আইনপ্রণেতা ফয়ছল চৌধুরীকে গ্লোবাল এনআরবি চেম্বারের সংবর্ধনা
আজকাল রিপোর্ট -
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ০২:১০ এএম, ৩১ আগস্ট ২০২৪ শনিবার
স্কটল্যান্ডের পার্লামেন্টে নির্বাচিত বাংলাদেশি বংশোদ্ভুতি প্রথম আইনপ্রণেতা ফয়ছল চৌধুরী এমবিইকে সংবর্ধনা দিয়েছে গ্লোবাল এনআরবি চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি। বুধবার সন্ধ্যায় জ্যাকসন হাইটসের নবান্ন পার্টি সেন্টারে এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান গ্লোবাল এনআরবি চেম্বারের সভাপতি শাহ নাওয়াজসহ অন্যরা। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন খলিল বিরিয়ানির কর্ণধার খলিলুর রহমান, বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান সেলিম কামরুজজামান কামরুল, দাদা হোম কেয়ারের কর্ণধার খোকন ইসলাম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন গ্লোবাল এনআরবি চেম্বারের নির্বাহী সদস্য মশিউর রহমান মজুমদার।
শাহ নাওয়াজ বলেন, বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত কোন ব্যক্তি অন্য দেশের পার্লামেন্ট সদস্য হওয়া আমাদের জন্য গর্বের। তবে নিউইয়র্কে আমরা অনেক পিছিয়ে রয়েছি। এখানে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের পদযাত্রা মাত্র শুরু হয়েছে। ভবিষ্যতে ইনশাল্লাহ আমরা শক্ত অবস্থানে থাকতে পারব।
খলিল বিরিয়ানির কর্ণধার খলিলুর রহমান বলেন, ফয়সাল ভাই শুধু সংসদ সদস্যই নয় তিনি ইউরোপ এন্ড ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট বিভাগের ছায়া মন্ত্রীও। ব্রিটেনে মূল ধারার রাজনীতিতে বাংলাদেশিদের সুনাম রক্ষায় তিনি অনন্য ভূমিকা রাখছেন।
সংবর্ধনার জবাবে ফয়সাল চৌধুরী বলেন, প্রবাসেও দেশীয় রাজনীতি নিয়ে সবাই নানা ধারায় বিভক্ত। এখানে কেউ আওয়ামী লীগ কেউ বিএনপি কিংবা জাতীয় পার্টি হয়ে গেছে। কেউই বাংলাদেশি পরিচয় দেয় না। বাংলাদেশি খুঁজে পাওয়া যায় না। জাতিগতভাবে ঐক্যবদ্ধ হতে পারছি না বলে সমাজে নিজের অধিকার ও মর্যাদা আদায়ে সক্ষম হচ্ছি না। অথচ আগামী প্রজন্ম ও বাংলাদেশের কল্যাণে মূলধারার রাজনীতিতে অধিষ্ঠিত হবার বিকল্প নেই। নির্বাচনে জয়ের পর আমার এলাকার স্থানীয় বাংলাদেশিরা আমাকে সংবর্ধধনা দেয়। সেখানে প্রায় ১৮০০ বৃটিশ বাংলাদেশি ভোটার রয়েছেন। অথচ কাউন্সিলর হতে মাত্র ৯০০ ভোট প্রয়োজন। তারা জানাল, সেখানে বাংলাদেশি কেউ দাঁড়ালে অন্যরা ভোট দেয় না। সিলেটি দাঁড়ালে ঢাকাইয়ারা ভোট দেন না, বরিশাইল্যা দাঁড়ালে চাঁটগাইয়ারা অথবা নোয়াখালিরা ভোট দেন না। ফলে তাদের কাউন্সিলর ব্রিটিশ। পরে বাংলাদেশি একজন কাউন্সিলর প্রার্থী হয়ে জয়ী হয়। শুধু তাই নয় কোন আসনে লেবার পার্টি থেকে কেউ প্রার্থী হলে, তার বিরুদ্ধে কঞ্জারভেটিভ পার্টি থেকে আরেক বাংলাদেশি দাঁড়িয়ে যান। ফলে অন্য পার্টির ব্রিটিশ প্রার্থীরা জয়ী হয়ে যান। এমনকি মসজিদ কমিটি করতে গেলেও আমরা বিভক্ত হই।
নিউইয়র্ক প্রবাসীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমি একজন রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ী থেকে পার্লামেন্ট সদস্য হতে পারলে আপনারাও পারবেন। আপনারা ঐক্যবদ্ধ হলে ইউএস কংগ্রেসে জায়গা করে নিতে পারবেন। শুধু তাই নয়, যে হারে কম্যুনিটি সমৃদ্ধ হচ্ছে, তার মাধ্যমে নিজেরাই শুধু নন, আগামী প্রজন্মকেও মার্কিন রাজনীতির শীর্ষে অধিষ্ঠিত হবার পথ সুগম করতে পারবেন। কারণ এখানে রাজনীতি করা খুবই সোজা। রাজনীতি করতে টাকা খরচ করতে হয় না, একটু কঠোর পরিশ্রম করতে হয়। তবে সততা থাকতে হবে। আমি আশা করছি পরবর্তীতে যখন নিউইয়র্ক আসবো তখন সিনেটর অথবা কংগ্রেসম্যান হিসেবে কাউকে দেখবো।
উল্লেখ্য, লেবার পার্টির এ আইন প্রণেতা এডিনবরাতে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ও সামাজিক কর্মকান্ডের সফল সংগঠক হিসেবে সুপরিচিত। সামাজিক ও আন্তর্জাতিক কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ ব্রিটেনের রাণী এলিজাবেথের কাছ থেকে তিনি সম্মানজনক রাজকীয় উপাধি মেম্বার অব ব্রিটিশ এম্পায়ার (এম.বি.ই) লাভ করেন। তিনি এডিনবরা ও লুদিয়ান্স রিজিওন্যাল ইকুয়ালিটি কাউন্সিলের চেয়ারম্যান। বাংলাদেশে তার বাড়ি হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার বদরদী গ্রামে।