রোববার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১   ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কলকাতায় ‘সেমিকন্ডাক্টর কারখানা’ প্রতিষ্ঠা করবে যুক্তরাষ্ট্র!

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ০৯:০৪ এএম, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ সোমবার

পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতায় এবার তৈরি হতে পারে ‘সেমিকন্ডাক্টর কারখানা’। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। রোববার ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে এক বিবৃতি জারি করে এ কথা জানানো হয়েছে। চতুর্দেশীয় অক্ষ বা ‘কোয়াড’ সদস্য রাষ্ট্রগুলোর বৈঠকে যোগ দিতে আমেরিকায় গিয়েছেন মোদি। তার মাঝেই দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয়েছে। ওই বৈঠকেই কলকাতায় ‘সেমিকন্ডাক্টর কারখানা’ তৈরির সম্ভাবনাময় দিক নিয়েও আলোচনা হয়েছে দু’পক্ষের। প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে জানানো হয়েছে, এর ফলে দুই দেশেরই কর্মসংস্থান তৈরি হবে।

সেমিকন্ডাক্টর হলো এমন এক ধরনের বস্তু, যা নির্দিষ্ট কিছু পরিস্থিতিতে তড়িৎবাহী হতে পারে। মূলত বিভিন্ন ধরনের ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রপাতিতে সেমিকন্ডাক্টর ব্যবহার করা হয়। মোবাইল হোক বা ক্যামেরা, কিংবা ল্যাপটপ, টিভি- এই যন্ত্রগুলোকে সচল রাখে এক বিশেষ ধরনের ‘চিপ’ বা ‘মাইক্রোচিপ’। এই ‘চিপ’ তৈরির ক্ষেত্রে একটি অত্যাবশ্যকীয় উপাদান হলো সেমিকন্ডাক্টর। প্রযুক্তির সাথে তাল মিলিয়ে বর্তমান বিশ্বে সেমিকন্ডাক্টর ক্ষেত্রের গুরুত্বও ক্রমেই বাড়ছে।

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, জাতীয় নিরাপত্তা, নতুন প্রজন্মের টেলিযোগাযোগ এবং দূষণমুক্ত পরিবেশ গড়ার লক্ষ্যে অত্যাধুনিক সেন্সিং এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে কথা হয়েছে দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের। সেই প্রসঙ্গেই সেমিকন্ডাক্টর তৈরির একটি নতুন কারখানার (প্ল্যান্ট) তৈরি নিয়ে সদর্থক আলোচনা হয়েছে উভয়ের।

এই কারখানা তৈরির মূল উদ্দেশ্য ইনফ্রারেড, গ্যালিয়াম নাইট্রাইড এবং সিলিকন কার্বাইড সেমিকন্ডাক্টর তৈরি করা। যা ভারতের ‘সেমিকন্ডাক্টর মিশন’-এর সাথে সাযুজ্যপূর্ণ বলে দাবি প্রধানমন্ত্রীর দফতরের। এ বিষয়ে আলোচনার সময়ে উঠে আসে ‘গ্লোবাল ফাউন্ডারিজ’ নামে নিউ ইয়র্কের একটি বহুজাতিক সংস্থার নাম। এই সংস্থা বিভিন্ন দেশের সেমিকন্ডাক্টর প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছে। এ বার কলকাতাতেও ওই সংস্থার একটি কারখানা তৈরির সম্ভাবনা।

সেমিকন্ডাক্টর শিল্প গড়ে তুলতে ৫০ শতাংশ ছাড় প্রযুক্তি সংস্থাগুলোকে, ঘোষণা মোদির
মোদী ও বাইডেন উভয়েই কলকাতায় ‘গ্লোবাল ফাউন্ডারিজ’-এর একটি কারখানা তৈরির বিষয়ে সহমত হয়েছেন। যার পোশাকি নাম হবে ‘জিএফ কলকাতা পাওয়ার সেন্টার’। প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে জানানো হয়েছে, এই সেমিকন্ডাক্টর কারখানার থেকে তৈরি হওয়া ‘চিপ’ দূষণমুক্ত দেশ গঠনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে। পাশাপাশি ইন্টারনেট নির্ভর যন্ত্র ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্ষেত্রেও উন্নতি হবে।

উল্লেখ্য, এবারের লোকসভা নির্বাচনের আগে তিনটি সেমিকন্ডাক্টর কারখানার প্রস্তাবিত প্রকল্পে সম্মতি দিয়েছিল ভারত সরকার। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে গুজরাতের সানন্দে আরো একটি সেমিকন্ডাক্টর কারখানা তৈরিতে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে ভারত সরকার। সেটি তৈরি করছে ‘কেন্স সেমিকন’ নামে একটি সংস্থা। এবার কলকাতাতেও একটি সেমিকন্ডাক্টর কারখানা তৈরি নিয়ে বাইডেনের সাথে বৈঠক করলেন মোদি।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা