শুক্রবার   ২৯ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১৪ ১৪৩১   ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাতগুলো কাটছে বিভীষিকায়

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ০৩:৩৪ এএম, ৯ আগস্ট ২০২৪ শুক্রবার

সারাদেশে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে প্রায় সব থানাই কার্যত বন্ধ হয়ে পড়েছে। পুলিশের অভাবে এই সুযোগে দেশের বিভিন্ন জায়গায়ই বেড়েছে চুরি-ডাকাতি ও লুটতরাজ। কার্যত দেশে ল অ্যান্ড অর্ডার ভেঙে পড়েছে। এই মুহূর্তে রাত গভীর হলেই নেমে আসছে বিভীষিকা।

গত দুই দিন মঙ্গল ও বুধবার (৬-৭ আগস্ট) রাজধানীসহ সারাদেশের বিভিন্ন জায়াগায় রাত ১টার পর থেকে ডাকাতির খবর পাওয়া যায়। রাজধানীর বসিলা, উত্তরা, মোহাম্মদপুর, শেখেরটেক, আদাবর, নবোদয় হাউজিং, বছিলা, ইসিবি চত্বর, মিরপুর-৬, মিরপুর-২, ধানমন্ডি ও রাজধানীর বেশকিছু এলাকায় ডাকাতির খবর পাওয়া যায়। এছাড়া যেসব এলাকায় ডাকাতি হয়নি সেখানেও ছিল আতঙ্ক।

মিরপুর ১০ এর বাসিন্দা সাজিদ জাগো নিউজকে বলেন, এদিন সারাদিন অফিস করে বাসায় আসলাম। দিনের বেলাও অনলাইনে এবং সবার মুখে ডাকাতি হিতে পারে এমন কথা শুনলাম। ভয় ও ছিল মনের মধ্যে। সব শেষে রাতে ঘুমাতে গেলাম। মাঝে হঠাৎ রাত ৩টার দেকে মসজিদের মাইকে মাইকে ঘোষণা করে যে এলাকায় ডাকাত ডুকেছে। আওয়াজ শুনেই লাফ দিয়ে উঠি। এরপর ঘরে সবার মধ্যে আতঙ্ক দেখি। এরপর এলাকার সবাই রাস্তায় লাঠি, দা নিয়ে নেমে পড়ি। এরপর রাত পোহানোর আগ পর্যন্ত এলাকার সবাই মিলে পাহারা দেই।

মিরপুর ২ এর বাসিন্দা আসাদ জানান, রাতে সব কাজ শেষে মনের মধ্যে আতঙ্ক নিয়েই ঘুমাতে গেলাম। রাতে মাইকে ডাকাতের কথা শুনে আমার মেয়ে চিল্লাইয়া আমাদের সবাইকে ডাকে। ঘুম থেকে চিল্লানি শুনে লাফিয়ে উঠি। সারারাত আর আতঙ্কে ঘুমাতেই পারিনি।

উত্তরার বাসিন্দা আহসান জানান, বুধবার সন্ধ্যা থেকেই এলাকার বিভিন্ন গ্রুপগুলোতে ডাকাত আসতে পারে এমন কথা বলা হচ্ছিল। ঘরে ডুকার পরও ভয়ে ছিলাম। তবে এলাকার সবাই মিলে বাসার নিছে পাহারা দেওয়া শুরু করছি। রাতে কয়েক জায়গায় ডাকাত আসেও। সেখানে সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে ও ডাকাতদের আটকও করে।

হাসান নামে উত্তর বাড্ডার বাসিন্দা জানান, ঘরে বেশি কিছু নেই সোনার কিছু অলংকার আছে। বাসার মালিক এসে বলে গেসিলো ডাকাতের সমস্যা বাড়ছে সাবধানে থাকতে। আমার বউ দুশ্চিন্তায় পড়ে যায়। সারারাত ঘুমানোই হয়নি।

এছাড়া অনলাইনের বিভিন্ন গ্রুপে সারারাত চলে ডাকাত আসছে বা গোলাগুলি নিয়ে পোস্ট। এতে করে সব জায়গায় ই মানুষ আতঙ্কিত ছিল।

সাধারণ মানুষরা জানান, দ্রুত পুলিশের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। সাধারণ মানুষ নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারা কিংবা সমস্যার সমাধান করতে হলে অবশ্যই পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তৎপর হতে হবে।

অন্যদিকে এই দুর্যোগ কাটাতে পুলিশের নতুন মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মো. ময়নুল ইসলাম সারাদেশে পুলিশ সদস্যদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিজ নিজ কর্মস্থলে যোগ দিতে আহ্বান জানিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার (৮ অক্টোবর) কর্মস্থলে যোগ দিতে সবাইকে পুলিশ সদস্যদের সহযোগিতা করতে আহ্বান জানিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর।