মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১   ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ঐক্যের কলতানে জ্যাকসন হাইটস বিজনেস এসোসিয়েশন

আজকাল রিপোর্ট -

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ০১:২২ এএম, ১৭ আগস্ট ২০২৪ শনিবার

৭ সেপ্টেম্বর পথ মেলা



দীর্ঘদিনের বিভেদ ভুলে এক হতে যাচ্ছে নিউইয়র্কে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের সবচয়ে সংগঠন জ্যাকসন হাইটস বাংলাদেশি বিজনেস এসোসিয়েশন (জেবিবিএ)। ঐক্যের প্রচেষ্টা হিসাবে সংগঠনটির বিরাজমান দুই পক্ষের যৌথ উদ্যোগে আগামী ৭ সেপ্টেম্বর জ্যাকসন হাইটসে পথ মেলার ঘোষণাও দেয়া হয়েছে। এর পর বসে সংগঠনের দুই পক্ষের ভেদাভেদ ভুলে একই প্লাটফর্মের অধীনে কাজ করার হবে।
মঙ্গলবার জ্যাকসন হাইটসের নবান্ন পার্টি হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন সংগঠনটির নেতারা। অনুষ্ঠানে সংগঠনের সাবেক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বর্তমানে দুই ভাগে বিভক্ত জেবিবিএ। একটির নেতৃত্বে রয়েছেন হারুণ ভুইয়া ও ফাহাদ সোলায়মান। আরেকটি সংগঠনের নেতৃত্বে রয়েছেন গিয়াস আহমেদ ও তারেক হাসান খান। এর বাইরে মাহবুবুর রহমান টুকুও একটি জেবিবিএ’র দাবিদার। তবে এ অংশটি একটিভ নয়।
সংবাদ সম্মেলনে ব্যবসায়ীরা বলেন, প্রায় সাড়ে তিনশ ব্যবসায়ী অধ্যুষিত জ্যাকসন হাইটসের বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের জন্যই এই জেবিবিএ গঠিত হয়। এখান থেকে বিপুল অংকের ট্যাক্স পায় সরকার। কিন্তু বিভক্তির কারণে ব্যবসায়ীরা কোন সুবিধা পাচ্ছে না। এমনকি প্রশাসনের কাছেও তারা তেমন কোন সহযোগীতা পাচ্ছে না। নানান সময় ব্যবসায়ীদের নানা সমস্যায়ও কেউ এগিয়ে আসছে না। কে কোন জেবিবিএ’র সদস্য সে প্রশ্ন উঠে। তাই বাংলাদেশি তথা বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের স্বার্থে জেবিবিএ এক হতে হবে।
একাংশের প্রেসিডেন্ট গিয়াস আহমেদ বলেন, সব ভেদাভেদ ও রাজনৈতিক মতাদর্শ ভুলে দেশের স্বার্থে ও দেশের ব্যবসায়ীদের স্বার্থে সবাইকে এক হতে হবে। এই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবেই আমরা যৌথ ভাবে মেলার আয়োজন করছি। সব বিভেদ ভুলে ভবিস্যতেও ব্যবসায়ীরা এক থাকবে।
অপর অংশের প্রেসিডেন্ট হারুন ভূঁইয়া বলেন, অধিকাংশ ব্যবসায়ীরা চান তাদের সংগঠন যেন এক প্ল্যাটফর্মে থাকে। মেলার মাধ্যমে তা শুরু হচ্ছে। এমন ঐক্য ধরে রাখতে হবে। সবাই এক হয়ে কাজ করব।
সাবেক প্রেসিডেন্ট শাহ নাওয়াজ বলেন, জেবিবিএকে এক করার জন্য কাজ করছি। এটা অনেক দিন ধরেই ব্যবসায়ীদের চাওয়া ছিল। এখন যারা আছেন তাদের মধ্যে পদের জন্য কোন লোভ নেই। তাই আশাকরি জেবিবিএ এক হয়েই কাজ করবে। যাতে আগে জেবিবিএ’র যে সম্মান ছিল তা আবার ফিরিয়ে আনা যাবে। এখানে তারাই নেতৃত্ব দেবে যারা প্রকৃতই ব্যবসায়ী।
