শুক্রবার   ২৯ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১৫ ১৪৩১   ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

হত্যাযজ্ঞে জড়িতদের ওপর স্যাংশন আরোপের আহবান

মনোয়ারুল ইসলাম

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ০৩:০২ এএম, ৩ আগস্ট ২০২৪ শনিবার

বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে নিউইয়র্কের আইন প্রণতাদের উদ্বেগ : কংগ্রেসে চিঠি

 

বাংলাদেশের বিরাজমান পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে এবং শিক্ষার্থীদের হত্যা ও নিপীড়নের প্রতিবাদ জানিয়ে এর সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে স্যাংশন আরোপের বিষয় বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছেন নিউইয়র্কের ১৭ জন আইন প্রণেতা সহ ২২জন ডেমোক্র্যাট নেতা। সিনেটের মেজরিটি লিডার চাক শুমার ও পররাষ্ট্র বিষয়ক হাউস কমিটির সদস্য গ্রেগরি মিক্সকে লেখা এক চিঠিতে তারা এই নিন্দনীয় তৎপরতার সাথে জড়িত বাংলাদেশের সামরিক বাহিনী, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে স্যাংশন আরোপের সাথে সাথে বাংলাদেশ সরকারের ওপর তাদের ঘৃন্য কার্যকলাপ বন্ধে চাপ প্রয়োগেরও আহ্বান জানিয়েছেন। চিঠিতে তারা বলেছেন, বাংলাদেশ সরকার যেভাবে মানবাধিকার লংঘন করে চলেছে তাতে শুধু স্যাংশন আরোপই যথেষ্ট নয়, নাগরিক সাধারণের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা বিধানের জন্যও তাদেরকে চাপ দিতে হবে।          সিটি কাউন্সিলে একমাত্র বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত কাউন্সিল সদস্য শাহনা হানিফ সহ নিউইয়র্কের এই ২২ জন আইন প্রণেতা ও ডেমোক্র্যাট নেতা চাক শুমার ও গ্রেগরি মিক্সকে লেখা তাদের চিঠিতে লিখেছেন, বাংলাদেশের ঘটনাবলী সম্পর্কে আমরা অত্যন্ত ভারাক্রান্ত হৃদয়ে আপনাদেরকে লিখছি। সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে সেখানকার ছাত্রদের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ দমনে বাংলাদেশ সরকার হিংসাত্মক নীতি অবলম্বন করেছে। তারা দেশজুড়ে ইন্টারনেট যোগাযোগ ব্ল্যাকআউট করে দিয়েছে। চিঠিতে তারা বলেন, আমরা এখনও হতাহতের সুনির্দিষ্ট সংখ্যা জানার  অপেক্ষায় রয়েছি। তবে নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে জেনেছি, প্রায় ২০০ বিক্ষোভকারী ছাত্রকে পুলিশ হত্যা করেছে। এদের মধ্যে অসংখ্য শিশু এবং কিশোর রয়েছে। এ ছাড়াও কয়েক হাজার মানুষ আহত ও গ্রেফতার হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের এই কান্ডজ্ঞানহীন কার্যকলাপ আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণের ও এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী রাখে। চিঠিতে তারা আরো বলেছেন, বাংলাদেশ সরকারের এই কার্যকলাপ, শক্তি প্রয়োগ, গ্রেফতার এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে জানাজায় অংশ নিতে যাওয়া সাধারণ ছাত্রদেরও তারা গ্রেফতার করেছে। সরকার তাদের পরিবারের ন্যায্য বিচার প্রাপ্তিকেও অস্বীকার করা হচ্ছে। এ সবের ফলে পরিস্থিতির গুরুতর অবনতি ঘটছে। তারা বলেন, এসব ঘটনার কঠোর নিন্দা জ্ঞাপনের দায়িত্ব যুক্তরাষ্ট্রের রয়েছে। তারা এ ব্যাপারে চাক শুমার ও গ্রেগরি মিক্সের প্রতি কংগ্রেসে তাদের প্রভাব বিস্তারের আহ্বান জানান।
তারা কংগ্রেসের উদ্দেশে ৩ দফা প্রস্তাবও পেশ করেছেন। দফা তিনটি হচ্ছে, বাংলাদেশের এইসব হিংসাত্মক ঘটনাবলীর সাথে জড়িত ব্যক্তি ও সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে স্যাংশন আরোপ, তাদের যুক্তরাষ্ট্র সফর নিষিদ্ধ করা এবং তাদের সম্পদ জব্দ করার উদ্যোগ নেয়া, বাংলাদেশকে দেয়া মার্কিনী সাহায্য প্রদানে সেখানকার মানবাধিকার পরিস্থিতি ও গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা উন্নয়নের শর্ত আরোপ করার বিধি প্রণয়ন করা এবং বাংলাদেশ সরকারের হিংসাত্মক কার্যকলাপে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ন্যায় বিচার ও মানবাধিকার নিশ্চিত করতে তাদের ওপর বিভিন্নমুখী চাপ প্রদানে আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সাথে একযোগে কাজ করা।  
 গত ৩০ জুলাই মঙ্গলবার দেয়া এই চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন, কাউন্সিলওম্যান শাহানা হানিফ, ডেমোক্র্যাটিক ডিস্ট্রিক্ট লিডার মোফাজ্জল হোসেন, স্টেট কমিটি মেম্বার জামি কাজি, ডেমোক্র্যাটিক লিডার ইমরান রহমান, স্টেট এসেমব্লি মেম্বার জোহরান মাদানী, স্টেট সিনেটর জুলিয়া সালাজার, স্টেট সিনেটর ক্রিস্টিন গোনজালেজ, এসেমব্লি মেম্বার খলিল এন্ডারসন, সিটি কাউন্সিল মেম্বার ক্রিস্টোফার ব্যাংক, কাউন্সিল মেম্বার নাতাশা উইলিয়াম, কাউন্সিল মেম্বার টিফানী কাবান, কাউন্সিল মেম্বার এলেক্সা এভিলস, কাউন্সিল মেম্বার আলথিয়া স্টিভেন্স,  কাউন্সিল মেম্বার লিংকন রেস্টলার, কাউন্সিল মেম্বার চি অসি, কাউন্সিল মেম্বার গ্যালে ব্রিউয়ার ও কাউন্সিল মেম্বার স্যান্ডি নার্স, কাউন্সিল মেম্বার ক্রিস্টোফার মেরি, কাউন্সিল মেম্বার জেনিফার গুতেরাস, কাউন্সিল মেম্বার রিতা জোসেফ, ডেমোক্র্যাটিক লিডার জর্জ কনস্ট্যানটিনু ও প্যাট্রিক মার্টিনেজ।