২২ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘে আসছেন ড. ইউনূস
ঢাকা অফিস
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ০১:১৯ এএম, ১৭ আগস্ট ২০২৪ শনিবার
বাইডেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের সম্ভাবনা
জাতিসংঘের সাধারন পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিচ্ছেন অর্ন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি ঢাকায় বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অর্ন্তবর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মোঃ তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের কাছে একথা জানান। জাতিসংঘ প্রতিনিধি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা জাতিসংঘের সাধারন পরিষদের অধিবেশনে যোগ দেবেন। তাঁর প্রস্তুতির বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। যদিও এ বিষয়ে বিশদ কোনও বর্ণনা তিনি দেননি। এদিকে, জাতিসংঘের সাধারন পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে প্রধান উপদেষ্টা ওয়াশিংটনেও যাবেন। সেখানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে তার দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অপরদিকে, বিগত শেখ হাসিনার আমলে চুক্তিভিত্তিতে নিয়োগ পাওয়া বিদেশে বাংলাদেশের সাত জন রাষ্ট্রদূতকে দেশে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। তার মধ্যে অন্যতম হলেন যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান। জানতে চাইলে তিনি বৃহস্পতিবার টেলিফোনে আজকালকে বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আমাকে দেশে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এখনও আদেশের লিখিত কপি পাইনি। আমাকে আগামী ছয় সপ্তাহের মধ্যে দেশে ফিরে যেতে বলা হয়েছে। উল্লেখ্য, অর্ন্তবর্তী সরকার শেখ হাসিনার আমলে চুক্তিতে নিযুক্ত সকল কর্মকর্তার চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশে সরকার প্রধানের দায়িত্ব গ্রহণের পর যুক্তরাষ্ট্রসহ গোটা পশ্চিমা দুনিয়ায় বেশ উৎফুল্ল ভাব লক্ষ্যণীয়। শেখ হাসিনার আমলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের যে টানাপোড়েন ছিলো তার অবসান ঘটবে বলে আশা করা হচ্ছে। বিগত শেখ হাসিনার সরকারকে পশ্চিম-বিযুক্ত সরকার হিসাবে মনে করা হয়। ওই সরকার মূলত ভারতের সমর্থনপুষ্ট ছিলো। এছাড়াও, চীন, জাপানসহ পূর্বের দেশগুলোর সঙ্গে জোরালো সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলো। ইউনূস ক্ষমতায় যাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমের সঙ্গে পুনঃসংযোগ স্থাপিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতিসংঘের সাধারন পরিষদের অধিবেশনে যোগদানের লক্ষ্যে আগামী ২২ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক পৌঁছবেন বলে আশা করা হচ্ছে। আগামী ২২ ও ২৩ সেপ্টেম্বর তিনি জাতিসংঘ আয়োজিত সামিট ফর ফিউচারে যোগ দেবেন। আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে সাধারন পরিষদে বক্তৃতা ও বিতর্ক শুরু হবে। ড. ইউনূস সেখানেও ভাষণ দেবেন। এছাড়া, জাতিসংঘ সাধারন পরিষদের আরও অনেক ইভেন্টে তিনি যোগ দেবেন। অনেক রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানের সঙ্গে তাঁর দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট একজন জেষ্ঠ্য কর্মকর্তা আজকালের সঙ্গে আলাপকালে বলেছেন, নিউইয়র্কে জাতিসংঘে ড. মুহাম্মদ ইউনূস খুবই জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব। ফলে এখানে তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে অনেক বেশি আলোচনা করার সুযোগ পাবেন। এই নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদের ব্যক্তিগত ভাবমূর্তির কারণে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংকট নিরসনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতা পাওয়ার ব্যাপারেও আশাবাদি ওই কর্মকর্তা। এদিকে, ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস বলেছেন, জেনেভা থেকে আগামী সপ্তাহে জাতিসংঘের একটি ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন’ বাংলাদেশ সফর করবে। বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সহিংসতার বিষয়ে প্রতিনিধি দলটি স্বাধীনভাবে তদন্ত পরিচালনা করবে। বাংলাদেশের পরিস্থিতির বিষয়ে তারা স্বাধীনভাবে তদন্ত পরিচালনা করবে। বিগত শেখ হাসিনার সরকার সাম্প্রতিক সহিংসতার বিষয়ে নিজস্ব তদন্ত পরিচালনায় জাতিসংঘের কারিগরি সহায়তা চেয়েছিলো। কিন্তু অর্ন্তবর্তী সরকার জাতিসংঘকে স্বাধীনভাবে তদন্তের অনুমতি দিয়েছে। জাতিসংঘের তদন্ত দল বাংলাদেশে গত ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত পরিচালিত সহিংসতার তদন্ত করবে।