সাবেক সভাপতি জাকারিয়া মাসুদ জিকু বলেন, যখন বিভক্তি ছিল না, তখন অনেক কাজ হয়েছে। মত বিভেদ ভুলে এক হলে এ সংগঠন অনেক এগিয়ে যাবে।
একাংশের সেক্রেটারি তারেক হাসান খান বলেন, বিভক্তির কারণে জেবিবিএ এগিয়ে যেতে পারছে না। তাইে ঐক্যের মাধ্যমে সংগঠনটি আবার সম্মানের জায়গায় গিয়ে দাঁড়াবে। কমিউনিটির বাইরেও যেন সবাই মর্যাদার চোখে দেখে।
অপরাংশের সেক্রেটারি একাংশের সেক্রেটারি ফাহাদ সোলায়মান বলেন, জেবিবিএ কারো খেলার জায়গা না। এটা বড় একটা প্লাটফর্ম, সাড়ে তিনশ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা সংগঠন। এক হয়ে যদি মেয়র, গভর্নর বা কোন কাউন্সিলরের কাছে যাবেন তখন তাদের টনক নড়বে। তারা গুরুত্ব দিবে। কিন্তু আরমা আলাদা হওয়ার কারণে তারা দাম দেয় না, সম্মান পাইনা। একটা পার্কিং লট পাচ্ছি না, রাস্তা ঠিক করতে লাগে ১৫ বছর। এ সবের অবসান ঘটাতে হবে। সব জায়গায় সংস্কার চলছে, জেবিবিএতেও সংস্কার হবে।
জয়েন্ট সেক্রেটারি মফিজবলেন, জ্যাকসন হাইটসে জেবেবিএ একটাই থাকবে। যেন কেউ বলতে না পারে আপনি কোন জেবিবিএর সদস? এমন আর শুনতে চাইনা।
ব্যবসায়ী আসেফ বারি টুটুল বলেন, সবাইকে সম্মান করতে হবে। দুই পক্ষ বসে দ্রুত সমাধান করতে হবে। আমরা আর বিভক্তি চাই না। জ্যাকসন হাইটস আমেরিকার অন্যতম একটা বড় ব্যবসায়ী জায়গা। এক একসময় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীও এখানকার ব্যবসায়ীদের মূল্যায়ন করতেন। কিন্তু কাল ক্রমে তা হারিয়ে গেছে। সেই হারানো অতীত  আবার ফিরিয়ে আনতে হবে।
সাবেক সেক্রেটারি আবুল ফজল দিদারুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ আবুল হাসান ও জেড আলম নবীসহ অন্যরা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
এদিকে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। মেলার পর দুই পক্ষের গ্রহনযোগ্য ব্যাক্তিদের সমন্বয়ে ১০ থেকে ১২ সদস্যের একটি অন্তবর্তী কালীন কমিটি আগামী দুই বছর সংগঠনের কার্যক্রম চালাবে। পরবর্তীতে তারা একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন কমিটির কাছে সংগঠনের দায়িত্ব ছেড়ে দেবে।
আগামী ৭ সেপ্টেম্বর শনিবার এ মেলা অনুষ্ঠিত হবে। দিনব্যাপী এ মেলার মেলার আহ্বায়ক করা হয়েছে কামরুজ্জামান কামরুলকে। সদস্য সচিব থাকবেন তারেক হাসান খান। মেলায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছাড়াও দেশি বিদেশি নানা পণ্যের শতাধিক স্টল থাকবে। এছাড়া দর্শনার্শীদের বিনোদনের জন্যও থাকবে নানা ব্যবস্থা।