বৃহস্পতিবার   ২৮ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১৪ ১৪৩১   ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তদন্তে ঢাকায় জাতিসংঘ প্রতিনিধি দল

আজকাল রিপোর্ট -

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ০৪:২৩ এএম, ২৪ আগস্ট ২০২৪ শনিবার

ছাত্র-জনতা হত্যাকান্ডে নতুন নজির স্থাপন হতে যাচ্ছে
 

 
 
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে র‌্যাব, পুলিশ, বিজিবি ও সন্ত্রাসিদের গুলিতে নিরস্ত্র শতশত ছাত্র- জনতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। আহত এবং পঙ্গুত্ব বরণ করেছে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী। স্বৈরাচার পতনে কোন দেশে শিক্ষার্থীদের এমন আত্মত্যাগ বিরল। জাতিসংঘের প্রতিবেদন মতে ৬৫০ জন নিহত হয়েছেন। আন্দোলনকারীরা মনে করছেন, নিহতের সংখ্যা আরও বেশি। এমন অবস্থায় জাতিসংঘের সুইজারল্যান্ডের জেনেভা অফিস থেকে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ঢাকায় অবস্থান করছে। তারা হত্যাকান্ড ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টির প্রাথমিক তদন্ত কাজ এবং বিভিন্ন মহলে আলোচনা করবেন বলে জানা গেছে। রাষ্ট্র কর্তৃক অপরাধ সংঘটিত করার পর তা উন্মোচনে জাতিসংঘ থেকে তদন্ত শুরুর বিষয়টি বাংলাদেশে নতুন নজির স্থাপন হতে চলেছে।
গত ১৪ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত হত্যাকা-সহ সামগ্রিকভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের যেসব ঘটনা সারাদেশে ঘটেছে, তার প্রাথমিক তথ্য অনুসন্ধানের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে জাতিসংঘের তিন সদস্যের প্রতিনিধিদল। জানা গেছে, এটি জাতিসংঘের প্রাথমিক তদন্ত দল। তারা তথ্যানুসন্ধান করবে। এই টিম ফিরে যাওয়ার পর আরেকটি টিম আসবে। যারা ঘটনাগুলো বিস্তারিত তদন্ত করবে। এই দলটি ২৮শে আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশে থাকছে। প্রাথমিক তদন্ত টিম মূলত, কীভাবে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করবে। গতকাল বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বৈঠক শেষে জাতিসংঘের হাইকমিশনার দপ্তরের এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রধান রোরি মুঙ্গোভেন বলেন, আমরা কীভাবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সহায়তা করতে পারি সে বিষয়ে প্রাথমিক ও প্রাক-অনুসন্ধান আলোচনা করেছি। অন্তর্বর্তী সরকার ও বাংলাদেশের জনগণের এ
ঐতিহাসিক মুহূর্তে কীভাবে সহায়তা করতে পারি, সে বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। তবে, বাংলাদেশে আসা জাতিসংঘের তিন সদস্যেও এই প্রতিনিধিদলটি মূল তদন্ত দল নয় বলে জানিয়েছেন রোরি মুঙ্গোভেন। তিনি জানান, প্রতিনিধি দলটি অন্তর্বর্তী সরকার, উপদেষ্টা,
কয়েকটি মন্ত্রণালয় ও সুশীল সমাজের সঙ্গে কথা বলে তাদের চাহিদা এবং অগ্রাধিকার সম্পর্কে জানবে। এক্ষেত্রে হাইকমিশনারের অফিস কীভাবে সহায়তা করতে পারে, সেটিও বোঝার চেষ্টা করবে তারা।
রোরি মুঙ্গোভেন আরও বলেন, বাংলাদেশের জনগণ বিশেষ করে তরুণরা গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষায় যে সাহসিকতা দেখিয়েছেন, তাতে জাতিসংঘ মানবাধিকার বিষয়ক কমিশনার ভলকার টুর্ক অনুপ্রাণিত হয়েছেন। গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা, প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার এবং মানবাধিকারকে এগিয়ে নিতে ভলকার টুর্ক এটিকে ঐতিহাসিক সুযোগ হিসাবে দেখছেন। এই প্রেক্ষাপটে অন্তর্বর্তী সরকার, নাগরিক সমাজ ও বাংলাদেশের জনগণকে যেকোনো ধরনের সহায়তা করতে রাজি আমরা।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান দমনে শেখ হাসিনা সরকারের নৃশংসতা বিশেষ করে নির্বিচারে গুলি, হত্যা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলো তদন্ত করতেই জাতিসংঘের ৩ সদস্যের টিম প্রাথমিক কাজগুলো শেষ করবে।