এই মামলায় জামিন পাওয়া তার সাংবিধানিক অধিকার। খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছেন। চিকিৎসকরা তার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে প্রেরণের সুপারিশ করেছেন। দলের পক্ষ থেকে তাকে মুক্তি দিয়ে বিদেশে প্রেরণের দাবি জানানো হয়েছে। এমন কি পরিবারের পক্ষ থেকে দু’বার তার বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি চাওয়া হয়েছে। কিন্তু অবৈধ সরকার তাদের ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার লক্ষ্যে দেশনেত্রীকে হত্যার উদ্দেশ্যে উন্নত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করেছে। সভায় অবিলম্বে দেশনেত্রীর নিঃশর্ত মুক্তির দাবি করা হয়।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে স্থায়ী কমিটির সভা হয়। সূত্রমতে, সভার বেশিরভাগ সময়ই খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ও কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হয়। এতে দলীয় প্রধান খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসায় বাধা দেওয়ার প্রতিবাদে কর্মসূচি প্রণয়নের প্রস্তাব দেন কয়েকজন নেতা। কিন্তু পরে শুধু দলীয় প্রধানের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত হয়। এর বাইরে একই দাবিতে বৃহস্পতিবার নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের উদ্যোগে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হবে।
বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল নেতা জানান, খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে সেভাবে আন্দোলন গড়ে তোলা যায়নিÑএটা হচ্ছে বাস্তবতা। আর এজন্য তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। কারণ খালেদা জিয়া নেতাকর্মীদের কাছে একটি আবেগের জায়গা। সবকিছু বিবেচনা করে আপাতত ৩ দিনের কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। পরে আবারও কর্মসূচি নেওয়া হতে পারে।
সূত্রমতে, ঢাকাসহ সব সাংগঠনিক বিভাগ ও জেলার সমাবেশকে কেন্দ্র করে ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনগুলো। সব কর্মসূচিতে বিপুল নেতাকর্মীর উপস্থিতি নিশ্চিত করতে সংশি¬ষ্টদের নানা নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে আজকের যৌথ সভায় যুগ্ম মহাসচিব, সাংগঠনিক ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি সাবেক শীর্ষ নেতা ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের কেন্দ্রীয় শীর্ষ নেতাদের অংশ নিতে বলা হয়েছে। এ যৌথসভায় কর্মসূচি সফলে আরও নানা নির্দেশনা দেবেন মহাসচিব।
বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ বলেন, ‘আমরা চাই দেশে গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হোক। এবং বর্তমান স্বৈরাচারের হাত থেকে দেশ মুক্ত হোক। সেজন্য যে কোনো আন্দোলন-সংগ্রামের জন্য দল প্রস্তুত আছে। আর দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে সরকার যে প্রতিহিংসামূলক আচরণ করছে তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। সেজন্য দল যে কোনো কর্মসূচি দিলে জনগণসহ সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা মাঠে থেকে তা সফল করবে।’