হাসিনার পথেই মমতা: পদত্যাগে রাজি
আজকাল ডেস্ক
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ০২:০২ এএম, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ শনিবার
আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করতে রাজি আছেন বলে জানিয়েছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, তিনি পদত্যাগ করতে রাজি আছেন। কিন্তু কেউ কেউ বিচার চান না। চান ক্ষমতার চেয়ার। ১২ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠকের জন্য নবান্নের সভাঘরে দুই ঘণ্টার বেশি সময় বসে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু বৈঠক হয়নি না। এরপর নবান্ন থেকে সাংবাদিকদের মমতা এ কথা বলেন। ভারতের আরজি কর-কা-ের প্রতিবাদে গত মঙ্গলবার থেকে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। এর আগে পরপর দুদিন তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার তৃতীয় বারের জন্য বৈঠকের ডাক দিলেও তা হয়নি।
মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে প্রথম থেকেই দুটি প্রধান শর্ত দিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। তারা চেয়েছিলেন, এই বৈঠকের সরাসরি সম্প্রচার হোক। ৩০ জন প্রতিনিধি নিয়ে নবান্নে বৈঠক করতে চেয়েছিলেন তারা। তবে এই দুই শর্তেই আপত্তি জানায় রাজ্য।
বৃহস্পতিবার নবান্ন থেকে মমতা বলেন, তিন দিনেও সমাধান করতে পারলাম না। বাংলার মানুষের কাছে ক্ষমা চাইছি। যারা নবান্নের সামনে এসেও বৈঠকে এলেন না, তাদের আমি ক্ষমা করলাম। আমাকে অনেক অসম্মান করা হয়েছে। আমার সরকারকে অসম্মান করা হয়েছে। অনেক ভুল-বোঝাবুঝি, কুৎসা হয়েছে। সাধারণ মানুষ রং বোঝেনি। আমি পদত্যাগ করতে রাজি আছি। কিন্তু ওরা বিচার চায় না। চেয়ার চায়। আশা করি, মানুষ সেটা বুঝবেন।
মমতা জানান, অনেকেই বৈঠকে আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বাইরে থেকে সমঝোতা না করার নির্দেশ এসেছে, এ জন্য দু-তিনজন রাজি হননি। আমি মানুষের কাছে ক্ষমা চাইছি। ডাক্তারদের অনুরোধ করছি, কাজে ফিরুন।
নবান্নের বৈঠক থেকে মমতা সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের প্রসঙ্গও তোলেন। তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, সময় পেরিয়ে গিয়েছে। আমি যত দূর জানি, সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, রাজ্য পদক্ষেপ করলে তারা বাধা দেবে না। কিন্তু আমি কিছু করব না।
মমতা বলেন, বহু মানুষ চিকিৎসা পাচ্ছেন না। ইতিমধ্যে ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। সাত লাখ মানুষ বঞ্চিত হয়েছেন। আমার হৃদয় কাঁদছে। ওরা ছোট, আমি ওদের ক্ষমা করছি। বাংলার মানুষের কাছে আমি ক্ষমা চাইছি। তিন দিন চেষ্টা করেও সমাধান করতে পারলাম না।
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, এর পরও যদি জুনিয়র চিকিৎসকরা বৈঠক করতে চান, তবে মুখ্য সচিব এবং নবান্নের অন্যান্য কর্মকতারা যেন বৈঠক করেন এবং তাদের বক্তব্য শোনেন। তবে তিনি আপাতত আর আলোচনায় থাকছেন না।
এদিকে কলকাতা সহ পশ্চিমবঙ্গেও সর্বত্র উঠে আসছে ১ মাস আগে বাংলাদেশের ছাত্রআন্দোলনের কথা। কোটা বিরোধী আন্দোলনের এক পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হয়।পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন ভারতে। পশ্চিম বঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় আরজি কর-কা-ের আন্দোলনের কাছে নতি স্বীকার করে পদত্যাগে রাজি হয়েছেন। তবে এখনও ঘোষণা দেন নি। সেখানে রাজনীতিক বোদ্ধারা বলছেন, হাসিনার পথেই হাঁটছেন মমতা।