শনিবার   ৩০ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১৫ ১৪৩১   ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

যে কারণে বেশিরভাগ ডেমোক্র্যাট সমর্থন করছেন বাইডেনকে

নিউজ ডেস্ক

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ০১:০৭ এএম, ১৪ জুলাই ২০২৪ রোববার

ডেট্রয়েটে শুক্রবার সন্ধ্যার সমাবেশে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মঞ্চে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে উচ্ছসিত জনতা স্লোগান দিতে থাকে ‘আপনি নির্বাচন থেকে পিছু হটবেন না!’ বিবিসি জানায়, নভেম্বরের নির্বাচনের ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী জো বাইডেন হাজার হাজার সমর্থকের উল্লাসের প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, ‘আমি নির্বাচনি লড়াইয়ে অংশ নিচ্ছি এবং আমি জিতব!’

২৭ জুন প্রেসিডেন্ট বিতর্কে রিপাবলিকান প্রার্থী ডনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে দুর্বল ও বিব্রতকর ফলের পর থেকে ডেমোক্র্যাটদের একাংশ তাকে নির্বাচন থেকে সরে জানানোর আহ্বান জানান।

৮১ বছর বয়সী প্রেসিডেন্ট বাইডেনের বয়স, শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যসহ রাজনৈতিক বিষয়ে উদ্বেগের কথা জানিয়ে এখন পর্যন্ত সর্বমোট ১৯ জন ডেমোক্র্যাট সদস্য তাকে পদত্যাগ করতে বলেছেন।
এ ছাড়া বেশ কয়েকজন বিশিষ্ট দাতা ও হলিউড অভিনেতা এবং প্রযোজক সরাসরি তহবিল আটকে দেয়ার হুমকি দিয়েছেন।

তবে, প্রেসিডেন্ট বাইডেনের জন্য সবচেয়ে সুখকর এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে যে, তার পক্ষে থাকা ডেমোক্র্যাটদের তালিকা বেশ দীর্ঘ এবং এখন পর্যন্ত কোন প্রভাবশালী নেতা তার বিরুদ্ধে যাননি।

সমালোচনা শুরুর পর থেকে কমপক্ষে ৮০ জন ডেমোক্র্যাট রাজনীতিবিদ ৮১ বছর বয়সী প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে প্রকাশ্যে সমর্থন করেছেন এবং আরও অনেকে তাদের সাথে যোগ দিচ্ছেন।
বাইডেনের পক্ষে থাকার কারণ হিসেবে তার রাজনৈতিক রেকর্ড, নীতি ও ডনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের নির্বাচনে জয়কে অন্যতম ঘটনা হিসেবে দেখিয়েছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্ট বাইডেন সংবাদ সম্মেলনে নেইটো ও দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য নিজের পরিকল্পনা সম্পর্কে বিশদ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।

প্রেসিডেন্ট বাইডেনের মিত্র ও সমালোচকেরাও তার সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্যের প্রশংসা করেছেন।
নর্থ ক্যারোলাইনার গভর্নর রয় কুপার শুক্রবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘তিনি (বাইডেন) পররাষ্ট্র নীতির ওপর নিজের দখল দেখিয়েছেন, যা সত্যিই অসাধারণ। আমি মনে করি না ডনাল্ড ট্রাম্প এক মিনিটের জন্য ঠিকঠকভাবে পররাষ্ট্র নীতি নিয়ে কথা বলতে পারেন।’

সম্ভাব্য প্রেসিডেন্ট বাইডেনের বিকল্প এবং উত্তরসূরি হিসেবে বিবেচনা করা ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউজম সিবিএসকে বলেছেন যে তিনি বাইডেনের সঙ্গে আছেন।

পেনসিলভেনিয়ার কংগ্রেসম্যান ব্রেন্ডন বয়েল বলেছেন, ‘জো বাইডেন দেখিয়েছেন যে তিনি দণ্ডপ্রাপ্ত অপরাধী ট্রাম্পের চেয়ে তার নীতি সম্পর্কে এক মিলিয়ন গুণ বেশি জানেন।’
ডেমোক্রেটিক কৌশলবিদ সাইমন রোজেনবার্গ বলেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে তিনি নির্বাচন চালিয়ে যেতে চান এবং আমি মনে করি লোকেরা তার এই সিদ্ধান্তকে সম্মান করছে।’

তিনি বলেন, ‘এটাও সত্য যে আমাদের সিস্টেমে প্রেসিডেন্ট পদে একজন প্রার্থীকে এত দেরিতে বদলে ফেলা কঠিন ও নজিরবিহীন। তাই কোন বড় পরিবর্তন করার আগে বেশ সংযম দেখাতে হবে।’

প্রেসিডেন্ট বাইডেন নিউ ইয়র্কের কংগ্রেসওম্যান আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও-কর্টেজ এবং ভারমন্টের সেনেটর বার্নি স্যান্ডার্সসহ বামপন্থি বেশ কয়েকজন রাজনীতিবিদের কাছ থেকে সমর্থন পেয়েছেন।
মিসেস ক্রস বলেছেন, ‘অনেকেই স্বীকার করেছেন যে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের নীতি নাগরিক অধিকার, এলজিবিটিকিউ অধিকার ও জলবায়ু পরিবর্তন জন্য ঝুঁকি।’

তিনি বলেন, ‘এগুলো এমন বিষয় যা প্রগতিশীল বামদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রেসিডেন্ট বাইডেন এই বিষয়গুলোতে কাজ করেছেন।’

দীর্ঘদিন ধরে ডেমোক্র্যাটদের দাতা হুইটনি টিলসন প্লাগ শুক্রবার বলেছেন যে তিনি প্রেসিডেন্ট বাইডেনের জয়ের বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী।
দুই দশকেরও বেশি সময় ডেমোক্র্যাটদের জন্য তহবিল অনুষ্ঠানের আয়োজন করা শেখর নরসিমহান বলেছেন, তাদের পরিকল্পনায় কোন পরিবর্তন হয়নি।

এশিয়ান অ্যামেরিকান প্যাসিফিক আইল্যান্ডার ভিক্টোরি ফান্ড সুপার-পিএসির প্রতিষ্ঠাতা নরসিমহান বলেছেন, ‘আমাদের চোখ দেখতে পারে কী ঘটছে, আমাদের কান শুনতে পারে যে বিষয়ে কথা বলা হচ্ছে কিন্তু আমরা কাজ শেষ করার জন্য দ্রঢ় প্রতিজ্ঞ।’

তিনি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট বাইডেন নির্বাচনে অংশ নিতে চান কি না এটা তার সিদ্ধান্ত এবং তিনি যা সিদ্ধান্ত নেবেন আমরা তা মেনে চলব। তবে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই আলোচনা শেষ করা ভাল।’
ডেমোক্র্যাট ন্যাশনাল ফাইন্যান্স কমিটিতে থাকা ফ্র্যাঙ্ক ইসলাম বলেছেন যে তিনি এই মাসের শেষের দিকে তার মেরিল্যান্ডের বাড়িতে একটি তহবিল সংগ্রহের পরিকল্পনা করছেন।

তিনি বেশ জোর দিয়ে বলেন, ‘আমি এটি বাস্তবায়নের জন্য এগিয়ে যাচ্ছি কারণ আমি জানি তিনি (বাইডেন) জিতবেন।’