দুঃশাসনের কবর হয়েছে : নব উদ্যমে এগিয়ে যাবে দেশ
আজকাল রিপোর্ট -
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ০২:০২ এএম, ১০ আগস্ট ২০২৪ শনিবার
অন্তর্বর্তী সরকার নিয়ে প্রবাসীদের ভাবনা
ছাত্র জনতার গনঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীঘ সরকারের পতন ঘটেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ড. ইউনুসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
এদিকে ৫ আগষ্ট সরকারের পতনের পর থেকে দেশে যে ব্যাপক বিশৃংখলা সৃষ্টি হয়েছে নতুন সরকার সে পরিস্থিতি সামাল দিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে জনগণের প্রত্যাশা। নতুন সরকারের কাছে প্রত্যাশা ও বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে ‘আজকাল’ নিউইয়র্কের বিশিষ্ট কমিউনিটি নেতৃবৃন্দের মুখোমুখি হয়েছিল। এদেও মধ্যে ছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান, বিএনপি নেতা গিয়াস আহমেদ, বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সভাপতি নার্গিস আহমদ, আসেফ বারী টুটুল, ও ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার। এখানে তাদেও বক্তব্য তুলে ধরা হলো।
সেনাপ্রধান ও প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ চাই : সিদ্দিকুর রহমান
শেখ হাসিনার পতন ও বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, শেখ হাসিনাকে বাধ্য করা হয়েছে পদত্যাগ করতে। সেনাবাহিনী যা করেছে তা বাংলাদেশের সংবিধানের পরিপন্থী। আজকে দেশে যে অরাজকতা চলছে তার জন্যও সেনা প্রধান ও প্রেসিডেন্ট দায়ী। বাঙ্গালী জাতি একদিন তাদের বিচার করবে। প্রেসিডেন্ট তার শপথ ভঙ্গ করেছেন। সিদ্দিকুর রহমান সেনাপ্রধান ও প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের দাবি করেন। তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রসঙ্গে বলেন, আগামী ৩ মাসের মধ্যে তড়িঘড়ি করে নির্বাচন আমরা মানবো না। আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে দেশে কোন নির্বাচন হবে না।
ড. উইনুসের ইমেজে ঘুরে দাঁড়াবে দেশ: নার্গিস আহমদ
বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সভাপতি নার্গিস আহমদ বলেন, ড. ইউনুস শ্রদ্ধার মানুষ। বিশ্বব্যাপী তার সুখ্যাতি রয়েছে। তার ইমেজের উপর ভর করে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াবে। ছাত্র আন্দোলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গত ১৫ বছরের শোষণ-নির্যাতন, দুর্নীতি ও দাম্ভিকতার কবর দিয়েছে আমাদের ছাত্ররা। দলীয় চশমা পরে এবার কেউ আন্দোলন করে নি। তারা কোটা সংস্কার থেকে রাষ্ট্র সংস্কারের শপথ নিয়েছে। এই বিজয়ে দলীয় লেবাস লাগলে শত শত ছাত্রজনতার রক্ত বৃথা হয়ে যাবে। অন্তবর্তীকালীন সরকারকে রাষ্ট্রটির সংস্কার করতে হবে। আয়না ঘর ও হাওয়া ভবনের পুনরাবৃত্তি বাংলার মানুষ দেখতে চায় না।
নার্গিস আহমদ বলেন, প্রবাসী বাংলাদেশি হিসেবে আর কোন মায়ের কোল খালি হোক তা দেখতে চাই না। কেউ স্বামীহারা, কেউ বাবা হারা হোক তা আমাদের প্রত্যাশা নয়। তিনি বলেন, প্রবাসে এখনও দেখছি আওয়ামী লীগের অনেকে কান্নাকাটি করছেন তাদের নেত্রীর জন্য। অথচ সেই নেত্রী লাখ লাখ কর্মীকে বিপদে ফেলে বোনকে নিয়ে পালিয়ে গেলেন। শেখ হাসিনা ছিলেন অনেক আওয়ামী লীগারদের মানি মেশিন। তারাই এখন কান্নকাটি করছে। তার বাড়ির একজন চাকর কি করে ৪০০ কোটি টাকার মালিক হয়।
আওয়ামী দুঃশাসনের কবর হয়েছে : গিয়াস
বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও জ্যাকসন হাইটস বিজনেস এসোসিয়েশনের সভাপতি গিয়াস আহমেদ বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। গনঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ নতুন করে স্বাধীনতা পেল। গত ১৬টি বছর দেশটি ছিল একটি আয়না ঘর ও জেলখানা। ছাত্রজনতা আওয়ামী দুঃশাসনের কবর দিয়েছে। কিন্তু একটি অভ্যুত্থানের পর নানা বিশৃংখলা দেখা যায়। বাংলাদেশেও তা ঘটছে। সরকার নেই। পুলিশ বাহিনী নেই। এর পাশাপাশি আওয়ামী লীগের চক্রান্ত চলছে। এমতাবস্থায় দেশে অশান্তি বিরাজ করছে। ছাত্রলীগের গুন্ডারা মন্দির-গির্জা ভাংচুর করছে পরিকল্পিতভাবে। আশা করছি, দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকার সকল বিশৃংখলা কঠোর হস্তে দমন করবেন। সহসাই গৌরবের বাংলাদেশে শান্তি ফিরে আসবে।
দেশ নব উদ্যমে এগিয়ে যাবে : টুটুল
যুক্তরাষ্ট্র জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক আসেফ বারী টুটুল বলেন, দেশে ক্লিন ইমেজের ব্যক্তিবর্গকে নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদ গঠিত হয়েছে। এতে সংযোজিত হয়েছে তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধি। একজন প্রবাসী হিসেবে চাইবো বাংলাদেশে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হোক। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হোক। গণতন্ত্রের লেবাসে যেন স্বৈরশাসক চেপে না বসে। গত কয়েকদিন দেশে পুলিশ বাহিনী নেই। এমতাবস্থায় ছাত্র ও তরুণ সমাজ যে দায়িত্ব পালন করেছে তার তুলনা হয় না। আমরা আশা করবো, বাংলাদেশ নব উদ্যমে এগিয়ে যাবে অর্ন্তবর্তী সরকারের নেতৃত্বে।
আন্দোলন ছিল আর এক মুক্তিযুদ্ধ: দেলোয়ার
জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটির সভাপতি ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার বলেছেন, এই ছাত্র আন্দোলনকে সবাই নতুন বাংলাদশের আরেকটা মুক্তিযুদ্ধ বলে আখ্যায়িত করে আসছে। কারণ গত ১৫-১৬ বছর ধরে সরকারের আশেপাশের লোকজনই সব দখলে রেখেছিল। মনে হচ্ছিল সরকারি লোকজনই রাজা ও দেশের মালিক। বাকিরা প্রজা। তাই আগামী দিনের বাংলাদেশ হোক সবার। কোন বৈষম্য থাকবে না, কোন নিপীড়ন থাকবে না, রাজা-প্রজা থাকবে না। আইন ও অধিকার হোক সবার জন্য সমান।