শুক্রবার   ০৫ জুলাই ২০২৪   আষাঢ় ২০ ১৪৩১   ২৮ জ্বিলহজ্জ ১৪৪৫

যুদ্ধে ইসরায়েলকে যে পরিমাণ যুদ্ধাস্ত্র দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র

নিউজ ডেস্ক

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ০২:১৯ পিএম, ২৯ জুন ২০২৪ শনিবার

গাজায় যুদ্ধের শুরু থেকে ইসরায়েলে বিপুল সংখ্যক যুদ্ধাস্ত্র পাঠিয়েছে বাইডেন প্রশাসন। এর মধ্যে বিধ্বংসী ২০০০ পাউন্ডের ১০ হাজারেরও বেশি বোমা এবং হাজার হাজার হেলফায়ার ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে। অস্ত্র চালানের একটি আপডেট তালিকার ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানিয়েছেন দুই মার্কিন কর্মকর্তা। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই খবর জানিয়েছে।

এ বিষয়ে প্রকাশ্যে কথা বলার অনুমোদন নেই এমন কর্মকর্তারা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, গত অক্টোবরে গাজা যুদ্ধের শুরু এবং সাম্প্রতিক দিনগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলে কমপক্ষে ১৪ হাজারটি ২০০০ পাউন্ডের এমকে-৮৪ বোমা, সাড়ে ৬ হাজারটি ৫০০ পাউন্ডের বোমা, ৩ হাজার হেলফায়ার ক্ষেপণাস্ত্র, এক হাজার বাংকার বাস্টার বোমা, ২ হাজার ৬০০টি ছোট-ব্যাসের বোমা এবং অন্যান্য অস্ত্র পাঠিয়েছে।

তবে এসব চালান কখন হয়েছে এ বিষয়ে কোনও তথ্য জানাননি কর্মকর্তারা। অস্ত্রের মোট সংখ্যা থেকে এটি স্পষ্ট যে, অস্ত্র সরবরাহ সীমিত করার আন্তর্জাতিক আহ্বান এবং সম্প্রতি মার্কিন প্রশাসনের ইসরায়েলের জন্য শক্তিশালী বোমার একটি চালান স্থগিত করার সিদ্ধান্ত সত্ত্বেও মিত্রদের জন্য মার্কিন সামরিক সহায়তা সরবরাহে উল্লেখযোগ্য কোনও বিরতি হয়নি।

এ বিষয় সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের অস্ত্র বিশেষজ্ঞ টম কারাকো বলেছেন, ‘যদিও একটি বড় সংঘাতে এই সংখ্যক অস্ত্র তুলনামূলকভাবে দ্রুতই শেষ হয়ে যেতে পারে, তবে এই তালিকাটি স্পষ্টভাবে ইসরায়েলি মিত্রদের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের একটি উল্লেখযোগ্য পর্যায়ের সমর্থনকেই প্রতিফলিত করে।’ তিনি আরও বলেন, তালিকাভুক্ত এ ধরনের অস্ত্রশস্ত্রগুলো হামাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বা হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে সম্ভাব্য যুদ্ধে ব্যবহার করতে পারে ইসরায়েল।

সরবরাহকৃত অস্ত্রের এই সংখ্যা নিয়ে করা প্রতিবেদনে গাজা যুদ্ধের শুরু থেকে ইসরায়েলে পাঠানো অস্ত্রের সর্বশেষ ও বিস্তৃত পরিসংখ্যান রয়েছে।

ইসরায়েল ও ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহ গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে সীমান্তে গুলি বিনিময় করছে। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে উভয় পক্ষের মধ্যে সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

রয়টার্স জানিয়েছে, অস্ত্রের চালানের বিষয়ে হোয়াইট হাউজ কোনও মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। ওয়াশিংটনে ইসরায়েলের দূতাবাসও তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্যের অনুরোধের জবাব দেয়নি।

মার্কিন কর্মকর্তাদের একজন বলেছেন, এই চালানগুলো গাজা সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলে পাঠানো অস্ত্রের একটি বড় তালিকার অংশ। বাইডেন প্রশাসনের এক সিনিয়র কর্মকর্তা বুধবার সাংবাদিকদের বলেছেন, ওয়াশিংটন ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলে ৬.৫ বিলিয়ন মূল্যের নিরাপত্তা সহায়তা পাঠিয়েছে।

ওয়াশিংটন ইসরায়েলের জন্য নির্ধারিত অস্ত্র আটকে রেখেছে। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে এমন দাবি করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এ কথা বারবার অস্বীকার করেছেন মার্কিন কর্মকর্তারা। তবে অস্ত্রের চালান পাঠানোয় কিছু ‘বাধা’র কথা স্বীকার করেছেন তারা।

গাজার ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় শক্তিশালী ২০০০ পাউন্ড বোমার প্রভাব নিয়ে উদ্বেগের কথা উল্লেখ করে এই বোমার একটি চালান স্থগিত করেছে বাইডেন প্রশাসন। তবে মার্কিন কর্মকর্তারা জোর দিয়েই বলেছেন, অন্যান্য সব অস্ত্র সরবরাহ স্বাভাবিক হিসেবেই চলতে থাকবে। ২০০০ পাউন্ডের একটি বোমা পুরু কংক্রিট এবং ধাতু ভেদ করে বিস্ফোরণের ব্যাসার্ধ তৈরি করতে সক্ষম।