বৃহস্পতিবার   ২৮ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১৪ ১৪৩১   ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বাংলাদেশ নিয়ে স্টেট ডিপার্টমেন্টের সর্বোচ্চ সতর্কতা

হাসান মাহমুদ

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ০১:৩৯ এএম, ১৭ আগস্ট ২০২৪ শনিবার

ঢাকার মার্কিন দূতাবাসে কনসুলার সেবা বন্ধ

 

বাংলাদেশে সহিংস পরিস্থিতিতে মার্কিন স্টে ডিপার্টমেন্টের জারি করা ‘লেবেল ৪ সতর্কতা’ এখনও বলবৎ রয়েছে। ছাত্র সমাজের কোটা সংস্কার আন্দোলনে শতশত শিক্ষার্থীর প্রাণহানির ঘটনায় উত্তাল হয়ে ওঠা বাংলাদেশ নিয়ে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট এই সতর্কতা জারি করে। সহিংস পরিস্থিতিতে ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসে কর্মরত ‘নন ইমার্জেন্সি’ এমপ্লয়ি এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের দ্রুত বাংলাদেশ ত্যাগ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। দূতাবাস ভিসা সংক্রান্ত সকল সেবামূলক কার্যক্রম অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ করে দিয়েছে। জনগুরুত্বপূর্ণ এই পরিষেবা আবার কবে চালু হবে সে সম্পর্কে কোন তথ্য জানানো হয়নি।
ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের ‘কম গুরুত্বপূর্ণ’ দায়িত্বে থাকা সরকারী কর্মচারী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের জরুরীভাবে বাংলাদেশ ত্যাগ করার নির্দেশনার ফলে ৫ আগস্টের আগে-পরে তারা বাংলাদেশ ত্যাগ করেছেন বলে জানা গেছে। ফলে বাংলাদেশে ভিসা পরিষেবামূলক সব ধরনের কাজ বন্ধ হয়ে গেছে বলে স্টেট ডিপার্টমেন্টের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। ঢাকাস্থ মিশন কর্মীদের গুলশান বারিধারার মার্কিন দূতাবাসের সীমানায় ‘ডিপ্লোমেটিক অ্যানক্লেভ’-এ সীমাবদ্ধ চলাচলের মধ্যে থাকতে হচ্ছে বলে দূতাবাসের নোটিশে জানানো হয়েছে।
স্টেট ডিপার্টমেন্টের নোটিশে বলা হয়েছে, ঢাকায় চলমান নাগরিক অস্থিরতার কারণে ভ্রমণকারীদের বাংলাদেশে যাওয়া উচিত নয়। ঢাকা শহর, তার আশপাশের অঞ্চল এবং সারা বাংলাদেশ জুড়ে সহিংস সংঘর্ষ হয়েছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে দেশব্যাপী মোতায়েন রাখা হয়েছে। গত ৫ আগস্ট ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়। এখন আংশিকভাবে তা চালু করা হয়েছে।
সতর্কতায় মার্কিন নাগরিকদের উদ্দেশ্যে বলা হয়, নাগরিক অস্থিরতা, অপরাধ এবং সন্ত্রাসমূলক কার্যক্রমের কারণে বাংলাদেশ ভ্রমণ করবেন না। পর্যটন স্থান, পরিবহন কেন্দ্র, বাজার, শপিংমল, রেস্তোরাঁ, উপাসনালয়, স্কুল ক্যাম্পাস এবং সরকারী সুবিধাগুলির মতো সার্বজনীন এলাকাগুলিকে লক্ষ্য করে সন্ত্রাসী হামলা যে  কোন সতর্কতা ছাড়াই ঘটতে পারে।
বাংলাদেশের খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি এবং বান্দরবান পার্বত্য জেলাগুলিতে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা, অপরাধ, সন্ত্রাস, অপহরণ এবং অন্যান্য ধরনের ঝুঁকির সম্মুখিন হবার আশংকা রয়েছে। বিভিন্ন বিরোধ ছাড়াও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের লক্ষ্যবস্তুসহ এই অঞ্চলে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে।
বিচ্ছিন্নতাবাদি সংগঠন এবং রাজনৈতিক সহিংসতা এই অঞ্চলে দর্শনার্থীদের জন্য অতিরিক্ত হুমকি সৃষ্টি করে এবং সাম্প্রতিককালে আইইডি বিস্ফোরণ এবং সক্রিয় গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। পার্বত্য ওই এলাকায় ভ্রমণের পরিকল্পনা থাকলে বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের পূর্ব অনুমোদন প্রয়োজন দরকার হবে বলে নোটিশে জানানো হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়েছে- ‘ঢাকাসহ দেশজুড়ে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও হামলার ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠিকে সহিংসতা ও হয়রানির লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। বিচ্ছিন্ন সহিংস ঘটনা অব্যাহত রয়েছে এবং পরিস্থিতি অত্যন্ত অপ্রত্যাশিত পর্যায়ে অবস্থান করছে।
সারাদেশে সেনাবাহিনী মোতায়েন রয়েছে, পুলিশ সদস্যরা ধীরে ধীরে তাদের পদে ফিরতে শুরু করেছে। দূতাবাসের নোটিশে ঢাকাস্থ মার্কিন নাগরিকদের ব্যাপারে সতর্কতা জারি করে বলা হয়েছে, বিক্ষোভ এড়িয়ে চলুন। যে কোন বড় সমাবেশের আশপাশে সতর্কতা অবলম্বন করুন। ব্যক্তিগত নিরাপত্তা পরিকল্পনা পর্যালোচনা করুন। স্থানীয় অনুষ্ঠানসহ আপনার আশপাশের ব্যাপারে সর্বদা সচেতন থাকুন’।