রোববার   ০৬ অক্টোবর ২০২৪   আশ্বিন ২০ ১৪৩১   ০২ রবিউস সানি ১৪৪৬

বাইডেনের প্রতি আস্থা নেই এক-তৃতীয়াংশ ডেমোক্র্যাটের

নিউজ ডেস্ক

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ১২:১৬ এএম, ৫ জুলাই ২০২৪ শুক্রবার

রয়টার্সের একটি জরিপে দেখা গেছে, চলতি বছর প্রথম প্রেসিডেনশিয়াল বিতর্কে হতাশাজনক পারফরম্যান্সের পর প্রতি তিনজন ডেমোক্র্যাটের একজন ভাবছেন যে পুনরায় নির্বাচন থেকে বাইডেনের এখন সরে দাঁড়ানো উচিত। জরিপে এও উঠে এসছে, এখন পর্যন্ত ট্রাম্পের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অন্য কোনও নির্বাচিত ডেমোক্র্যাট বাইডেনের চেয়ে ভালো ফল করতে পারেননি। দুই দিনব্যাপী পরিচালিত এই জরিপে দেখা গেছে বাইডেন ও ট্রাম্প উভয়ের পক্ষেই ৪০ শতাংশ নিবন্ধিত ভোটারের সমর্থন রয়েছে। এই ফলে এই বিষয়টিও স্পষ্ট হয়ে উঠছে যে, বিতর্কে হতাশাজনক পার্ফর্মেন্সের পরও বাইডেনের সমর্থনে তেমন ভাটা পড়েনি।

শীর্ষ ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে থেকে কেবল সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার স্ত্রী মিশেল ওবামাই ৫০ শতাংশ সমর্থন পেয়ে ৩৯ শতাংশ সমর্থন পাওয়া ট্রাম্পের চেয়ে সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এগিয়ে আছেন। তবে মিশেল ওবামা বরাবরই বলে আসছেন যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নেয়ার কোন ইচ্ছা নেই তার।

জরিপে অংশ নেয়া ৩২ শতাংশ ডেমোক্র্যাট বলেছেন যে, প্রেসিডেনশিয়াল বিতর্কে ট্রাম্পের আক্রমণকে চ্যালেঞ্জ জানাতে ব্যর্থ হওয়ার কারণে পুনরায় নির্বাচনের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসা উচিত বাইডেনের।

ডেমোক্র্যাট ভোটাররা দীর্ঘদিন ধরেই পুনরায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাইডেনের সামর্থ্য নিয়ে সন্দেহ পোষণ করে আসছেন। জানুয়ারিতে দলের মনোনয়নের প্রতিযোগিতা চলাকালীনও ৮৯ শতাংশ ডেমোক্র্যাট জানিয়েছিলেন যে, ২০২৪ সালের নির্বাচনে বাইডেনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা উচিত নয়। বিভিন্ন মহলের সমালোচনার পরও বাইডেন নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেননি।

বাইডেন ছাড়া ডেমোক্র্যাটদের বিবেচনায় থাকা অন্যান্য সব প্রার্থীই সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ট্রাম্পের চেয়ে পিছিয়ে আছেন। উদাহরণস্বরূপ, বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কামালা হ্যারিস জরিপে ট্রাম্পের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ১ শতাংশ সমর্থন কম পেয়েছেন। যেখানে ট্রাম্প জরিপে ৪৩ শতাংশ ভোটারের সমর্থন পেয়ে এগিয়ে ছিলেন সেখানে হ্যারিস পেয়েছেন ৪২ শতাংশের সমর্থন।

গত কয়েক মাসে বাইডেনের ছায়া থেকে বেরিয়ে এসে গর্ভপাতের অধিকার সংক্রান্ত বিষয়ে বক্তব্য দিয়েভপাতের অধিকার সংক্রান্ত ভ্পিউ্ইআ প্রশাসনে নিজের স্বতন্ত্র ভূমিকার স্বাক্ষর রেখেছেন হ্যারিস। রয়টার্সের জরিপে দেখা গেছে, হ্যারিসের প্রতি ইতিবাচক ধারণা পোষণ করেন ৮১ শতাংশ ডেমোক্র্যাট যেখানে বাইডেনের প্রতি এমন ধারণা পোষণ করেন ৭৮ শতাংশ।

উল্লেখযোগ্যভাবে জরিপে আরও দেখা গেছে, অংশগ্রহণকারীদের ১৮ শতাংশ মনে করেন রানিং মেট হিসেবে হ্যারিসের স্থানে বাইডেন অন্য কাউকে নির্ধারণ করলে নির্বাচনে ভালো ফলাফল করবেন তিনি। তবে এমন মতের সঙ্গে একমত হতে পারেননি ৭১ শতাংশ অংশগ্রহণকারী। জানুয়ারিতে পরিচালিত একটি জরিপের মতোই এই জরিপেও সরকারি দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে বাইডেনের বয়সকে খুব বেশি বলে মনে করছেন ৫৯ শতাংশ ডেমোক্র্যাট।

এদিকে সম্ভাব্য অন্যান্য ডেমোক্র্যাট প্রার্থীদের মধ্যে ট্রাম্পের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতার প্রশ্নে পিছিয়ে আছেন ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসমও। ট্রাম্প জরিপে ৪২ শতাংশের সমর্থন পেলেও তিনি পেয়েছেন ৩৯ শতাংশের সমর্থন। যেসব ডেমোক্র্যাটদেরকে বাইডনের সম্ভাব্য বিকল্প হিসেবে ভাবা হচ্ছে তারা কেউই এখন পর্যন্ত সরাসরি ট্রাম্পের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি এবং আনুষ্ঠানিকভাবে কেউই প্রার্থীতাও ঘোষণা করেননি। তাদের মধ্যে অনেকেই আবার জাতীয় পর্যায়েও সুপরিচিত নন।

ডেমোক্র্যাট দলের কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ দাতা তাকে বাইডেনের যোগ্য বিকল্প হিসেবে ভাবলেও জরিপে প্রায় ৭০ শতাংশ ডেমোক্র্যাট বলেছেন যে তারা কখনওই কেন্টাকির গভর্নর অ্যান্ডি বেশিয়ারের নাম শোনেননি। রয়টার্সের জরিপে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ক্ষেত্রে ৩৬ শতাংশ ভোটারের সমর্থন পেয়ে ৪০ শতাংশ সমর্থন পাওয়া ট্রাম্পের চেয়ে পিছিয়ে আছেন তিনিও। ট্রাম্পের সঙ্গে সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বিতার ক্ষেত্রে ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে পিছিয়ে আছেন মিশিগানের গভর্নর হুইটমার ও ইলিনয়ের গভর্নর জে বি প্রিটজকারও। অনলাইনে পরিচালিত এই জরিপে অ্যামেরিকা জুড়ে অংশ নিয়েছেন ১ হাজার ৭০ জন প্রাপ্তবয়স্ক অ্যামেরিকান।