নিউইয়র্কের বাংলাদেশিকে ছুরিকাঘাতে হত্যা ঘাতক আটক
নিউজ ডেস্ক
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ০২:১১ পিএম, ২৯ জুন ২০২৪ শনিবার
নিউইয়র্ক সিটির কুইন্স বরোর জ্যামাইকায় দুর্বত্তের ছুরিকাঘাতে নূরুল ভূঁইয়া নামে এক বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। নিহত নূরুল ভূইয়ার বয়স ৪০ বছর। সে স্প্রীং ফিল্ড গার্ডেনের সেন্ট আলবানসে বাস করতেন। তার দেশের বাড়ি মুন্সীগঞ্জ-বিক্রমপুরের সিরাজদীখান উপজেলায়। বিগত ১৮ বছর আগে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে আসেন। তার ১৪ বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। নূরুল ভূইয়ার মর্মান্তিক মৃত্যুতে কমিউনিটিতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এদিকে নূরুল ভূইয়ারকে হত্যার অভিযোগে পুলিশ ২৪ বছর বয়সী জশুয়া কেলি নামের এক যুবককে গ্রেফতার করেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, গত ২২ জুন শনিবার নিউইয়র্ক সিটির জ্যামাইকা এভিনিউ ও ১৬৯ স্ট্রিটে এলাকায় স্থানীয় স্যামি গুরমে ডেলি স্টোরের সামনে রাত ৯টা ৪০ মিনিটের দিকে এ ঘটনা ঘটে। এই স্টোরেই রাতের শিফটে কাজ করতো নূরুল ভূইয়া। স্টোরটিতে তাদের বাকতিণ্ডার এক পর্যায়ে কাউন্টারের পেছনে হামলাকারীর সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। পরবর্তীতে নূরুল স্টোরের বাইরে এলে জ্যামাইকা এভিনিউয়ের উপর ঘাতক তার ওপর পুনরায় চড়াও হয়।
নূরুল এক পর্যায়ে দৌঁড়ে স্টোরের ভিতরে প্রবেশ করলে ঘাতকও তাকে আবার ধাওয়া করে কাউন্টারের ভেতর ঢুকে রুটি কাটার ছুরি দিয়ে আঘাত করে এবং তার ওয়ালেট চুরির অভিযোগ করে চিৎকার করতে থাকে। যদিও ঘাতকের ওয়ালেট নেয়ার অভিযোগ সারভেইল্যান্স ভিডিওতে প্রমাণ হয়নি। ঘটনার এক পর্যায়ে ভূইয়া স্টোরে থাকা বেসবল ব্যাট নিয়ে আত্মরক্ষার চেষ্টা করলেও ঘাতক তাকে কয়েক দফা ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত করে। ফলে স্টোরের ভেতরেই নূরুল মারা যায়। এরপর ঠান্ডা মাথায় ঘাতক ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। খবর পেয়ে সিটি পুলিশ তাকে জ্যামাইকা হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
অপরদিকে পুলিশ স্টোরটির ভিডিও ফুটেজ দেখে ঘাতক জশুয়া কেলির শরীরের টাট্টু দেখে তাদের ডাটাবেজ থেকে তাকে শনাক্ত করে এবং সোমবার (২৪ জুন) তাকে তার কুইন্স ভিলেজের বাড়ি থেকে আটক করে। তার বিরুদ্ধে হত্যা ও অবৈধ অস্ত্র রাখার অভিযোগে মামলা করা হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এর আগে জশুয়া ক্যালি বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগে আরো আটবার গ্রেফতার হয়েছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে। এদিকে বুধবার বাদ মাগরিব জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারে নূরুল ভূঁইয়ার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। পরদিন বৃহস্পতিবার তার লাশ লং আইল্যান্ডের ওয়াশিংটন মেমোরিয়াল করবস্থানে দাফন করা হয়েছে।
আরো জানা গেছে, ঘটনার সময় নূরুল ভূঁইয়ার সাথে পরিচয়পত্র না থাকায় পুলিশ তার পরিবারকে তাৎক্ষণিক খবর দিতে পারেনি এবং পরিবারও তার মৃত্যুর কথা জানতো না। ফলে তার লাশ দু’দিন হাসপাতাল মর্গে ছিলো। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে নূরুল সবার ছোট ছিলেন। তার এক ভাই যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া, আরেক ভাই মিশিগান ও বোন নিউইয়র্কের লং আইল্যান্ডে বসবাস করেন।