শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১   ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রেমিট্যান্সের পালে হাওয়া লেগেছে

আজকাল রিপোর্ট -

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ০১:৪৫ এএম, ৩১ আগস্ট ২০২৪ শনিবার

নিউইয়র্কের ব্যবসায়ীরা খোশ মেজাজে

 
 
বাংলাদেশে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রবাহের পালে হাওয়া লেগেছে। বৈধ পথে নিউইয়র্কের প্রবাসীরা আগের চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণে রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন। গত মাত্র ২৮ দিনে বিভিন্ন দেশের প্রবাসীরা বাংলাদেশে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা। এত অল্প সময়ে কোন শিল্প কারখানা থেকে পণ্য রপ্তানি করেও এই পরিমাণ অর্থ আয় সম্ভব নয় বলে রেমিট্যান্স ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন। নিউইয়র্ক থেকে আগের যে কোন সময়ের চেয়ে বেশি রেমিট্যান্স পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কে গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রতি ডলার কেনা হয় ১২০ টাকা ৫০ পয়সা দরে। সেই সঙ্গে থাকছে ২.৫ শতাংশ প্রণোদনা। নিউইয়র্কে বাংলাদেশের অন্যতম সরকারী আর্থিক প্রতিষ্ঠান সোনালী ব্যাংক স্থানীয়ভাবে প্রতি ডলার কিনছে ১১৯ টাকা ৫০ পয়সা হিসেবে। সেই সঙ্গে দেয়া হচ্ছে ২.৫ শতাংশ হারে প্রণোদনা। গত এক সপ্তাহ আগেও প্রতিষ্ঠানটি এই দর দিতে অপারগতা প্রকাশ করেছিল। বাংলাদেশের বাজারে ডলারের ব্যাপক চাহিদা থাকার কারণে ব্যাংকগুলো ডলার সংগ্রহ করতে মাঠে নেমেছে। বাংলাদেশের খোলা বাজাওে ডলার এখনো ১২৫ টাকা দরে পাওয়া যাচ্ছে বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।
 গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশে সরকার পতনের পর রেমিট্যান্স প্রবাহ  থেমে গিয়েছিল। হতাশা গ্রাস করেছিল ব্যবসায়ীদের। অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর গত ১৫ দিনে রেমিট্যান্সের ধারা আগের যে কোন সময়ের চেয়ে অনেক বেশি গতি পেয়েছে। ফলে নিউইয়র্কের রেমিট্যান্স ব্যবসায়ীরা এখন রয়েছেন খোশ মেজাজে।
বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ গতকাল বৃহস্পতিবার তাদের সাইটে জানিয়েছে, আগস্ট মাসের ২৮ তারিখ পর্যন্ত দেশে বৈধ পথে রেমিট্যান্স ঢুকেছে ২০৭ কোটি মার্কিন ডলার বা ২.০৭ বিলিয়ন ডলার। প্রতি ডলার ১২০ টাকা হিসেবে ২৪ হাজার ৮০০ কোটি টাকার বেশি। গত বছর আগস্ট মাসের প্রথম ৪ সপ্তাহে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স বাংলাদেশে গেছে তার তুলণায় এবার তা ৬৪ কোটি ডলার বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সূত্র জানায়,  গত এপ্রিল, মে এবং জুন টানা তিন মাস দুই বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স বাংলাদেশে ঢুকেছে। জুলাইয়ে উত্তাল ছাত্র আন্দোলনে তা দ্রুত ২ বিলিয়ন ডলারের নিচে নামতে থাকে। তবে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে প্রবাসীরা বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠাতে উৎসাহিত হচ্ছেন। আগামীতে বৈধ পথে আরও বেশি পরিমাণ প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন সংশ্লিষ্টরা।
নিউইয়র্কে রেমিট্যান্স ব্যসায়িদের সংগঠন ‘এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশি আমেরিকান মানি ট্রান্সফার্স এন্ড এজেন্টস (এবিএএমটিএ) এর কর্মকর্তারা জানান, গত ৪ সপ্তাহ আগের চিত্র এখন আর নেই। প্রবাসীরা নিজ উদ্যোগে আগের চেয়ে বেশি পরিমাণে রেমিট্যান্স দেশে পাঠাচ্ছে।
দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ২০.৪৮ বিলিয়ন ডলার। ২৮ আগস্ট তা কিছুটা বেড়ে ২০ দশমিক ৫৯ বিলিয়নে দাঁড়ায়। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিজস্ব হিসাব পদ্ধতি অনুযায়ী, দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন ২৫.৪৭ বিলিয়ন ডলার।
নিউইয়র্কের রেমিট্যান্স ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, আগামী কয়েক মাসে ব্যাংকিং চ্যানেলে এই প্রবাহে আরও গতি আসবে।