বৃহস্পতিবার   ২৮ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১৩ ১৪৩১   ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মার্কিন নির্বাচনের জরিপে কে এগিয়ে, হ্যারিস নাকি ট্রাম্প?

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ০২:০১ এএম, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ বুধবার

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট কে হবেন, সেটি নির্ধারিত হবে আগামী ৫ নভেম্বরের নির্বাচনে। তবে এই নির্বাচনে দুই প্রার্থীর মধ্যে যে লড়াইটা বেশ হাড্ডাহাড্ডি হতে যাচ্ছে সেটা কিছু হলেও আভাস পাওয়া যাচ্ছে।

অবশ্য প্রাথমিকভাবে এই নির্বাচনে বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এবারের লড়াইটা বেশ জমবে বলে ধারণা করা হচ্ছিলো। কিন্তু গত জুলাইয়ে বাইডেন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়ে ভাইস-প্রেসিডেন্ট কমালা হ্যারিসকে সমর্থন দেন।

মূলত এরপর থেকেই ডেমোক্রেটিক ও রিপাবলিকান, উভয় শিবিরেই নিজ নিজ প্রার্থীর পক্ষে বেশ জোর প্রচারণা চালাতে দেখা যাচ্ছে।

মঙ্গলবার দুই প্রার্থী হ্যারিস ও ট্রাম্পের সরাসরি টেলিভিশন বিতর্কে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে। বিতর্ক সামনে রেখে দুই প্রার্থীই ইতোমধ্যে নিজেদের প্রস্তুতি শেষ করেছেন বলে জানা যাচ্ছে।

কিন্তু প্রশ্ন হলো, নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফল আসলে কী হবে? মার্কিন নাগরিকরা কি প্রথমবারের মতো একজন নারী প্রেসিডেন্ট বেছে নিবেন, নাকি ডেমোক্রেটিক প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে দ্বিতীয়বারের মতো রাষ্ট্র ক্ষমতায় বসাবেন?

জরিপে কার অবস্থান কী?

চলতি বছরের শুরুর দিকেও নির্বাচনি দৌড়ে বেশ পিছিয়ে ছিলেন রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্প। কিন্তু গত জুনে টেলিভিশন বিতর্কে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের খেই হারানোর ঘটনায় বেশ সুবিধা পান তিনি।

পরে বাইডেনকে সরিয়ে ডেমোক্র্যাটরা কমলা হ্যারিসকে প্রার্থী করলেও দৃশ্যপটে খুব একটা পরিবর্তন আসবে না বলে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন বিশ্লেষকরা। কিন্তু নতুন একটি নির্বাচনি জরিপের ফলাফল ভিন্ন কথা বলছে।

মার্কিন গণমাধ্যম এবিসি নিউজের ওই জরিপে দেখা যাচ্ছে, ট্রাম্পের চেয়ে জনসমর্থনে বেশ খানিকটা এগিয়ে রয়েছেন হ্যারিস। সম্প্রতি শিকাগোতে নিজ দলের সম্মেলনের পরে প্রায় ৪৭ শতাংশ ভোটারের সমর্থন পেয়েছেন তিনি। গত ২২ আগস্টের ওই সম্মেলনে মার্কিন নাগরিকদের জন্য নতুন পথে এগিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন কমলা।

এদিকে রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্পের পক্ষে জনসমর্থন রয়েছে প্রায় ৪৪ শতাংশ। গত ২৩ আগস্ট আরেক রিপাবলিকান প্রার্থী রবার্ট এফ কেনেডি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়ে সাবেক এই প্রেসিডেন্টকে সমর্থন দেওয়ার পরও জনসমর্থনে খুব একটা পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়নি।

অন্যদিকে নিউইয়র্ক টাইমস ও সিয়েনা কলেজ যৌথভাবে আরেকটি জরিপ চালিয়েছে, যার ফলাফল গত রোববার প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে বলা হচ্ছে, জনসমর্থনের দিকে বিবেচনায় এগিয়ে রয়েছেন ৭৮ বছর বয়সি ট্রাম্প। ওই জরিপে তিনি ৪৮ পয়েন্ট পেয়েছেন।

অন্যদিকে, তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী কমলা হ্যারিস এক পয়েন্ট কম পেয়ে সামান্য পিছিয়ে রয়েছেন। তবে উইসকনসিন, মিশিগান ও পেনসিলভানিয়ায় সামান্য ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন ৫৯ বছর বয়সি এই ডেমোক্র্যাট প্রার্থী।

আবার সিবিএস ও ইউগভের একটি জরিপের ফলাফলে ট্রাম্প ও কমলা হ্যারিসের মধ্যে তুমুল লড়াইয়ের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। যদিও নতুন এসব জরিপের ফলাফলে আগামী নির্বাচনে বিজয়ী প্রার্থী সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাচ্ছে, সেটি নিশ্চিত করে বলা যাবে না। কারণ এখানে ভোটারদের কাছে প্রার্থী হিসেবে কে কতটা জনপ্রিয়, সেটিই উঠে এসেছে।

তাছাড়া ইলেক্টোরাল কলেজ সিস্টেম ব্যবহার করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যেভাবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে থাকে, সেখানে সবচেয়ে বেশি ভোট পাওয়া অনেক সময় কাজে নাও আসতে পারে।

কেননা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বেশ কিছু অঙ্গরাজ্য রয়েছে যেখানে অধিকাংশ সময়ে একই দল জয়লাভ করে থাকে, তবে এমন অনেক অঙ্গরাজ্যও রয়েছে, যেখানে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের মাধ্যমে দুই প্রার্থীর যে কেউ বিজয়ী হতে পারে। মূলত ওইসব রাজ্যের ফলাফলই পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্ধারণের ক্ষেত্রে পার্থক্য গড়ে দিয়ে থাকে।

জরিপের ফলাফল বলছে, উইসকনসিন, মিশিগান ও পেনসিলভানিয়ার মতো অঙ্গরাজ্যগুলোতে সামান্য ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন কমলা। আর হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে নেভাদা, জর্জিয়া, নর্থ ক্যারোলাইনা এবং অ্যারিজোনায়। এসব অঙ্গরাজ্যে দুই প্রার্থীর জনসমর্থন প্রায় সমানে সমান বলে জানা যাচ্ছে।

সূত্র : বিবিসি বাংলা