বাংলাদেশে ভারতের হস্তক্ষেপ চাইলেন জয়
আজকাল রিপোর্ট -
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ০১:১১ এএম, ১৭ আগস্ট ২০২৪ শনিবার
সাবেক প্রধারমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্বাচন নিয়ে সরাসরি ভারতের হস্তক্ষেপ কামনা করলেন। আহবান জানালেন, আগামী ৯০ দিনের মধ্যে সাধারন নির্বাচনের জন্য ভারতকে নেতৃত্ব দিতে। তার এই বক্তব্যে দেশে ও প্রবাসে মারাত্মক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই প্রতিবেদককে বলেন, জয়ের এ ধরনের বত্তব্য দেশোদ্রোহিতার সামিল। রাষ্ট্র বিরোধী। বিদেশি একটি রাষ্ট্রকে বাংলাদেশের ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করার আহবান র্নিলজ্জ রাজনীতির বহি:প্রকাশ। প্রবাসী বাংলাদেশিরা তার এ ধরনের বক্তব্যে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন।
সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, আমি আশা করবো, ভারত এটি নিশ্চিত করবে, ৯০ দিনের সাংবিধানিক সময়সীমার মধ্যে (বাংলাদেশে) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। অরাজকতা বন্ধ করা হবে এবং আওয়ামী লীগকে প্রচারণা ও পুনর্গঠনের অনুমতি দেওয়া হবে। যদি তা নিশ্চিত করা হয়, আমি এখনো নিশ্চিত। আমরা নির্বাচনে জয়ী হব...। আমরা এখনো সবচেয়ে জনপ্রিয় দল।
গত বুধবার ১৪ আগস্ট ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া এক ভিডিও সাক্ষাৎকারে 'ভারতের প্রতি জয়ের কী বার্তা' জানতে চাইলে তিনি এ কথা বলেন।
সজীব ওয়াজেদ আরও বলেন, তিনি দিল্লিকে নেতৃত্বের ভূমিকা নিতে এবং বাংলাদেশের সংবিধান সমুন্নত রাখার আহ্বান জানাবেন।
সরকারের প্রথম থেকেই কোটার বিরুদ্ধে কথা বলা উচিত ছিল উল্লেখ করে জয় বলেন, আমি মনে করি, আমাদের সরকারের উচিত ছিল কোটার বিরুদ্ধে কথা বলা এবং আদালতের হাতে বিষয়টি ছেড়ে না দিয়ে শুরু থেকেই আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা। কোটা কমাতে আমাদের সরকার সুপ্রিম কোর্টে আপিল করে। আদালত ভুল করেছেন এবং আমরা কোটা চাইনি বলে আমি জনসমক্ষে অবস্থান নিতে বলেছিলাম। কিন্তু আমাদের সরকার তা করেনি। তাদের আশা ছিল, আদালত এটি দেখবে।
আন্দোলন সহিংস রূপ নেওয়ার ক্ষেত্রে বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থা জড়িত বলেও মনে করেন জয়। তিনি বলেন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, একটি বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থা জড়িত। গত ১৫ জুলাই থেকে আন্দোলনকারীদের অনেকের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। গত ১৫ বছরে জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণে আমাদের সফলতার কারণে বাংলাদেশে আগ্নেয়াস্ত্র পাওয়া খুবই কঠিন। কোনো বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থা-ই দেশে আগ্নেয়াস্ত্র পাচার এবং বিক্ষোভকারীদের তা সরবরাহ করতে সক্ষম।
৫ আগস্ট বাংলাদেশ থেকে তার মায়ের বিদায়ের ২৪ ঘণ্টার ঘটনা বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার একদিন আগেও তিনি বা হাসিনা কেউই অনুমান করেননি পরিস্থিতির অবনতি কতটা দ্রুত ঘটবে।
জয় জানান, তার মায়ের দেশ ছাড়ার কোনো ইচ্ছে ছিল না। তিনি পদত্যাগ করতে যাচ্ছিলেন। প্রেসিডেন্টের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে জনগণের উদ্দেশে বিবৃতি দিতে চাচ্ছিলেন। তিনি বিবৃতি প্রস্তুত করছিলেন এবং তা রেকর্ড করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। সবকিছুই পরিকল্পিত ছিল। তিনি যখনই রেকর্ডিং শুরু করতে যান, তখন বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা বলেন, ‘ম্যাম, সময় নেই। আমাদের এখন যেতে হবে।’
জয় বলেন, ‘বাংলাদেশে পরিস্থিতি কেমন হয়, তা দেখার জন্য মা অপেক্ষা করছেন। সম্ভবত, তিনি আপাতত ভারতে থাকবেন।’
শেখ হাসিনার অন্য কোথাও যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাকে হেলিকপ্টারে যেতে হয়েছিল, তাই একমাত্র গন্তব্য ছিল ভারত। প্রধানমন্ত্রী (নরেন্দ্র) মোদীর সরকারকে ধন্যবাদ। তারা দ্রুত সাড়া দিয়েছেৃ। তার জীবন বাঁচিয়েছে এবং তাকে খুব নিরাপদ স্থানে নিয়ে গেছে, যাতে তিনি নিরাপদ থাকেন। বিভিন্ন দেশে তার আশ্রয় আবেদনের কথা বলা হচ্ছে। এসব গুজব। এসব সম্পূর্ণ অসত্য। তিনি কোথাও আশ্রয় আবেদন করেননি।